বিসিবির তিন সংস্করণের চুক্তিতেই সাকিব

সকিব আল হাসানকে টেস্ট ক্রিকেটে নিয়মিত পাওয়া নিয়ে সংশয় আছে যথেষ্টই। তবু তাকে তিন সংস্করণের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে রেখেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2022, 01:46 PM
Updated : 11 March 2022, 07:51 AM

গত বছর চুক্তিতে থাকলেও বাংলাদেশের ৭ টেস্টের কেবল ৩টিতে পাওয়া গেছে সাকিবকে। এই বছর নিউ জিল্যান্ডে দুটি টেস্টে তিনি খেলেননি পারিবারিক কারণে ছুটিতে থাকায়। এবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও যাচ্ছেন না শারীরিক ও মানসিকভাবে খেলার মতো অবস্থায় না থাকায়। এই বছরে বাংলাদেশের প্রথম চার টেস্টেই তাই খেলা হচ্ছে না তার। সামনেও তাকে নিয়মিত পাওয়া নিয়ে আছে অনিশ্চয়তা।

বয়স বাড়ছে, তিন সংস্করণে একই সঙ্গে চালিয়ে যাওয়া কতটা সম্ভব, সেই প্রশ্ন কত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার তুলেছেন সাকিব নিজেই। গত রোববার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে দুবাই যাওয়ার আগে তিনি বলেন, শারীরিক ও মানসিকভাবে আপাতত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মতো অবস্থায় নেই তিনি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত সিরিজে নিজেকে তার মনে হয়েছে ‘প্যাসেঞ্জার’, উপভোগ করতে পারছেন না ক্রিকেট।

শুরুতে নাম থাকলেও তার চাওয়া অনুযায়ীই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে তাকে। সব ধরনের ক্রিকেট থেকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত।

দুবাই যাওয়ার আগে সাকিব বলেছিলেন, সাদা বলের ক্রিকেটে বেশি মনোযোগী হতে আগামী নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিরতি চেয়ে বোর্ডে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। গত বুধবার তার বিশ্রাম ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে অবশ্য বোর্ডের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস জানান, টেস্ট থেকে বিরতির সেই ভাবনা থেকে সরে এসেছেন সাকিব।

দুবাই থেকে বৃহস্পতিবার রাতে দেশে ফিরেছেন সাকিব। শিগগিরই তার সঙ্গে বসে ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়ে আলোচনার কথা বিসিবি কর্তাদের। 

গতবারের মতো এবারও ভিন্ন সংস্করণের জন্য ভিন্ন চুক্তি করেছে বিসিবি। তিন সংস্করণেই সাকিবের সঙ্গে আছেন আগের অন্য চারজনই- মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গত বছর মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল চুক্তি। এবারের মেয়াদ বরাবরের মতোই জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত।

ছয় মাসের জন্য আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে বিরতি নেওয়া তামিম ইকবাল আছেন টেস্ট ও ওয়ানডের চুক্তিতে। সেখানে তার সঙ্গী মেহেদী হাসান মিরাজ।

গতবার এই দুই জনের সঙ্গে ছিলেন তাইজুল ইসলামও। এবার তিনি আছেন কেবল টেস্টের চুক্তিতে। গত বছর কোনো ওয়ানডে না খেলেই এই সংস্করণের চুক্তিতে জায়গা হারালেন তাইজুল। বাঁহাতি এই স্পিনার সবশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০২০ সালের মার্চে।

চোটের জন্য দলের বাইরে থাকা পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন। আছেন গতবার এই চুক্তিতে থাকা বাকি তিন জন- মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমান।

শুধু টেস্টের চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন পেসার আবু জায়েদ চৌধুরি ও ওপেনার সাইফ হাসান। যুক্ত হয়েছেন ইয়াসির আলি চৌধুরি ও মাহমুদুল হাসান জয়। দুই জনই প্রথমবারের মতো এসেছেন চুক্তিতে।

জাতীয় দলে জায়গা হারানো সৌম্য সরকার বাদ পড়েছেন টি-টোয়েন্টির চুক্তি থেকেও। গতবার জায়গা পাওয়া শামীম হোসেনও নেই টানা ব্যর্থতায়।

টি-টোয়েন্টিতে মোহাম্মদ নাঈম শেখের ব্যাটিংয়ের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও চুক্তিতে টিকে গেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। এখানে যুক্ত হয়নি নতুন কোনো নাম।

চুক্তিতে আছেন যারা:

তিন সংস্করণে:

মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, লিটন কুমার দাস, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম।

টেস্ট ও ওয়ানডে:

তামিম ইকবাল খান, মেহেদী হাসান মিরাজ।

ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি:

মাহমুদউল্লাহ, মুস্তাফিজুর রহমান, আফিফ হোসেন।

শুধু টেস্টে:

মুমিনুল হক, তাইজুল ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাদমান ইসলাম, ইবাদত হোসেন চৌধুরি, ইয়াসির আলি চৌধুরি, মাহমুদুল হাসান জয়।

শুধু টি-টোয়েন্টিতে:

মোহাম্মদ নাঈম শেখ, শেখ মেহেদি হাসান, নুরুল হাসান সোহান, নাসুম আহমেদ।