নাঈমের ৮ রানের আক্ষেপ, সাব্বিরের ব্যাটে ঝড়

দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে টানলেন দলকে। আশা জাগালেন সেঞ্চুরির। তবে শেষ পর্যন্ত নাঈম ইসলামকে ফিরতে হলো স্রেফ ৮ রানের জন্য তিন অঙ্ক ছুঁতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে। অধিনায়কের গড়ে দেওয়া ভিতের উপর দাঁড়িয়ে ঝড় তুললেন সাব্বির রহমান। বাকিটা সারলেন বোলাররা। তাতে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে উড়িয়ে দিল লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। 

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2022, 11:51 AM
Updated : 15 March 2022, 01:28 PM

বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের উদ্বোধনী দিনে ১৪৭ রানে জিতেছে নাঈমের দল। মঙ্গলবার বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে রূপগঞ্জের ২৯১ রান তাড়ায় ১৪৪ রানে গুটিয়ে যায় গাজী। 

অভিজ্ঞ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান নাঈম খেলেন ৯২ রানের ইনিংস। আশা জাগিয়েও পঞ্চাশের আগে থামেন রকিবুল হাসান ও ভারতীয় ব্যাটসম্যান চিরাগ জানি।

গত বিপিএলে ব্যাট হাতে তেমন কিছু করতে না পারায় টুর্নামেন্টের মাঝপথে সাব্বির জায়গা হারান একাদশে। তবে এখনও যে শেষ দিকে ঝড় তোলার সামর্থ্য আছে সেটি আবার দেখালেন মারকুটে এই ব্যাটসম্যান। ২৫ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় খেলেন ৪২ রানের বিস্ফোরক ইনিংস।

রান তাড়ায় সেভাবে জয়ের সম্ভাবনাই কখনও জাগাতে পারেনি গাজী। গড়তে পারেনি তেমন কোনো জুটি।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সপ্তম ওভারে মুসা আলভিকে হারায় রূপগঞ্জ। আলমগীর হোসেনের সুইং করে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন তিনি। কাজী অনিকের শর্ট বল উড়িয়ে মারার চেষ্টায় ক্যাচ দেন তানজিদ হাসান।

৫০ রানে ২ উইকেট হারানো দলকে এগিয়ে নেন রকিবুল ও নাঈম। দুইজনেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন, নিজের জোনে বল পেলেন মারেন বাউন্ডারি। তাদের জমে যাওয়া ৯৭ বল স্থায়ী ৮৩ রানের জুটি ভাঙে রকিবুলের বিদায়ে।

আল আমিন জুনিয়রের বল উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় স্টাম্পড হন রকিবুল (৪৬)। 

নাঈম পঞ্চাশে পা রাখেন ৭৫ বলে। চিরাগকে নিয়ে দলকে উপহার দেন আরেকটি ভালো জুটি। ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৪৭ রান করে চিরাগ ফিরলে শেষ হয়ে তাদের ৮৪ রানের প্রতিরোধ।

সাব্বির নেমেই দ্রুত রান তোলায় মনোযোগ দেন। মেটান শেষ দিকের দাবি। তার ঝড়ের বড় অংশই যায় আলমগীরের ওপর দিয়ে। এই পেসারকে এক ওভারে মারেন দুই চার ও এক ছক্কা।

নব্বইয়ের ঘরে থাকা নাঈমকে হতাশায় পোড়ান অনিক। এই পেসারকে উড়িয়ে মেরে বাউন্ডারিতে ধরা পড়ে শেষ হয় রুপগঞ্জ অধিনায়কের ১ ছক্কা ও ৬ চারের ইনিংস। পরের বলেই বিদায় নেন সাব্বির।

জবাব দিতে নেমে পঞ্চম বলেই মেহেদি মারুফকে হারায় গাজী গ্রুপ। শফিউল ইসলামকে একটি করে ছক্কা-চার মারা ফরহাদ হোসেন ফেরেন রান আউট হয়ে। আল আমিন জুনিয়রকে পরে এলিবডব্লিউ করে উইকেট পান শফিউল।

আরাফাত সানি মৃধার ব্যাটে ছক্কা হজম করলেও পরে তাকে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার নাবিল সামাদই। 

৪৫ রানের মধ্যে প্রথম চার ব্যাটসম্যান হারিয়ে বিপাকে পড়া দলের হাল ধরার চেষ্টা চালান মাহমুদুল হাসান ও আকবর। তবে খুব একটা সফল হননি তারাও। অধিনায়ক আকবর ২৯ রানে ক্যাচ দেন সাব্বিরের হাতে। ভাঙে ৪৯ রানের জুটি।

আরও কিছুক্ষণ উইকেটে থেকে বিদায় নেন দলের সর্বোচ্চ ৩৩ রান করা মাহমুদুলও। সঞ্জিত সাহার বলে উইকেটে ছেড়ে খেলার চেষ্টায় হন বোল্ড। এরপর আর বেশিদূর যেতে পারেননি গাজী গ্রুপ।

রূপগঞ্জের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন অফ স্পিনার সঞ্জিত ও লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার তানবীর হায়দার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ৫০ ওভারে ২৯১/৭ (তানজিদ ২৩, আলভি ১৭, রকিবুল ৪৬, নাঈম ৯২, চিরাগ ৪৭, সাব্বির ৪২, তানবীর ৭, মেহেদি রানা ১*; আলমগীর ১০-০-৬৫-২, আশিকুর ১০-০-৬৮-০, কাজী অনিক ১০-০-৩৬-৩, মাহমুদুল ৪-০-২২-০, হাবিব মেহেদি ১০-০-৫৯-০, আল আমিন জুনিয়র ৬-০-৩৪-১)

গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ৩০.৪ ওভারে ১৪৪ (মারুফ ১, সানি মৃধা ১৭, ফরহাদ ১১, আল আমিন জুনিয়র ৯, মাহমুদুল ৩৩, আকবর ২৯, সাইদ ১০, কাজী অনিক ৭, হাবিব মেহেদি ৪, আশিকুর ১১, আলমগীর ০*; নাবিল ৬-০-২৩-১, শফিকুল ৫-১-১৭-১, চিরাগ ৪-০-১২-১, সঞ্জিত ৯-০-৪৭-২, মেহেদি রানা ৪-০-২১-১, তানবীর ২-০-১০-২, নাঈম ০.৪-০-৮-১)

ফল: লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ১৪৭ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: নাঈম ইসলাম