দ. আফ্রিকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মন ভালো হওয়ার আশায় সাকিব

গত রোববার সাকিব আল হাসান বলেছিলেন, ক্রিকেট খেলার মতো শারীরিক ও মানসিক অবস্থায় নেই তিনি, যেতে চান না দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। সপ্তাহ না ঘুরতেই ঘুরে গেল তার শরীর ও মনের বাস্তবতা। এখন ভালো অবস্থায় আছেন বলেই দাবি তার। এমনকি, দক্ষিণ আফ্রিকার নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে মন আরও ভালো হয়ে ওঠার সম্ভাবনাও দেখছেন তিনি!

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2022, 11:54 AM
Updated : 12 March 2022, 11:54 AM

দুবাই যাওয়ার আগে গত রোববার বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সাকিব বলেন, এই মুহূর্তে ক্রিকেট খেলার মতো শারীরিক ও মানসিক অবস্থায় তিনি নেই। এই অবস্থায় দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গেলে দেশের সঙ্গে গাদ্দারি ও সতীর্থদের প্রতি প্রতারণা হবে বলেও মনে করেন তিনি।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সাকিব জানান, সিদ্ধান্ত বদল করেছেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে তিন সংস্করণেই এখন থেকে তাকে সবসময় পাওয়া যাবে, সেটির শুরু এই দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকেই। রোববার রাতেই তিনি উড়াল দেবেন দক্ষিণ আফ্রিকার পথে।

বিধ্বস্ত মানসিক অবস্থা থেকে ৬ দিনের মধ্যেই কিভাবে এতটা চাঙা হয়ে উঠলেন তিনি, সেই কৌতূহল থাকা স্বাভাবিক। সাকিব বিশদ ব‍্যাখ‍্যা দেননি এটির। উত্তর যা দিলেন, তাতেও অস্পষ্টতা থেকেই গেল।

“দেখেন, কোনো জিনিস তো এক-দুই দিনে পরিবর্তন করা সম্ভব না। এখন অনেক ভালো জায়গায় আছি। যেহেতু আমি জানি, পুরো পরিষ্কার চিত্র আছে আমার সামনে। আর দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কাছে গেলে হয়তো আরও তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। অনেক সময় হয়তো, তাই না? ভিন্ন একটা পরিবেশে গেলে মানসিকতা অনেকটাই পরিবর্তন হয়ে যায়। আশা করি, তেমন কিছু হবে ভালোভাবে এবং দলের জন‍্য ভালো পারফর্ম করতে পারব।”

শুধু দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে, সাকিবের টেস্ট ক্যারিয়ার নিয়েও অনেক প্রশ্নের জন্ম হয়েছিল গত কিছুদিনের ঘটনাপ্রবাহে। গত বছর বাংলাদেশের ৭ টেস্টের কেবল ৩টিতে খেলেন তিনি, এই বছর প্রথম দুই টেস্টে খেলেননি। দক্ষিন আফ্রিকায় না গেলে বাইরে থাকতেন টানা ৪ টেস্ট। আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত টেস্ট থেকে বিরতি চেয়ে বোর্ডে চিঠিও দিয়েছিলেন কিছুদিন আগে।

তবে এখন সাকিব নিজেই বললেন, সব সংস্করণেই তাকে নিয়মিত পাওয়া যাবে। ছুটি-বিশ্রাম ছেড়ে দিলেন তিনি বোর্ডের ওপর।

“যেটা হচ্ছে যে, পাপন ভাইয়ের (নাজমুল হাসান) সঙ্গে কথা হয়েছিল গত পরশু রাতে। কালকেও কথা হয়েছে, আজকেও হয়েছে বোর্ডে। আমরা গোটা বছরের পরিকল্পনা করতে পেরেছি। যেহেতু আমি তিনটি ফরম্যাটেই আছি (বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে), কাজেই তিনটি ফরম্যাটেই আমাকে পাওয়া যাবে সবসময়। বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে, কোন সময় আমাকে বিশ্রাম দেওয়া জরুরি বা নেওয়া দরকার, বোর্ড সেটা সিদ্ধান্ত নেবে, এই দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজসহ।”

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের চাওয়া, সাকিবের ছুটি চাওয়া নিয়ে বিতর্কের অবসান হোক এখানেই। একই সঙ্গে কঠিন এই সময়ে সবাইকে বাঁহাতি অলরাউন্ডারের পাশে দেখতে চান তিনি।

“সাকিব যেহেতু আমাকে বলেছে যে ও একটু মেন্টালি ডিস্টার্বড, আমার মনে হয়, এই সময়টায় আমাদের সবার সাকিবের পাশে থাকা উচিত, ওর সঙ্গে থাকা উচিত, মানসিক শক্তি দেওয়া উচিত ওকে। কাজেই এটা নিয়ে আর বেশি আলোচনা, যে সমস্ত লেখালেখি, টক শো হচ্ছে, এটা কারও জন্যই ভালো নয়। একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, সাকিব-তামিম-মুশফিক-রিয়াদ-মাশরাফি, ওরা অনেক দিয়েছে, অনেক কিছু করেছে দেশের জন্য। এটা অস্বীকার করার পথ নেই।”

“মানুষের কোনো একটা সময় শারীরিক বা মানসিক সমস্যা হতেই পারে। ওই সময়টায় আমাদের উচিত তাদের পাশে থাকা, বোর্ডেরও উচিত। আমরা সবসময় ওদের পাশে আছি, সামনেও থাকব।”