খাওয়াজার ‘বিশেষ’ শতকে প্রথম দিন অস্ট্রেলিয়ার

জন্ম রাওয়ালপিন্ডিতে হলেও পারিবারিক শেকড় করাচিতে। শহরটি তাই উসমান খাওয়াজার কাছে বাড়ির মতো। সেখানে দারুণ এক সেঞ্চুরি উপহার দিলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার। সঙ্গে স্টিভেন স্মিথের ফিফটিতে করাচি টেস্টে প্রথম দিনটা দারুণ কাটল সফরকারীদের।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2022, 02:15 PM
Updated : 12 March 2022, 02:29 PM

পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন ৩ উইকেটে ২৫১ রান নিয়ে শেষ করেছে প্যাট কামিন্সের দল।

রাওয়ালপিন্ডির ব্যাটিং স্বর্গে এক ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে ৯৭ রানে আউট হয়েছিলেন খাওয়াজা। এবার কোনো ভুল করেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ক্যারিয়ারের একাদশ সেঞ্চুরিতে খেলছেন ১২৭ রান নিয়ে।

সত্তরের ঘরে আরও একবার আউট হলেন স্মিথ। প্রথম টেস্টে ৭৮ রান করা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান এবার থামলেন ৭২ রানে। হতাশার আরও বড় কারণ, তিনি সাজঘরে ফেরেন দিন শেষের স্রেফ ৭ বল বাকি থাকতে।

রাওয়ালপিন্ডির ‘সড়কের’ মতো উইকেট থেকে সামান্যতম সহায়তা পাননি কোনো ধরনের বোলাররা। হয় অনেক সমালোচনা। আইসিসিও দেয় ডিমেরিট পয়েন্ট। করাচির পিচে সময়ের সঙ্গে স্পিনাররা সহায়তা পাবেন বলে টসের সময় বলেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম।

শনিবার টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে শুরুটা ভালোই হয় অস্ট্রেলিয়ার। মাঝে মধ্যে অস্বস্তিতে পড়লেও প্রথম ঘণ্টার চ্যালেঞ্জ উতরে যান দুই ওপেনার খাওয়াজা ও ডেভিড ওয়ার্নার। দারুণ ব্যাটিংয়ে দলকে শতরানের উদ্বোধনী জুটি এনে দেওয়ার পথেই ছিলেন তারা।

চোট কাটিয়ে ও কোভিড-১৯ নেগেটিভ হয়ে দলে ফেরা ফাহিম আশরাফ ভাঙেন তাদের ৮২ রানের জুটি। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৩৬ রান করা ওয়ার্নার।

দুই ওভার পরই রান আউটে কাটা পড়েন মার্নাস লাবুশেন, মিড অফ থেকে সাজিদ খানের সরাসরি থ্রোয়ে। আগের ম্যাচে ৯০ রান করা টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর ব্যাটসম্যান এবার খুলতে পারেননি রানের খাতাই।

ভালো শুরুর পর দ্রুত দুই উইকেট হারানো দলকে এগিয়ে নেয় স্মিথ ও খাওয়াজা। পাকিস্তানের বোলারদের সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়ান তারা। জুটি ভাঙার উপায়ই যেন খুঁজে পাচ্ছিল না স্বাগতিকরা। তাদের চোয়ালবদ্ধ দৃঢ়তায় দ্বিতীয় সেশনে কোনো উইকেট হারাতে হয়নি অস্ট্রেলিয়াকে।

চা বিরতির পরও বেশ সাচ্ছন্দেই দেখেশুনে ব্যাটিং করে যান স্মিথ-খাওয়াজা। তাদের জুটি শতরান স্পর্শ করে ২৩১ বলে। স্মিথ পঞ্চাশে পা রাখেন ১২৯ বলে।

৬৯ বলে ফিফটি করা খাওয়াজা কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরিতে পা রাখেন ১৯৩ বলে। জন্মভূমিতে প্রথমবার খেলতে এসে শতকের দেখা পেয়ে গেলেন তিনি।

আবেগের এই শহরে প্রথম খেলতে এসেই তিন অঙ্ক ছুঁতে পেরে দারুণ উচ্ছ্বসিত খাওয়াজা। দিন শেষে বলেন, “এটা আমার বাড়ি। এখানে শতক পাওয়াটা দারুণ ব্যাপার।”

খাওয়াজা-স্মিথের আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংয়ে একটা সময় মনে হচ্ছিল অবিচ্ছিন্ন থেকেই দিন শেষ করবেন তারা। কিন্তু শেষ বেলায় এসে স্মিথকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। চোট কাটিয়ে দলে ফেরা হাসান আলির ব্যাক অব দা লেংথ বল ড্রাইভ করে স্লিপে ধরা পড়েন তিনি। দ্বিতীয় স্লিপে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে দুর্দান্ত নিচু ক্যাচ ধরেন ফাহিম।

হতাশ হয়ে বিদায় নেন ৭ চারে ৭২ রান করা স্মিথ। ভাঙে খাওয়াজার সঙ্গে তার ১৫৯ রানের জুটি।

দিনের শেষ বলে আরেকটি উইকেট পেতে পারত পাকিস্তান। কিন্তু শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে নামা ন্যাথান লায়নের ক্যাচ ধরতে পারেননি লেগ শর্টে থাকা ইমাম-উল-হক।

১৩ চার ও এক ছক্কায় ২৬৬ বলে ১২৭ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন খাওয়াজা। নিজের ইনিংসকে কতদূর নিতে পারেন এই বাঁহাতি, এটাই দেখার বিষয়।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২৫১/৩ (ওয়ার্নার ৩৬, খাওয়াজা ১২৭*, লাবুশেন ০, স্মিথ ৭২, লায়ন ০*; আফ্রিদি ১৭-৬-৩৯-০, হাসান ১২-৪-৩১-১, ফাহিম ১৩-৩-৩২-১, সাজিদ ১৯-০-৭১-০, নুমান ২৫-৫-৫৬-০, বাবর ২-০-৩-০, আজহার ২-০-১০-০)