রাওয়ালপিন্ডির 'সড়কে' ইমামের জোড়া সেঞ্চুরি, শফিকের সেঞ্চুরি

ম্যাচের প্রথম দিন থেকেই উইকেট যেন মহাসড়ক, প্রাণের ছোঁয়া মাত্র নেই। এমনকি শেষদিনেও একদমই নিষ্প্রাণ। সামান্যতম সহায়তাও ছিল না কোনো ধরনের বোলারদের জন্যই। যে উত্তেজনা নিয়ে শুরু হয়েছিল পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়ার রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট, উইকেটের আচরণে মিলিয়ে গেল তা সময় গড়াতেই। ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ছড়াল না কোনো রোমাঞ্চ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 March 2022, 12:06 PM
Updated : 8 March 2022, 02:15 PM

২৪ বছর পর পাকিস্তানের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টেস্ট ম্যাচ শেষ হলো নিষ্প্রাণ ড্রয়ে।

ব্যাটিং স্বর্গে ৪ উইকেটে ৪৭৬ রান নিয়ে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করা পাকিস্তান পঞ্চম দিন সফরকারীদের থামায় ৪৫৯ রানে। ১৭ রানের লিড নিয়ে তারা মঙ্গলবার দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে বিনা উইকেটে করে ২৫২।

উইকেটের সহায়তা ও নিজেদের স্কিল কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে উজ্জ্বল দুই দলের ব্যাটসম্যানরাই। ইমাম-উল-হকের প্রাপ্তি সবচেয়ে বেশি। দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরির দেখা পেলেন পাকিস্তানের এই ওপেনার। দেশের দশম ক্রিকেটার হিসেবে ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন তিনি।

প্রথম ইনিংসে টেস্ট ক্রিকেটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিতে ১৫৭ রান করা ইমাম এবার অপরাজিত ১১১ রানে। শেষ দিনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান আবদুল্লাহ শফিক। করেন অপরাজিত ১৩৬ রান।

প্রথম ইনিংসে ১০৫ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়া ইমাম-শফিক এবার ইনিংস শুরু করতে নেমে অবিচ্ছিন্ন থাকেন ২৫২ রানে। ১৯৭১ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই প্রথম এক ম্যাচের দুই ইনিংসেই শুরুর জুটিতে শতরান দেখল ক্রিকেট বিশ্ব।

৭ উইকেটে ৪৪৯ রান নিয়ে খেলতে নামা অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস এদিন ১৯ বলেই গুঁটিয়ে দেন নুমান আলি ও শাহিন শাহ আফ্রিদি। নিজের পরপর দুই ওভারে প্যাট কামিন্স ও ন্যাথান লায়নকে থামান নুমান। মাঝে মিচেল স্টার্ককে দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে এলবিডব্লিউ করে দেন আফ্রিদি।

আগের দিন ৪ উইকেট নেওয়া নুমানের ইনিংসে মোট শিকার ১০৭ রান দিয়ে ৬টি। ক্যারিয়ারে ইনিংসে তৃতীয়বার পাঁচ উইকেট পেলেন তিনি। বাঁহাতি এই স্পিনারের আগের সেরা ছিল ৩৫ রানে ৫ উইকেট।

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে সাবলীলভাবে খেলতে থাকেন ইমাম ও শফিক। ৭৬ রান তুলে তারা শেষ করেন প্রথম সেশন। লাঞ্চ বিরতির পর ৯৬ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন ইমাম। শফিকের পঞ্চাশ আসে ১১৪ বলে। দুইজনের জুটি শতরান স্পর্শ করে ২০৯ বলে।

ফিফটির পর দ্রুত এগিয়ে যাওয়া শফিক কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কে পা রাখেন ১৮৩ বলে। ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে এসে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।

হানিফ মোহাম্মদ, চাচা ইনজামাম-উল-হক ও ইউনিস খানদের জোড়া সেঞ্চুরির ক্লাবে ইমাম জায়গা করে নেন ১৭৯ বলে। প্রথম ১১ টেস্টে কোনো শতক না পাওয়া বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান এক ম্যাচেই করলেন দুটি।

মূল বোলারদের বিশ্রাম দিতে শেষ দিন অনিয়মিতদের দিয়ে কাজ চালান অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক কামিন্স। ইনিংসে ৭৭ ওভারের মধ্যে ৩১ ওভারই করেন দলটির পার্টটাইমাররা। যে সুযোগ কাজে লাগান পাকিস্তানের দুই ওপেনারও।

তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরু আগামী শনিবার, করাচিতে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৪৭৬/৪ ডিক্লে.

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ১৪০.১ ওভারে ৪৫৯ (আগের দিন ৪৪৯/৭) (স্টার্ক ১৩, কামিন্স ৮, লায়ন ৩, হেইজেলউড ০*; সাজিদ ৪৫-৯-১২২-১, নাসিম ২১-২-৮৯-১, আফ্রিদি ৩০-৫-৮৮-২, নুমান ৩৮.১-৯-১০৭-৬, ইফতিখার ৩-০-২০-০, ইমাম ২-০-৯-০, বাবর ১-০-৫-০)

পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ৭৭ ওভারে ২৫২/০ (শফিক ১৩৬*, ইমাম ১১১*; স্টার্ক ৭-১-২৯-০, হেইজেলউড ৫-০-৮-০, লায়ন ২৬-৫-৭৫-০, কামিন্স ৪-০-১৫-০, লাবুশেন ১৫-০-৫৬-০, হেড ১৩-১-৩৫-০, স্মিথ ২-০-১৫-০, গ্রিন ৪-০-১৪-০, খাওয়াজা ১-০-৩-০)

ফল: ম্যাচ ড্র

ম্যান অব দা ম্যাচ: ইমাম-উল-হক

সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজটি ০-০ সমতায়