বাবরের সেঞ্চুরিতে রোমাঞ্চকর মোড়ে করাচি টেস্ট

৫০৬ রানের লক্ষ্য! টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৫ বছরের ইতিহাসে সাড়ে চারশ রানও তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই কারো। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার চেয়েও বড় রান তাড়ায় দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে দলকে টানছেন বাবর আজম। পাকিস্তান অধিনায়কের সঙ্গে আবদুল্লাহ শফিকের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে শেষ দিনের রোমাঞ্চের অপেক্ষায় করাচি টেস্ট।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2022, 02:54 PM
Updated : 15 March 2022, 04:00 PM

দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিন ২ উইকেটে ৯৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসের ৪০৮ রানের লিড মিলিয়ে স্বাগতিকদের সামনে লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় তারা ৫০৬ রানের।

সাদা পোশাকের সংস্করণে সর্বোচ্চ ৪১৮ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই অসামান্য সেই কীর্তি গড়েছিল তারা।

এখন পর্যন্ত চারশ রান তাড়া করে একবারও জেতার কীর্তি নেই পাকিস্তানের। সর্বোচ্চ ৩৭৭ রানের লক্ষ্যে তারা জিতেছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, ২০১৫ সালে। পাকিস্তানের মাটিতে ৩১৪ রান তাড়া করে জয় সবচেয়ে বড়।

১০২ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত আছেন বাবর। শফিক খেলছেন ৭১ রান নিয়ে। তাদের ১৭১ রানের জুটিতে ভালো অবস্থানেই আছে পাকিস্তান। দিন শেষ করেছে তারা ২ উইকেটে ১৯২ রান নিয়ে।

পঞ্চম ও শেষ দিনে জয়ের জন্য দলটির চাই ৩১৪ রান। অস্ট্রেলিয়ার চাই ৮ উইকেট।

চতুর্থ দিনে স্পিনারদের জন্য ছিল সহায়তা। শেষ দিনের উইকেট আরও ভয়ঙ্কর হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। তাই বাস্তবিক অর্থে পাকিস্তানের জন্য বিশাল এই রান তাড়ার কাজটি প্রায় অসম্ভবের সামিল।

১ উইকেটে ৮১ রান নিয়ে মঙ্গলবার খেলতে নেমে স্রেফ ৫.৩ ওভার ব্যাটিং করেই ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। শাহিন আফিদির বলে ৪৪ রান করা মার্নাস লাবুশেন বোল্ড হওয়ার পরই আসে এই সিদ্ধান্ত।

জবাব দিতে নেমে বেশ সতর্ক শুরু করেন শফিক ও ইমাম-উল-হক। প্যাট কামিন্সের বলে ভোগা ইমামকে এলবিডব্লিউ করে ফেরান ন্যাথান লায়ন। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি পাকিস্তান ওপেনার।

আজহার আলি যেন মাটি কামড়ে উইকেটে পড়ে থাকার পণ করে মাঠে নামেন। তারপরও দাঁড়াতে পারেননি অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। ক্যামেরন গ্রিনের নিচু শর্ট বলে হয়ে যান এলবিডব্লিউ।

২১ রানে দল দুই উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়েন শফিক ও বাবর। দারুণ দৃঢ়তায় খেলতে থাকেন দুইজন। একবার অবশ্য সুযোগ তৈরি করেছিলেন কামিন্স। কিন্তু স্লিপে ২০ রানে থাকা শফিকের ক্যাচ নিতে পারেননি স্টিভেন স্মিথ। পরে একবার রান আউট হওয়া থেকেও বেঁচে যান পাকিস্তান ওপেনার।

৮৩ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন বাবর। শফিকের ফিফটি আসে ১৫৩ বলে। দুইজনের জুটির শতক হয় ২০১ বলে।

লম্বা সময় ধরে সেঞ্চুরির দেখা না পাওয়া বাবর তিন অঙ্কে পা রাখেন ১৮০ বলে। মুহুর্তটা যে কতটা আকাঙ্ক্ষিত ছিল, তা তার উদযাপনেই ফুটে ওঠে। ২০২০ সালের পর প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়ার আনন্দে হুঙ্কার দেন তিনি। লাল বলে এটি তার ষষ্ঠ সেঞ্চুরি।

তিন সংস্করণেই সেঞ্চুরি করা ইতিহাসের তৃতীয় অধিনায়ক হলেন বাবর। এই তালিকায় আগে থেকে আছেন শ্রীলঙ্কার তিলকারত্নে দিলশান ও দক্ষিণ আফ্রিকার ফাফ দু প্লেসি।

১৯৭ বলে ১২ চারে ১০২ রান নিয়ে খেলছেন বাবর। শফিক ২২৬ বলে এক ছক্কা ও ৪ চারে ৭১।

পঞ্চম দিনে দলকে কোথায় নিয়ে যান এই দুইজন, সেটাই এখন দেখার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৫৫৬/৯ ডিক্লে.

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ১৪৮

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ২২.৩ ওভারে ৯৭/২ ডিক্লে. (আগের দিন ৮১/১) (খাওয়াজা ৪৪*, ওয়ার্নার ৭, লাবুশেন ৪৪; আফ্রিদি ৬.৩-০-২১-১, হাসান ৭-০-২৩-১, সাজিদ ৫-০-৩১-০, ফাহিম ৩-০-১৩-০, নুমান ১-০-৭-০)

পাকিস্তান ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৫০৬) ৮২ ওভারে ১৯২/২ (শফিক ৭১*, ইমাম ১, আজহার ৬, বাবর ১০২*; স্টার্ক ১২-৫-২৯-০, কামিন্স ১৩-৫-৩৫-০, সোয়েপসন ২৭-৬-৫৭-০, লায়ন ২২-৪-৫০-১, গ্রিন ৮-২-১৫-১)