আফগানিস্তানের ৭ উইকেটের জয়
ছোট্ট পুঁজি নিয়ে যেমন বোলিং দরকার ছিল তার কিছুই পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। পাওয়ার প্লেতে ৫৭ রান তুলে দৃঢ় ভিত পেয়ে যায় আফগানিস্তান। এরপর আর তাদের পিছু তাকাতে হয়নি। লড়াইয়ের কিছুটা সুযোগ অবশ্য তৈরি করেছিলেন শরিফুল ইসলাম। কিন্তু পরপর তিন ওভারে তার বলে রহমানউল্লাহ গুরবাজের ক্যাচ ছেড়ে সেটা হাতছাড়া করেন ফিল্ডাররা।
তিন বিভাগে ব্যর্থতার দিনে ৭ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের ১৯২ রান আফগানিস্তান পেরিয়ে গেছে ৫৯ বল বাকি থাকতে।
১০৯ বলে ৪ ছক্কা ও ৭ চারে ১০৫ রানে অপরাজিত থাকেন গুরবাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৪৬.৫ ওভারে ১৯২ (তামিম ১১, লিটন ৮৬, সাকিব ৩০, মুশফিক ৭, ইয়াসির ১, মাহমুদউল্লাহ ২৯*, আফিফ ৫, মিরাজ ৬, তাসকিন ০, শরিফুল ৭, মুস্তাফিজ ১; ফারুকি ৭.৫-০-৩৩-১, মুজিব ৮-০-৩৭-০, ওমরজাই ৬-০-২৯-১, নাইব ৫-০-২৫-০, রশিদ ১০-০-৩৭-৩, নবি ১০-০-২৯-২)
আফগানিস্তান: ওভারে ৪০.১ ১৯৩/৩ (গুরবাজ ১০৬*, রিয়াজ ৩৫, রহমত ৪৭, শাহিদি ২, নাজিবউল্লাহ ১*; শরিফুল ৭-১-৪১-০, তাসকিন ৬-০-৩৪-০, সাকিব ১০-০-৪৭-১, মুস্তাফিজ ৬-০-২৪-০, মিরাজ ৮.১-০-৩৭-২, আফিফ ২-০-৮-০, ইয়াসির ১-০-২-০)
তিন জীবনে গুরবাজের সেঞ্চুরি
শরিফুল ইসলামের পরপর তিন ওভারে তিনবার বেঁচে যাওয়া রহমানউল্লাহ গুরবাজ করলেন সেঞ্চুরি, তার ৯ ম্যাচের ছোট্ট ক্যারিয়ারে এটি তৃতীয় তিন অঙ্ক ছোঁয়া ইনিংস।
এ নিয়ে পঞ্চাশ ছোঁয়া তিনটি ইনিংসকেই তিন অঙ্কে নিয়ে গেলেন ডানহাতি এই ওপেনার।
শুরু থেকে বলে-বলে রান করে যাওয়া গুরাবাজের সেঞ্চুরি আসে ১০২ বলে। এই সময়ে মারেন ৬টি চার ও ৪টি ছক্কা।
বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের ব্যর্থ রিভিউ
হাশমতউল্লাহ শাহিদির বিপক্ষে এলবিডব্লিউর রিভিউ নিয়ে বিফল হলো বাংলাদেশ। এক বল পর এলবিডব্লিউ হয়ে রিভিউ নিয়ে উল্টো অভিজ্ঞতা হলো আফগান অধিনায়কের।
মেহেদী হাসান মিরাজের বল বেরিয়ে এসে ডিফেন্স করার চেষ্টায় ব্যর্থ হন শাহিদি। সেবার বেঁচে যান আম্পায়ার্স কলে। পরেরবার সুইপ করে ফেরেন এলবিডব্লিউ হয়ে। বল লাগতো মিডলস্টাম্পে, নষ্ট হয় রিভিউ।
৩৮ ওভারে আফগানিস্তানের রান ৩ উইকেটে ১৮৩। ক্রিজে রহমানউল্লাহ গুরবাজের সঙ্গী নাজিবউল্লাহ জাদরান।
শতরানের জুটি ভাঙলেন মিরাজ
দুটি ক্যাচ হাতছাড়া করা মুশফিকুর রহিম কাজে লাগালেন সহজ স্টাম্পিংয়ের সুযোগ। রহমত শাহকে বিদায় করে মেহেদী হাসান মিরাজ ভাঙলেন জুটি।
আগের বলেই রহমানউল্লাহ গুরবাজের সিঙ্গেলে ১২২ বলে তিন অঙ্কে যায় জুটির রান। পরের বল বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় স্টাম্পড হয়ে যান রহমত।
৬৭ বলে তিন চারে ৪৭ রান করেন এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।
৩৬ ওভারে আফগানিস্তানের রান ২ উইকেটে ১৭৯। ক্রিজে রহমানউল্লাহর সঙ্গী অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদি।
শরিফুলের বলে সুযোগ হাতছাড়ার হ্যাটট্রিক
দারুণ বোলিং করলেও সতীর্থদের ব্যর্থতায় উইকেটের দেখা পাচ্ছেন না শরিফুল ইসলাম। তার বলে পরপর তিন ওভারে তিনবার জীবন পেলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ।
জায়গায় দাঁড়িয়ে বাঁহাতি পেসারের বলে ব্যাট চালিয়ে দেন এই ওপেনার। উপরের কানা ছুঁয়ে আসা বলে কোনোমতে গ্লাভস ছোঁয়াতে পারেন মুশফিক। ব্যাটসম্যান পেয়ে যান বাউন্ডারি।
৬০, ৬১ রানের পর ৬৩ রানে বাঁচলেন গুরবাজ।
২৭ ওভারে আফগনিস্তানের রান ১ উইকেটে ১৩৮।
আবার ক্যাচ হাতছাড়া, এবার মাহমুদউল্লাহ
মুশফিকুর রহিমের পর শরিফুল ইসলামের বলে ক্যাচ ছাড়লেন মাহমুদউল্লাহ। বাঁহাতি পেসারের লেংথ বল ঠিক মতো পুল করতে পারেননি রহমানউল্লাহ গুরবাজ। লং অনে ক্যাচ যায় মাহমুদউল্লাহর কাছে। বিস্ময়করভাবে বল মুঠোয় জমাতে পারেননি তিনি। প্রথম ওয়ানডেতে প্রায় একইভাবে একটি সুযোগ হাতছাড়া করেছিলেন তিনি।
৬০ রানে বাঁচার পর এবার ৬১ রানে জীবন পেলেন গুরবাজ।
২৫ ওভারে আফগানিস্তানের রান ১ উইকেটে ১২১। গুরবাজ ৬২ ও রহমত শাহ ২৩ রানে ব্যাট করছেন।
সুযোগ হাতছাড়া করলেন মুশফিক
দ্বিতীয় চেষ্টায় স্টাম্পিং করে দ্রুতই ভুল ঠিক করে নিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু ক্যাচের ক্ষেত্রে সেই সুযোগ পেলেন না। তাকে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গেলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ।
শরিফুল ইসলামের লেগ স্টাম্পের বাইরের বল পুল করেছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। ঠিক মতো পারেননি, গ্লাভস ছুঁয়ে ক্যাচ যায় মুশফিকের কাছে। কিছুটা সরে গিয়ে দুই হাত বাড়িয়ে লাফের মতো দিয়ে গ্লাভসে জমাতে পারেননি কিপার।
সে সময় ৬০ রানে ছিলেন গুরবাজ।
২৩ ওভারে আফগানিস্তানের রান ১ উইকেটে ১১৩।
গুরবাজের ফিফটি
আগের দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে তেমন কিছু করতে না পারা রহমানউল্লাহ গুরবাজ এবার সামনে থেকে টানছেন দলকে। ৫৩ বলে ছুঁয়েছেন ফিফটি।
নিজের মতো করেই খেলছেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। ঝুঁকি নিচ্ছেন, সেগুলো কাজেও লাগছে। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পথে মেরেছেন চারটি চার ও একটি ছক্কা।
১৮ ওভারে আফগানিস্তানের রান ১ উইকেটে ৯১। গুরবাজ ৫১ ও রহমত শাহ ৪ রানে ব্যাট করছেন।
মুশফিকুর রহিমের ব্যর্থতায় হাতছাড়া হতে বসেছিল সুযোগ। কিন্তু পা ভেতরে নেওয়ার ততটা তাড়া যেন ছিল না রিয়াজ হাসানের। তখনও সুযোগ আছে দেখে আর দেরি করেননি অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক। কাজে লাগান স্টাম্পিংয়ের সুযোগ।
বাঁহাতি স্পিনারের বেরিয়ে যাওয়া বল পা বাড়িয়ে ডিফেন্সের চেষ্টায় পারেননি রিয়াজ। পেছনের পা বেরিয়ে আসে লাইনের বাইরে। বল ধরে বেলস ফেলার চেষ্টায় স্টাম্পে গ্লাভস ছোঁয়াতে পারেননি মুশফিক। ভাগ্য ভালো তার, রিয়াজ আস্তে ধীরে ফিরছিলেন জায়গায়, তাই দ্রুত দ্বিতীয় সুযোগ কাজে লাগান তিনি। ভাঙে ৭৯ রানের শুরুর জুটি।
৪৯ বলে চারটি চার ও একটি ছক্কায় ৩৫ রান করেন রিয়াজ।
১৬ ওভারে আফগানিস্তানের রান ১ উইকেটে ৮২। ক্রিজে রহমানউল্লাহ গুরবাজের সঙ্গী রহমত শাহ।
পাওয়ার প্লেতে আফগানিস্তানের দৃঢ় ভিত
উইকেটের জন্য একের পর এক বোলার পাল্টেও কোনো লাভ হচ্ছে না। আফগানিস্তানের শুরুর জুটি এখনও ভাঙতে পারেননি কেউই। উল্টো ছোট রান তাড়ায় দুই ওপেনার দলকে এনে দিলেন ভালো শুরু।
৫৬ বলে উদ্বোধনী জুটির রান ছুঁয়েছে পঞ্চাশ।
১০ ওভারে ৫৭ রান তুলেছে আফগানিস্তান। ৩৩ বলে ২৯ রানে ব্যাট করছেন রিয়াজ হাসান। ২৭ বলে রহমনউল্লাহ গুরবাজের রান ২৭।
১৯২ রানেই শেষ বাংলাদেশ
তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে মুস্তাফিজুর রহমানের রান আউট দিয়ে ১৯২ রানেই শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশের ইনিংস। পঞ্চাশ ওভার পুরো হতে তখনও বাকি ১৯ বল।
সাকিব আল হাসানের আউট দিয়ে যে ধসের শুরু তাতে বাধ দিতে পারেননি কেউই। বাংলাদেশের শেষ ৯ উইকেট পড়েছে কেবল ৮৮ রানে। মাঝের ওভারগুলোতে রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবির বলে উইকেট হারায় স্বাগতিকরা পরে আর পারেনি ঘুরে দাঁড়াতে।
এক প্রান্ত আগলে রেখে ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ। অন্য প্রান্তে নিয়মিত উইকেট পড়লেও বড় শট খেলার চেষ্টা করেননি কিংবা লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের আড়াল দেওয়ার চেষ্টাও করেননি তিনি। অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের ইনিংসে নেই কোনো বাউন্ডারি।
বাংলাদেশ: ৪৬.৫ ওভারে ১৯২ (তামিম ১১, লিটন ৮৬, সাকিব ৩০, মুশফিক ৭, ইয়াসির ১, মাহমুদউল্লাহ ২৯*, আফিফ ৫, মিরাজ ৬, তাসকিন ০, শরিফুল ৭, মুস্তাফিজ ১; ফারুকি ৭.৫-০-৩৩-১, মুজিব ৮-০-৩৭-০, ওমরজাই ৬-০-২৯-১, নাইব ৫-০-২৫-০, রশিদ ১০-০-৩৭-৩, নবি ১০-০-২৯-২)
রান আউট শরিফুল
মাহমুদউল্লাহকে স্ট্রাইক দেওয়ার চেষ্টায় নিজের উইকেট বিলিয়ে এলেন শরিফুল ইসলাম। রান সম্ভব নয় বুঝে মাহমুদউল্লাহ যখন তাকে ফিরিয়ে দিলেন তেমন কিছু করার ছিল না তার। বোলার মুজিব উর রহমানের সরাসরি থ্রো আঘাত হানে স্টাম্পে।
৪৬ ওভারে বাংলাদেশের রান ৯ উইকেটে ১৮৯। ক্রিজে শেষ জুটি, মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী মুস্তাফিজুর রহমান।
তাসকিনকে ফিরিয়ে রশিদের ৩
নিজের শেষ বলে উইকেট পেলেন রশিদ খান। এলবিডব্লিউ করে দিলেন তাসকিন আহমেদকে।
লেগ স্পিনারের গুগলি বুঝতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ব্যর্থ হন পা বাড়িয়ে ডিফেন্সের চেষ্টায়। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দিলে নেন রিভিউ। বল লাগতো অফ স্টাম্পে, ইমপ্যাক্ট ছিল আম্পায়ার্স কল। তাই ফিরে যেতে হয় তাসকিনের। তিনি রশিদের তৃতীয় শিকার।
৪৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ৮ উইকেটে ১৭৬। ক্রিজে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী শরিফুল ইসলাম।
অহেতুক রান আউটে বিপদ বাড়ালেন মিরাজ
কোনো সুযোগই ছিল না এমন একটি রানের জন্য। অনেকটা এগিয়ে গিয়ে ফেরার চেষ্টা করেও পারলেন না মেহেদী হাসান মিরাজ। নাজিবউল্লাহ জাদরানের সরাসরি থ্রোয়ে বিদায় নিলেন রান আউট হয়ে।
১২ বলে মিরাজ করেন ৬ রান।
দলকে ২২০-২৩০ রানের একটা পুঁজি এনে দিতে ভরসা এখন কেবল মাহমুদউল্লাহ। ক্রিজে এখন তার সঙ্গী তাসকিন আহমেদ।
৪২ ওভারে বাংলাদেশের রান ৭ উইকেটে ১৭৫।
আফিফের বাজে শটে বিপদে বাংলাদেশ
ক্রিজে যাওয়ার একটু পরে মুজিব উর রহমানের বলে চমৎকার কাটে বাউন্ডারি পেলেন আফিফ হোসেন। কিন্তু এরপরেই মোহাম্মদ নবিকে তুলে মারার চেষ্টায় ফিরে গেলেন ক্যাচ দিয়ে।
অফ স্পিনারের স্লো বলে টাইমিং করার চেয়ে জোরে খেলার দিকে মনোযোগী ছিলেন আফিফ। তাতে বল যায়নি বেশি দূরে। পুল করে নিতে পারেন কেবল মিড অনের ফিল্ডার মুজিবের হাত পর্যন্ত।
৬ বলে আফিফ করেন ৫।
৩৮ ওভারে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১৬০। ক্রিজে স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের শেষ জুটি। সেখানে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী মেহেদী হাসান মিরাজ।
চমৎকার ক্যাচে থামলেন লিটন
ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো টানা দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও পারলেন না লিটন দাস। চমৎকার ক্যাচ নিয়ে এই ওপেনারকে থামালেন গুলবাদিন নাইব।
মোহাম্মদ নবির বল তুলে মেরেছিলেন লিটন। কিন্তু যেভাবে চেয়েছিলেন সেভাবে স্লগ করতে পারেননি। সীমানা থেকে ছুটে এসে শেষ সময়ে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ জমান নাইব।
দ্রুত ৩ উইকেট হারানোর ধাক্কা সামাল দেওয়ার আগেই বাংলাদেশ হারাল থিতু ব্যাটসম্যানকে। চাপ আরও বাড়ল স্বাগতিকদের উপর।
নিজের পঞ্চাশতম ওয়ানডেতে ১১৩ বলে ৭ চারে ৮৬ রান করেন লিটন।
৩৬ ওভারে বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ১৫৩ রান। ক্রিজে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী আফিফ হোসেন।
আফগানদের ব্যর্থ রিভিউ
টানা তৃতীয় ওভারে উইকেট পেতে যাচ্ছিলেন রশিদ খান। কিন্তু ইমপ্যাক্ট অফ স্টাম্পের বাইরে হওয়ায় এলবিডব্লিউ থেকে বাঁচলেন মাহমুদউল্লাহ। আফগানিস্তান হারাল দ্বিতীয় ও শেষ রিভিউ।
গুগলি ঠিক মতো খেলতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। ব্যাটের কানা এড়িয়ে আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ার এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া না দিলে রিভিউ নেন হাশমতউল্লাহ শাহিদি। তবে ইম্প্যাক্ট বাইরে বলে বেঁচে যান ব্যাটসম্যান।
সে সময় ১ রানে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ।
৩১ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ১৩৩। ৯৯ বলে লিটনের রান ৭৬। ৭ বলে ১ রানে খেলছেন মাহমুদউল্লাহ।
দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ
সাকিব আল হাসানের বিদায়ের পর বাংলাদেশকে চাপে ফেলে দিয়েছেন রশিদ খান। পরপর দুই ওভারে মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলি চৌধুরিকে বিদায় করেছেন এই লেগ স্পিনার।
কী করবেন তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন ইয়াসির। শেষ পর্যন্ত জায়গায় দাঁড়িয়েই ডিফেন্ড করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ঠিক মতো পারেননি, বল ব্যাটের কানা ছুঁয়ে কিপারের প্যাডে লেগে জমা পড়ে স্লিপ ফিল্ডারের হাতে।
৪ বলে ১ রান করেন ইয়াসির। তিনি রশিদের দেড়শতম শিকার। আফগান লেগ স্পিনারের চেয়ে কম ম্যাচে দেড়শ উইকেট পেয়েছেন কেবল মিচেল স্টার্ক (৭৭) ও সাকলাইন মুশতাক (৭৮)। রশিদের লেগেছে ৮০ ম্যাচ।
২৯ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ১২৪। ক্রিজে লিটন দাসের সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ।
সাকিব আল হাসানের বিদায়ের পর একটা জুটি গড়ে তোলার চেষ্টা করছিলেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। সেটা ভেস্তে দিলেন লেগ স্পিনার রশিদ খান।
পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন মুশফিক। স্পিন করে বেরিয়ে যাওয়া বল তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে রহমানউল্লাহ গুরবাজের গ্লাভসে। আগের ম্যাচে দুইশ ছোঁয়া জুটি উপহার দেওয়া দুই ব্যাটসম্যান এবার বিচ্ছিন্ন হলেন ১৭ রান করেই।
১৫ বলে ৭ রান করেন মুশফিক।
২৭ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ১২১। ক্রিজে লিটন দাসের সঙ্গী ইয়াসির আলি চৌধুরি।
সাকিবের বিদায়ে ভাঙল জুটি
খেলার ধারার বিপরীতে উইকেট হারাল বাংলাদেশ। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে বোল্ড হয়ে গেলেন সাকিব আল হাসান।
শর্ট বল থার্ড ম্যানে পাঠাতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। কিন্তু বল যায় স্টাম্পে। ভীষণ হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়েন সাকিব। ভাঙে ৬৯ বল স্থায়ী ৬১ রানের জুটি।
৩৬ বলে তিন চারে ৩০ রান করেন সাকিব।
২২ ওভারে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ১০৪। ক্রিজে লিটনের সঙ্গী মুশফিকুর রহিম।
জুটির পঞ্চাশ, দলের একশ
গুলবাদিন নাইবকে কাভার ড্রাইভে সাকিব আল হাসানের বাউন্ডারিতে এলো লিটন দাসের সঙ্গে তার জুটির পঞ্চাশ, ৬০ বলে। সেই ওভারেই একশ রানে গেল বাংলাদেশের সংগ্রহ।
২১ ওভারে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ১০২। তিন চারে ৩৪ বলে ২৯ রানে খেলছেন সাকিব। ৬ চারে ৬৭ বলে লিটনের রান ৫৫। এই ইনিংস খেলার পথে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চার হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন এই ওপেনার।
পঞ্চাশে লিটনের ৫০
নিজের পঞ্চাশতম ওয়ানডেতে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ফিফটি করেছেন লিটন দাস। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ানের পঞ্চাশ এসেছে ৬৩ বলে।
প্রথম আট ওভারে নিজেকে বেশ গুটিয়ে রেখেছিলেন লিটন। এরপর থেকে কিছুটা বেড়েছে তার শট। ফজল হক ফারুকির এক ওভারে মেরেছেন দুটি বাউন্ডারি। চার মেরে বোলিংয়ে স্বাগত জানিয়েছেন রশিদ খানকে। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর চমৎকার কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারি মেরেছেন আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে।
২০ ওভারে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ৯১।
ওয়ানডে সিরিজে টানা তৃতীয়বার ফজলহক ফারুকির বলে আউট হলেন তামিম ইকবাল। আগের দুইবার এলবিডব্লিউ হওয়া বাঁহাতি ওপেনার এবার হলেন বোল্ড।
বেরিয়ে এসে লেগে বল ঘুরাতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ব্যাট-প্যাডের বিশাল ফাঁক দিয়ে বল আঘাত হানে স্টাম্পে। ভাঙে ৪৩ রানের জুটি।
১ চারে ২৫ বলে ১১ রান করেন তামিম।
ক্রিজে গিয়েই চমৎকার কাভার ড্রাইভে রানের খাতা খোলেন সাকিব আল হাসান। পরের বলে আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দিলে বাঁচেন রিভিউ নিয়ে। ফারুকির বল পিচ করেছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে।
১১ ওভারে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ৪৮। লিটন দাস ২৮ ও সাকিব ৫ রানে ব্যাট করছেন।
উইকেটশূন্য পাওয়ার প্লে
দ্বিতীয় বলেই এলবিডব্লিউর জোরাল আবেদন থেকে বেঁচে যাওয়া তামিম ইকবাল ইনিংসের শুরুতে সাবধানী। আরেক প্রান্তে রানের চাকা কিছুটা সচল রেখেছেন লিটন দাস। পাওয়ার প্লেতে ১০ ওভারে দুই ওপেনার তুলেছেন ৪৩ রান।
৮ ওভারেও রান ছিল ২৬। সেখান থেকে দুই ওভারে তিন চারে রান রেট কিছুটা বাড়ান লিটন। এর মধ্যে অ্যাঙ্গেল চেঞ্জ করা ফজলহক ফারুকির বলে কাভার ড্রাইভটি ছিল দুর্দান্ত।
আফগানিস্তানের ব্যর্থ রিভিউ
ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই জোরাল এলবিডব্লিউর আবেদন থেকে বেঁচে যান তামিম ইকবাল। সেবার রিভিউ নেয়নি আফগানিস্তান। তৃতীয় ওভারে নেয় লিটন দাসের বিপক্ষে। ফজলহক ফারুকির প্যাডে থাকা ফুল লেংথ ডেলভারিতে ফ্লিক করার চেষ্টায় পারেননি ডানহাতি এই ওপেনার।
বিস্ময়করভাবে এক অ্যাঙ্গেল থেকে বল-ব্যাটে পরিষ্কার ব্যবধান দেখা গেলেও স্নিকো মিটারে মৃদু স্পাইক দেখে তৃতীয় আম্পায়ার বলেন, বল ব্যাট স্পর্শ করেছে। রিভিউ হারায় সফরকারীরা। সে সময় ২ রানে ছিলেন লিটন।
আফগান দলে এক পরিবর্তন
টানা দুই ম্যাচ হেরে আগেই সিরিজ খোয়ানো আফগানিস্তান একাদশে এনেছে একটি পরিবর্তন। এলোমেলো বোলিং করা বাঁহাতি পেসার ফরিদ আহমাদ মালিক জায়গা হারিয়েছেন, দলে ফিরেছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব।
আফগানিস্তান দল: রহমানউল্লাহ গুরবাজ, রিয়াজ হাসান, হাশমতউল্লাহ শহিদি (অধিনায়ক), রহমত শাহ, নাজিবউল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবি, গুলবাদিন নাইব, রশিদ খান, ফজলহক ফারুকি, মুজিব উর রহমান, আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
টানা তিন ম্যাচ একই একাদশ নিয়ে খেলছে বাংলাদেশ। অভিষেকে শূন্যর পর দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ মেলেনি ইয়াসির আলি চৌধুরির। এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান পাচ্ছেন আরেকটি সুযোগ।
একাদশের বাইরে থাকছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদুল হাসান জয়, নাসুম আহমেদ ও ইবাদত হোসেন।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, ইয়াসির আলি চৌধুরি, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
টানা দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতলেন তামিম ইকবাল। আগের ম্যাচের মতো এবারও নিলেন ব্যাটিং।
হোয়াইটওয়াশ করার হাতছানি
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে শুরু হয় বাংলাদেশের যাত্রা। নিউ জিল্যান্ডে গিয়ে হয় উল্টো অভিজ্ঞতা। হোয়াইটওয়াশড হয় তামিম ইকবালের দল। আশা জাগিয়েও শ্রীলঙ্কাকে হোয়াইটশ করতে পারেনি বাংলাদেশ, সিরিজ জেতে ২-১ ব্যবধানে। পরে জিম্বাবুয়েকে তাদের মাটিতেই হোয়াইটওয়াশ করে তারা। এবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে আরেকটি সিরিজ ৩-০ করার হাতছানি তাদের সামনে।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে সোমবার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে শুরু হবে সকাল ১১টায়।
প্রথম ম্যাচে জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন বোলাররা, পরেরটিতে দলকে আফগানিস্তানের ধরা ছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গিয়েছিলেন ব্যাটসম্যানরা। তৃতীয় ম্যাচে দুই বিভাগেই নিজেদের মেলে ধরে বাংলাদেশ ধরে রাখতে চায় জয়ের ধারাবাহিকতা।