ওয়ার্নের জন‍্য পন্টিংয়ের চোখে জল

লম্বা একটা সময়জুড়ে দুইজনে ছিলেন সতীর্থ। দুই হাত ভরে দিয়েছেন দলকে, সারথী হয়েছেন অনেক সাফল‍্যের। এর মধ‍্যেও যে ছোটখাটো ঝামেলা হয়নি তা নয়। তবে আনন্দের উপলক্ষ‍্যই ছিল বেশি। দীর্ঘ দিনের সেই সতীর্থের চলে যাওয়া একদমই মানতে পারছেন না রিকি পন্টিং। শেন ওয়ার্নের কথা মনে পড়লেই আবেগ ছুঁয়ে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই অধিনায়ককে। 

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2022, 04:59 PM
Updated : 8 March 2022, 01:25 PM

১৯৯২ সালের জানুয়ারিতে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পথচলা শুরু হয় ওয়ার্নের। এর তিন বছর পর ওয়ানডে দিয়ে অস্ট্রেলিয়া দলে আসেন রিকি পন্টিং। ১৯৯৯ বিশ্বকাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্য ছিলেন দুইজনই। ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তোলার ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং উপহার দিয়ে সেরা হয়েছিলেন ওয়ার্ন।

২০০৩ সালের বিশ্বকাপেও এক সঙ্গে খেলার কথা ছিল তাদের। কিন্তু আসর শুরুর ঠিক আগের দিন মাদক পরীক্ষায় ধরা পড়ে ওয়ার্ন নিষিদ্ধ হন এক বছরের জন্য। এরপর যখন আবার ফিরলেন তিনি দলে, তখন পন্টিংকে পেলেন অধিনায়ক হিসেবে। পন্টিংয়ের নেতৃত্বের সময়ই প্রবল বিক্রমে ওয়ার্ন লেগ স্পিনে ছড়ি ঘোরান ২২ গজে।

দা আইসিসি রিভিউতে পন্টিং খুলে দিলেন স্মৃতির ঝাঁপি। বললেন, খবরটি শুনে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

“আমি সকালে ঘুম থেকে উঠে বাচ্চাদের নেটবল খেলার জন্য প্রস্তুত করছিলাম। রিয়ান্না (পন্টিংয়ের স্ত্রী) তার মোবাইল দেখছিল এবং আমাকে ওয়ার্নির সংবাদটি জানাল। দেখার জন্য আমি তার হাত থেকে মোবাইলটা কেড়ে নিলাম এবং (খবরটি জানার পর) আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না।”

“খবরটা এতটাই যন্ত্রণাদায়ক ছিল যে, আমি কথাই বলতে পারছিলাম না। প্রতিটা মুহূর্তে তার কথা, তার সঙ্গে অভিজ্ঞতা এবং আমাদের পথচলার কথা ভাবলে আমি ভাষা হারিয়ে ফেলছিলাম। এমনকি আজ যখন আমি টিভিতে শ্রদ্ধা নিবেদন দেখছিলাম, তার গলার স্বর শুনলেই আমাকে টিভি অফ করে দিতে হয়েছে।”

শেষবারের মতো ওয়ার্নের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেলে কী বলতেন পন্টিং?

“আমি কেবল বলব, তাকে কতটা ভালোবাসি। এই কথা আমি তাকে বলতে পারিনি। যদি বলতে পারতাম।”

বন্ধু-পরিবারের প্রতি টেস্ট ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭০৮ উইকেট শিকারি ওয়ার্ন কতটা উদার মনের ছিলেন, সেটাও তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন পন্টিং।

“তার সঙ্গে যদি একদিন কাটালে দেখা যেত, তার মোবাইল ফোনে কিছু মানুষের নাম ভেসে উঠছে। বাড়িতে বসে থাকা ওয়ার্নির জন্য খুবই বিরল ছিল। সে সর্বদা চেষ্টা করত তার বন্ধু ও পরিবারের জন্য সময় বের করতে এবং এটি ছিল তার একটি বড় শক্তি।”

“শেন সম্পর্কে মানুষ যত বেশি কথা বলবে, একটি বিষয় স্পষ্ট হবে যে, তার পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সে কতটা বিশ্বস্ত ছিল এবং কতটা ভালোবাসত। তার এমন শক্তি ছিল যা সবাইকে তার প্রতি আকৃষ্ট করবে এবং এটি এমন একটি বৈশিষ্ট্য যা অনেকের মধ্যে নেই।”

গত শুক্রবার থাইল্যান্ডের কোহ সামুইয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে অসীমের পানে পাড়ি জমান ওয়ার্ন। তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করা হবে রাষ্ট্রীয়ভাবে।