রুটের সেঞ্চুরি ও শেষের নাটকের আভাসের পর শেষ পর্যন্ত ড্র

বিনা উইকেটে ৫৯ থেকে কয়েক ওভারের মধ্যে স্কোর ৪ উইকটে ৬৭। নিষ্প্রাণ ম্যাচের রঙ বদলে গেল হঠাৎ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন শঙ্কায় আর ইংল্যান্ড উজ্জীবিত সম্ভাবনায়। ম্যাচের শেষ সেশনে দারুণ উত্তেজনা। কিন্তু এনক্রুমা বনার ও জেসন হোল্ডারের ব্যাটিং দৃঢ়তায় আস্তে আস্তে করে রোমাঞ্চের মৃত্যু। ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ সেশনে ম্যাচ বাঁচিয়ে ফেলল বেশ ভালোভাবেই।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2022, 05:02 AM
Updated : 13 March 2022, 12:37 PM

প্রথম ৪ দিনে যে ম্যাচে উইকেট পড়েছে স্রেফ ২১টি, সেই ম্যাচে জয়-পরাজয় দেখা কঠিন। রোববার শেষ দিনে জো রুটের সাহসী ও সময়োচিত ইনিংস ঘোষণায় তবু ম্যাচে ফেরে খানিকটা প্রাণ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওই মিনি ধসে জেগে ওঠে নাটকীয়তা। তবে শেষ পর্যন্ত ড্রয়েই শেষ অ্যান্টিগা টেস্ট।

জ্যাক ক্রলির পর জো রুটের সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ৩৪৯ রান নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ইংল্যান্ড। ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৭১ ওভারে ২৮৬। রান তাড়ার পথে হাঁটেইনি ক্যারিবিয়ানরা। ৭০.১ ওভার খেলে তারা তোলে ৪ উইকেটে ১৪৭।

৬ উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ শেষ করা মানে বেশ অনায়াস ড্র-ই বলা যায়। তবে ক্যারিবিয়ানরা যখন ৪ উইকেট হারায়, ম্যাচে তখনও ৩৬ ওভারের বেশি বাকি। ইংল্যান্ড তাই দারুণ জয়ের আশা দেখতে শুরু করেছিল। কিন্তু প্রথম ইনিংসের মতোই আরেকটি দারুণ জুটি গড়েন বনার ও হোল্ডার। অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটে তারা ৮০ রান যোগ করেন ২১৫ বল খেলে।

এই জুটির আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী জুটিও ছিল বেশ ভালো। শেষ দিনে রান তাড়ার কঠিন চ্যালেঞ্জ না নিয়ে তারা বেছে নেয় নিরাপদ পথ। ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেল ৫৯ রান যোগ করেন ২৫ ওভার খেলে।

ব্র্যাথওয়েটকে ৩৩ রানে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন বেন স্টোকস। এরপর হঠাৎই যেন জেগে ওঠে ইংল্যান্ড। বাঁহাতি স্পিনার জ্যাক লিচ দুর্দান্ত এক স্পেলে আদায় করে নেন তিন উইকেট। ৮ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন নড়বড়ে।

তবে শক্ত হাতেই তা সামাল দেন বনার ও হোল্ডার। জুটি ভাঙার একটি সুযোগ ইংল্যান্ড পেযেছিল। জ্যাক লিচের বলে হোল্ডার এলবিডব্লিউ ছিলেন ১৩ রানে। কিন্তু আম্পায়ার আউট দেননি, ইংলিশরা রিভিউ নেয়নি। আর তেমন কোনো সুযোগ দেননি দুই ব্যাটসম্যান।

শেষ পর্যন্ত ১৩৮ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত বনার, ১০১ বলে ৩৭ রানে হোল্ডার।

শেষ দিনের উইকেটে বেশ টার্ন আদায় করেছেন লিচ, তবে পেসারদের জন্য ছিল না তেমন কোনো সহায়তা। ইংল্যান্ডের ছিল না আর কোনো বিশেষজ্ঞ স্পিনার। তাদের ভুগতে হয়েছে চোটের কারণে ফাস্ট বোলার মার্ক উড বোলিং করতে না পারায়ও।

দিনের শুরুতে ইংল্যান্ড রান তোলে বেশ দ্রুত। ১১৭ রানে দিন শুরু করা জ্যাক ক্রলি ফেরেন ১২১ রানে। ৮৪ রানে শুরু করে রুট পৌঁছে যান সেঞ্চুরিতে। টেস্টে যা তার ২৪তম শতক।

আলজারি জোসেফের রিভার্স সুইংয়ে রুট বোল্ড হন ১০৯ রানে। এরপর দেখা যায় ইংলিশদের দ্রুত রান তোলার তাড়া। ড্যান লরেন্স ৩৬ বলে করেন ৩৭। সকালের সেশনে ২৫ ওভারে ১৩২ রান তুলে ইনিংস ছেড়ে দেয় ইংল্যান্ড।

যে আশায় এত আয়োজন, সেই সম্ভাবনাও জেগে ওঠে খানিকটা। কিন্তু সাময়িক উত্তেজনার পর শেষ পর্যন্ত ম্যাচ গড়ায় অনুমিত পরিণতিতেই।

প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং প্রতিরোধে ম্যাচের সেরা এনক্রুমা বনার।

দ্বিতীয় টেস্ট বুধবার থেকে বারবাডোজে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩১১

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৩৭৫

ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: ৬৩.২ ওভারে (আগের দিন ২১৭/১) ৮৮.২ ওভারে ৩৪৯/৬ (ডি.) (ক্রলি ১২১, রুট ১০৯, লরেন্স ৩৬, স্টোকস ১৩, বেয়ারস্টো ১৫*, ফোকস ১, ওকস ১৮*; রোচ ১৯-২-৫৩-২, সিলস ১৩-২-৫৭-০, হোল্ডার ১৬-২-৫৬-১, জোসেফ ২৩.২-৩-৭৮-৩, পেরমল ১২-০-৬৪-০, ব্র্যাথওয়েট ৪-০-১৪-০, বনার ১-০-৮-০)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৮৬) ৭০.১ ওভারে ১৪৭/৪ (ব্র্যাথওয়েট ৩৩, ক্যাম্পবেল ২২, ব্রুকস ৫, বনার ৩৮*, ব্ল্যাকউড ২, হোল্ডার ৩৭*; ওকস ৯-১-২২-০, লিচ ৩০.১-১৪-৫৭-৩, ওভারটন ১০-২-২৩-০, রুট ২০-৬-০, স্টোকস ১৩-৩-২৪-১, লরেন্স ৬-৩-৭-০)।

ফল: ম্যাচ ড্র্

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে ০-০ সমতা।

ম্যান অব দা ম্যাচ: এনক্রুমা বনার।