নিউ জিল্যান্ডের লিঙ্কনে বুধবার প্রস্তুতি ম্যাচে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে বাংলাদেশকে ৭ রানে হারায় পাকিস্তান।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৪২ ওভারে ৭ উইকেটে ১৯৯ রান তোলে পাকিস্তান। বাংলাদেশের লক্ষ্য নির্ধারিত হয় ২০২। চার বল বাকি থাকতে তারা অলআউট হয় ১৯৪ রানে।
এসব ম্যাচে অবশ্য জয়-পরাজয়ের চেয়ে প্রস্তুতিই আসল। সেখানে বাংলাদেশ স্বস্তি পেতে পারে বোলিং পারফরম্যান্সে। আগের ম্যাচে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রচুর খরুচে হলেও এ দিন বোলিং হয় যথেষ্ট গোছানো। দুই পেসার ফারিহা তৃষ্ণা ও রিতু মনি নেন তিনটি করে উইকেট।
ব্যাটিংয়ে ফারজানা হক খেলেন ৬ চারে ৯৫ বলে ৭১ রানের ইনিংস। আর কেউ ৩০ পার হতে পারেননি।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তান প্রথম ৫ ওভারে উইকেট না হারিয়ে তোলে ২০ রান। বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন আগের ম্যাচে না খেলা তৃষ্ণা। বাঁহাতি পেসারের বল স্লগ করতে গিয়ে বোল্ড হন নাহিদা খান (১২)।
তৃষ্ণা প্রথম স্পেলে বিদায় করে দেন আরেক ওপেনার সিদরা আমিন ও তিনে নামা মুনিবা আলিকেও। পাকিস্তান প্রথম তিন ব্যাটারকে হারায় ৩৮ রানে।
সেখান থেকে দলকে টানেন দুই অভিজ্ঞ জাভেরিয়া খান ও বিসমাহ মারুফ। চতুর্থ উইকেটে দুজন যোগ করেন ৭৩ রান।
৫ চারে ৪৪ রান করে জাভেরিয়া স্টাম্পড হন বাঁহাতি স্পিনার নাহিদা আক্তারের বলে। পরের ওভারে রিতু মনি বোল্ড করে দেন ৩২ রান করা বিসমাহকে।
জোড়া ধাক্কার পর রিতু মনি যখন ফেরালেন ওমাইমা সোহেলকে, ১২০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে তখন নড়বড়ে পাকিস্তান।
৬৬ রানের জুটিতে দলকে উদ্ধার করেন আলিয়া রিয়াজ ও ফাতিমা সানা। ৩৩ বলে ২৯ রান করে আউট হন ফাতিমা। ৭ চারে ৫০ বলে ৪৪ রান করে আলিয়া পাকিস্তানকে নিয়ে যান দুইশ ছাড়িয়ে।
বাংলাদেশের অভিজ্ঞ পেসার জাহানারা আলম এ দিন খেলেননি। আগের ম্যাচে বিশ্রামে থাকা সালমা খাতুন এই ম্যাচে ফিরে উইকেট পাননি।
বাংলাদেশ ব্যাটিং অর্ডারে কিছুটা পরিবর্তন আনে এই ম্যাচে। শামিমা সুলতানার সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন শারমিন আক্তার। দুজনের কেউই অবশ্য ভালো করতে পারেননি। আগ্রাসী শুরু করেও শামিমা আউট হন ৪ চারে ১৮ রান করে। আগের ম্যাচে ৮১ রানের ইনিংস খেলা শারমিন আউট হন ১০ রানে।
দলকে পথে রাখেন তিনে নামা ফারজানা। তাকে খানিকটা সঙ্গ দিয়ে অধিনায়ক নিগার সুলতানা আউট হন ১৫ রানে। বাংলাদেশের ইনিংস গতি পায় ফারজানার সঙ্গে রুমানা আহমেদের জুটিতে। ওভারপ্রতি প্রায় ৬ করে রান আসে জুটিতে। ৩৬ বলে ৩০ করে রুমানা আউট হলে ভেঙে যায় ৪৯ রানের জুটি।
এরপর সোবহানা মোসতারি ও সালমা খাতুনরা দ্রুত বিদায় নিলে দল চাপে পড়ে যায় আরও। ফারজানা ছিলেন বলে টিকে থাকে সম্ভাবনা। কিন্তু ৭১ রান করে ফারজানা ফিরতি ক্যাচ দেন ফাতিমা সানাকে। দলের সম্ভাবনাও চোট খায় প্রবল।
ওপেনার মুর্শিদা খাতুনকে ৯ নম্বরে ব্যাটিংয়ে পাঠালেও লাভ হয়নি। দল শেষ পর্যন্ত ছুঁতে পারেনি লক্ষ্য।
প্রস্তুতি পর্ব শেষে এবার আসল লড়াইয়ের পালা। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ৪২ ওভারে ১৯৯/৭ (নাহিদা ১২, সিদরা আমিন ১২, মুনিবা ২, জাভেরিয়া ৪৪, বিসমাহ ৩২, ওমাইমা ৭, আলিয়া ৪৫*, ফাতিমা সানা ২৯, সিদরা নওয়াজ ৪*; সুরাইয়া ৬-২-২৩-০, তৃষ্ণা ৮-১-৪০-৩, লতা ৪-০-১৯-০, সালমা ৭-০-৩২-০, রিতু ৯-০-৩৫-৩, নাহিদা ৫-০-২৮-১, রুমানা ৩-০-২০-০)।
বাংলাদেশ: (লক্ষ্য ৪২ ওভারে ২০২) ৪১.২ ওভারে ১৯৪ (শামিমা ১৮, শারমিন ১০, ফারজানা ৭১, নিগার ১৫, রুমানা ৩০, সোবহানা ৫, সালমা ১, রিতু ১৩, মুর্শিদা ৯, লতা ৭, নাহিদা ৫*; ফাতিমা সানা ৯-১-৪৭-৪, আনাম ৭-০-২৮-০, আইমান ৭-০-৪৭-১, নাশরা ৮.২-৩-২২-৩, ওমাইমা ৩-০-১৪-০, গুলাম ফাতিমা ৭-০-৩৩-১)।
ফল: ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে পাকিস্তান ৭ রানে জয়ী।