ইমাম, আজহার ও আবদুল্লাহ শফিকের ব্যাটিং নৈপুণ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৪ বছর পর ঘরের মাঠে টেস্ট খেলতে নেমে দুর্দান্ত একটি দিন কাটিয়েছে পাকিস্তান। অতি সতর্ক ব্যাটিংয়ে রান খুব বেশি না হলেও বড় সংগ্রহের ভিত পেয়েছে তারা।
একমাত্র শফিককে হারিয়ে ২৪৫ রান নিয়ে প্রথম টেস্টের প্রথম দিন শেষ করেছে বাবর আজমের দল।
ওয়ানডেতে ৭ সেঞ্চুরি করা ইমাম টেস্টে প্রথম শতক করে অপরাজিত আছেন ১৩২ রান নিয়ে। তার ২৭১ বলের ইনিংসে ১৫ চারের পাশে ছক্কা দুটি। তিনে নেমে আজহার খেলছেন ৬৪ রানে। দ্বিতীয় উইকেটে দুইজনের অবিচ্ছিন্ন জুটি ১৪০ রানের।
রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেটে ছিল না কোনো ঘাস। টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার জন্য উপযুক্ত উইকেট। পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর করলেনও তাই। ব্যাটিং স্বর্গে তার টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা মেলে ধরলেন নিজেদের।
শুক্রবার ঐতিহাসিক এই ম্যাচ শুরুর আগে একটি শোক সংবাদ শোনে অস্ট্রেলিয়া শিবির। দলটির কিংবদন্তি কিপার-ব্যাটসম্যান রড মার্শ এদিন মারা যান। শোক প্রকাশে কালো আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামেন অস্ট্রেলিয়া দলের ক্রিকেটাররা। খেলা শুরুর আগে দুই দলের ক্রিকেটাররাই পালন করেন নীরবতা।
ইনিংসের তৃতীয় বলে স্টার্ককে চার মেরে রানের খাতা খোলেন শফিক। এরপর অবশ্য প্রতিপক্ষকে চেপে ধরেন অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। প্রথম ১০ ওভারে আর কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেননি পাকিস্তানের দুই ওপেনার। ওই সময়ে রান আসে কেবল ১৩।
মূল তিন পেসারকে নিয়ে খেলতে নামা অস্ট্রেলিয়া অষ্টম ওভারেই ন্যাথান লায়নকে আক্রমণে আনে। নিজের তৃতীয় ওভারে একটি সুযোগও তৈরি করেন অভিজ্ঞ অফ স্পিনার। কিন্তু লেগ স্লিপে শফিকের কঠিন ক্যাচ ধরতে পারেননি ফিল্ডার।
সাবধানী ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যান শফিক ও ইমাম। জমে যাওয়া দুই ওপেনারের জুটি একশ ছোঁয়ার পর আর দীর্ঘ হয়নি। লায়নকে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে বড় শট খেলার চেষ্টায় প্যাট কামিন্সের হাতে ধরা পড়েন শফিক। দিনে ওই একটিই সাফল্য সফরকারীদের।
দুই বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে ৮১ বলে ফিফটি করা ইমাম ক্রমেই আরও সাবধানী হয়ে ওঠেন। আজহার শুরু থেকেই করেন সতর্ক ব্যাটিং।
৯২ রান নিয়ে চা বিরতিতে যাওয়া ইমাম পরে কাঙ্ক্ষিত শতকে পা রাখতে খেলেন আরও ৩৯ বল। অবশেষে ২০০ বলে পান তিনি অনির্বচনীয় সেই সেঞ্চুরির স্বাদ। ক্যারিয়ারের দ্বাদশ টেস্টে এসে মিলল প্রথম সেঞ্চুরির দেখা।
তার অর্জনের আনন্দ ছুঁয়ে যায় পাকিস্তানের ড্রেসিং রুমে। বাবর, মোহাম্মদ রিজওয়ানরা করতালির মাধ্যমে জানান অভিনন্দন। গ্যালারির দর্শকরাও করেন উল্লাস।
ইমামের সঙ্গে আজহারের শতরান ছাড়িয়ে যাওয়া জুটি ভাঙতে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক কামিন্স ব্যবহার করেন ৮ বোলার। কিন্তু কাজ হয়নি কিছুতেই।
আজহার ১১৩ বলে ফিফটি করে এগিয়ে যাচ্ছেন সেঞ্চুরির পথে। তার ৬৪ রানের ইনিংসে এক ছক্কা ও চারটি চার। শক্ত ভিত পেয়ে কতদূর যেতে পারে পাকিস্তান সেটাই এখন দেখার বিষয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২৪৫/১ (শফিক ৪৪, ইমাম ১৩২*, আজহার ৬৪*; স্টার্ক ১৬-৪-৪৩-০, হেইজেলউড ১৪-৩-২৪-০, লায়ন ৩১-৪-৮৭-১, কামিন্স ১৫-৩-৩৪-০, হেড ৩-০-১৩-০, গ্রিন ৫-১-১৮-০, লাবুশেন ৪-০-১৭-০, স্মিথ ২-০-৫-০)