পাকিস্তান বলেই জয়ের ‘বাড়তি ক্ষুধা’ ছিল বাংলাদেশের

শক্তি-সামর্থ্যে দুই দল কাছাকাছি। দেখাও হয় মোটামুটি নিয়মিত। সময়ের পরিক্রমায় দুই দল যেন প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী। সেই লড়াইয়ে আরও একবার পাকিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশের অলরাউন্ডার ফাহিমা খাতুন বললেন, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান বলেই জয়ের বাড়তি তাগিদ ছিল তাদের।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2022, 08:23 AM
Updated : 14 March 2022, 08:49 AM

মেয়েদের বিশ্বকাপের এই ম্যাচের আগে ওয়ানডেতে ১১ দেখায় পাকিস্তানের জয় ছিল ৬টি, বাংলাদেশের ৫টি। হ্যামিল্টনে সোমবার ৯ রানের জয়ে বাংলাদেশ এখন পরিসংখ্যানে সমানে-সমান।

এতে অবশ্য স্রেফ একটি দিকই বলা হলো। বাংলাদেশের ৬ জয়ের ৪টিই এলো সবশেষ ৫ ম্যাচের মধ্যে। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে কোন দল এগিয়ে, সেটি তো বোঝাই যাচ্ছে!

৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা ফাহিমা ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ফাহিমা বললেন পাকিস্তানের বিপক্ষে বাড়তি তাড়না আর সব বিভাগে নিজেদের মেলে ধরার তাগিদের কথা।

“আগেও বলেছি, এখনও বলছি পাকিস্তানের সঙ্গে শুধু আমার নয়, আমাদের দলের সব মেয়েদের খেলার জন্য এবং জেতার জন্য একটা ক্ষুধা থাকে। আমরা চেষ্টা করেছি। আমরা বলতাম যে, বোলাররাই আমাদের সব সময় জেতায়, ব্যাটাররা ওইভাবে অবদান পারছে না। কিন্তু এবার বিশ্বকাপে ব্যাটাররা অবদান রাখছে, বোলাররা অনেক বেশি সাপোর্ট দিচ্ছে।”

“পাকিস্তানের বিপক্ষে আজ আমাদের একটাই লক্ষ্য ছিল গত যে দুইটা ম্যাচ খেলেছি, অনেক ভাল খেলেছি। এই খেলাটাই, আমরা স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলব। সাধারণ যে পরিকল্পনা আমাদের কোচিং স্টাফরা দিয়েছে, সেটা কেবল আমরা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি এবং আমরা সেটা করতে পেরেছি।”

ম্যাচের এক পর্যায়ে ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৯ বলে স্রেফ ৫২ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের। সেই সময় দ্রুত ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন ফাহিমা। লেগ স্পিনারদের জন্য স্লগ ওভারে বোলিং করা অনেক সময় কঠিন, খরুচে হওয়ার শঙ্কা থাকে। কিন্তু দারুণ বোলিংয়ে ফাহিমা পাকিস্তানকে ছিটকে দেন ম্যাচ থেকে।

কঠিন সময়ে বোলিংয়ে এলেও ভালো করার বিশ্বাস তার ছিল, বললেন ফাহিমা।

“আমার সাধারণ যে পরিকল্পনা ছিল ঠিক জায়গায় বল ফেলব। স্রেফ ডট বল নেব, উইকেট আসবে। রানের চাপ থাকলে ওরাই আমাদের উইকেট দিবে। কারণ ওভারপ্রতি প্রায় সাড়ে ৬ বা ৭ রান করে দরকার ছিল ওদের। আমার বিশ্বাস ছিল যে আমার বলটা ওভার হিট করতে পারবে না। ব্লকহোলে করার চেষ্টা করেছি যাতে তুলে না মারে। কিছু বল বৈচিত্র্য আনতে ডাউন দা লেগ চলে গিয়েছিল। তবে তা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি।”

“আমার অধিনায়ক, এবং আমার দলের সিনিয়র খেলোয়াড়রা আমার উপর যে বিশ্বাসটা রাখতে পেরেছে, আমি সেটা রাখতে পেরেছি (প্রতিদান)।”

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম দুই ম্যাচে একাদশে জায়গা পাননি ফাহিমা। প্রথম খেলতে নেমেই হলেন ম্যাচের সেরা। খেলার আগে সকালে কোচ মাহমুদ ইমন তাকে জানান একাদশে থাকার কথা। তবে মানসিকভাবে তার প্রস্তুতি সবসময় থাকে বলেই জানালেন।

“আসলে সব সময় আমি প্রস্তুত থাকি। যখনই দরকার হবে। দল আমার উপর যে বিশ্বাস রেখেছি। আমি সেটা করতে পেরেছি। আমি জানতাম না যে আজ খেলব। সকালে স্যার (কোচ) বললেন যে আমি খেলব। তখন নরমাল ছিলাম, আলাদা কিছুই মনে হয়নি। প্রতিদিনের মতো যে প্রস্তুতি ছিল আমার আজকেও একই ছিল।”

“আমি একটু হতাশ ছিলাম ব্যাটিংয়ে অবদান রাখতে পারিনি (প্রথম বলে আউট)। যেটা চলে গেছে। আমি ভাবলাম যে বোলিং ও ফিল্ডিং দিয়ে যাতে অবদান রাখতে পারি, পুষিয়ে দিতে পারি।”

ফাহিমা পেরেছেন, তাই পেরেছে বাংলাদেশও। পেয়েছে ইতিহাস গড়া জয়ের দেখা।