পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের লক্ষ‍্য লায়নের

পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে বলে মনে হচ্ছে ন্যাথান লায়নের। তবে সেখানে নিজেদেরই জিত দেখছেন অভিজ্ঞ এই স্পিনার। তিনি তো বটেই, দলের কারোরই পাকিস্তানে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা নেই। তবুও লক্ষ‍্য স্থির করেছেন হোয়াইটওয়াশ। সিরিজ জিততে চান ৩-০ ব‍্যবধানে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2022, 06:26 PM
Updated : 2 March 2022, 06:34 PM

দীর্ঘ ২৪ বছর পর পাকিস্তান সফরে এসেছে অস্ট্রেলিয়া। তিনটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি খেলতে গত রোববার পাকিস্তানে পৌঁছায় তারা। মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো তারা অনুশীলন করে রাওয়ালপিন্ডিতে। সেখানেই আগামী শুক্রবার শুরু হবে প্রথম টেস্ট। দুই দেশের দুই গ্রেট রিচি বেনো ও আব্দুল কাদিরের নামে সিরিজের নাম দেওয়া হয়েছে বেনো-কাদির ট্রফি।

প্রথম দিনের অনুশীলন থেকে রাওয়ালপিন্ডির উইকেট সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়েছেন লায়ন। উইকেটে খুব বেশি ঘাস থাকবে না এবং শুষ্ক হবে বলে মনে করছেন তিনি। বিশেষ করে শুরুর দিকে বোলারদের জন্য কাজটা হতে পারে কঠিন। 

টেস্ট ক্যারিয়ার শুরুর আগে কিউরেটর হিসেবে কাজ করা লায়ন পিচ বিশ্লেষণে বেশ পারদর্শী। তার মতে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাকিস্তানের বিপক্ষে যেমন উইকেটে তারা খেলেছেন, তেমনই হবে এখানকার উইকেট। গত দশকে আমিরাতে পাকিস্তানের বিপক্ষে চার টেস্টের তিনটিতেই তারা পেয়েছিল হারের তেতো স্বাদ। ২০১৮ সালে দুবাইয়ে প্রথম টেস্ট ড্র করতে পেরেছিল শেষ ইনিংসে উসমান খাওয়াজার দারুণ এক সেঞ্চুরির কল্যাণে।

এশিয়ায় ১৯ টেস্ট খেলে ৯৫ উইকেট নেওয়া লায়ন রাওয়ালপিন্ডির উইকেট নিয়ে একটা ধারণা দিলেন বুধবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে। 

“এই মুহূর্তে এটা সংযুক্ত আরব আমিরাতের উইকেটের মতো দেখাচ্ছে, খুব বেশি ঘাস নেই। এটা প্রথম দিনে বেশ চকচকে হবে। মনে হচ্ছে, প্রথম দুই দিন ব্যাট করাটা বেশ ভালো হবে। তবে আশা করছি, এর মধ্যেই স্পিন ধরবে এবং রিভার্স সুইং দেখা যাবে।”

“আমরা তিনটি পিচে অনুশীলন করেছি এবং বল খুব বেশি স্পিন করেনি। ম্যাচের উইকেটের চেয়ে একটু বেশি ঘাস ছিল। এটা (ম্যাচের উইকেট) এমন উইকেট নয়, যেটা আমি একজন কিউরেটর হিসেবে বানাতাম।”

অস্ট্রেলিয়ার স্পিন বিভাগে আরেক জন বিশেষজ্ঞ স্পিনারের প্রয়োজন অনুভব করছেন লায়ন। তার সঙ্গে একাদশে আরেক স্পিনার যোগ করা হবে কি না, সেটি এখন অস্ট্রেলিয়া টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য কঠিন এক সিদ্ধান্ত। যদি তারা দুই জন স্পিনার খেলায়, তাহলে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা লিগ স্পিনার মিচেল সোয়েপসন ও বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার অ্যাশটন অ্যাগারের মধ্যে একজনকে বেছে নিতে হবে। অ্যাগার চার টেস্টের সবশেষটি খেলেছেন ২০১৭ সালে।     

সঙ্গী হিসেবে কাকে চান –এমন প্রশ্নে লায়ন দিলেন কৌশলী জবাব। বিষয়টি তিনি ছেড়ে দিলেন নির্বাচক, কোচ ও অধিনায়কের ওপর।

“আমার কোনো পছন্দ নেই। মিচ (সোয়েপসন) ও অ্যাশ (অ্যাগার) দুজনেই নেটে খুব ভালো বোলিং করছে এবং একাদশে সুযোগ পেতে নিজেদের প্রস্তত রাখছে। সুইপ্পো দীর্ঘদিন ধরে আমাদের স্কোয়াডের আশেপাশে আছে এবং সবসময় প্রশ্ন করে। আমার কোনো সন্দেহ নেই, যখনই সে সুযোগ পাবে, দুই হাত ভরে নেবে। তাই অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড (অন্তর্বর্তীকালীন কোচ), জর্জ বেইলি (নির্বাচকদের চেয়ারম্যান) ও প্যাট কামিন্সের মধ্যে দারুণ একটি আলোচনা হতে যাচ্ছে।”

সোয়েপসন-অ্যাগার বিতর্কে কৌশলী জবাব দিলেও সিরিজ নিয়ে লক্ষ্যের কথা স্পষ্টই জানিয়ে দিলেন লায়ন, ‘আমার ভাবনা পাকিস্তানে আসা এবং ৩-০ ব্যবধানে জেতা।” 

২০১৯ সালের অ্যাশেজের পর দেশের বাইরে এটিই অস্ট্রেলিয়ার প্রথম সিরিজ। গত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে ঘরের মাঠে অ্যাশেজে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ইংল্যান্ডকে তারা গুঁড়িয়ে দেয় ৪-০ তে। পাকিস্তানে চ্যালেঞ্জ থাকলেও ওই সিরিজের আত্মবিশ্বাস কাজে দেবে বলে মনে করেন লায়ন।

“অবশ্যই এটা পুরোপুরি ভিন্ন এক চ্যালেঞ্জ, যেটাতে আমরা ঘরের মাঠে অভ্যস্ত। এটা বড় চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের তরুণ ও রোমাঞ্চকর অস্ট্রেলিয়ান টেস্ট স্কোয়াড আছে এবং আমরা দুর্দান্ত গ্রীষ্ম কাটিয়ে এসেছি, যা আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস দিয়েছে।”