ক্রাইস্টচার্চে তৃতীয় দিনের খেলা শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৪০ রান। প্রথম ইনিংসে ৭১ রানের লিড নেওয়া দলটি এগিয়ে ২১১ রানে। কিপার-ব্যাটসম্যান কাইল ভেরেইনা ২২ ও পেস বোলিং অলরাউন্ডার ভিয়ান মুল্ডার ১০ রানে ব্যাট করছেন।
এর আগে ক্যারিয়ার সেরা অপরাজিত ১২০ রানের ইনিংসে নিউ জিল্যান্ডকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলেন ডি গ্র্যান্ডহোম। টেস্টে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করা এই অলরাউন্ডারের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ১৩৩ রানের জুটি গড়ার পথে ড্যারিল মিচেল করেন ফিফটি।
তাদের ব্যাটে নিউ জিল্যান্ড এক সময়ে লিডের সম্ভাবনা জাগালেও সেটা সম্ভব হয়নি রাবাদা ও ইয়ানসেনের চমৎকার বোলিংয়ে। ক্যারিয়ারে একাদশবার পাঁচ উইকেট নেন রাবাদা, ইয়ানসেন পান চার উইকেট।
উইকেট এখনও খুব একটা ভাঙেনি। পেসার ও ম্যাচের একমাত্র বিশেষজ্ঞ স্পিনার কেশভ মহারাজের জন্য রয়েছে সুবিধা। কিন্তু রান করাই যাবে না এমন নয়। তবে এরই মধ্যে নিউ জিল্যান্ডকে ক্রাইস্টচার্চে রেকর্ড গড়ার চ্যালেঞ্জ দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাকি ৫ উইকেটে রান যত বাড়বে স্বাগতিকদের কাজটাও তত কঠিন হবে।
সময় কোনো সমস্যা নয়, আবহাওয়া পূর্বাভাসে নেই বৃষ্টির কোনো বার্তা। ম্যাচ জিততে চ্যালেঞ্জ নিতেই পারে নিউ জিল্যান্ড। সেটা যে সম্ভব তার নমুনা দেখালেন ডি গ্র্যান্ডহোম। ৫ উইকেটে ১৫৭ রান দিয়ে দিন শুরু করা দলকে তিনি নিয়ে গেলেন ২৯৩ পর্যন্ত।
আগের দিন যেখানে শেষ করেছিলেন সেখান থেকেই যেন শুরু করেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। প্রথম বলেই মারেন বাউন্ডারি। আগের দিন থেকে তাকে সঙ্গ দিয়ে যাওয়া মিচেলের ব্যাট থেকে আসতে থাকে বাউন্ডারি। বাড়তে থাকে রান।
পেসারদের ঠিকঠাক সামলানো এই জুটি ভাঙেন মহারাজ। চমৎকার এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ করে দেন মিচেলকে। ভাঙে ১৩৩ রানের জুটি। ১৩৪ বলে ৮ চারে ৬০ রান করেন মিচেল।
এরপর কেউ খুব একটা সঙ্গ দিতে পারেননি ডি গ্র্যান্ডহোমকে। ১৩৮ বলে সেঞ্চুরি ছুঁয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন তিনি। কাইল জেমিসনের পর টিম সাউদিকে বিদায় করেন ইয়ানসেন। ক্রিজে গিয়েই বোলারদের উপর চড়াও হওয়া ওয়্যাগনারকে থামানোর পরের বলে ম্যাট হেনরিকে বিদায় করে স্বাগতিকদের ইনিংস গুটিয়ে দেন রাবাদা।
৬০ রানে ৫ উইকেট নিয়ে তিনিই সফলতম বোলার। ইয়ানসেন ৪ উইকেট নেন ৯৮ রানে।
৩ ছক্কা ও ১২ চারে ১৫৮ বলে ১২০ রানে অপরাজিত থেকে যান ডি গ্র্যান্ডহোম।
৭১ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায়। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান সারেল এরউইয়া ও অধিনায়ক ডিন এলগারকে বিদায় করেন সাউদি।
প্রথম রান করতে ২৫ বল খেলা এইডেন মারক্রাম যেতে পারেননি বেশি দূর। হেনরির নিখুঁত ইয়র্কারে ফেরেন বোল্ড হয়ে। সবশেষ ১২ টেস্ট ইনিংসে মারক্রামের গড় কেবল ১২.৭৫।
সফরকারীদের অবস্থা হতে পারতো আরও খারাপ। কিন্তু ৬ ও ৩০ রানে দুবার ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান রাসি ফন ডার ডাসেন। অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার সঙ্গে গড়েন ৬৫ রানের জুটি। শর্ট বলে ফিরতি ক্যাচ নিয়ে ফন ডার ডাসেনকে বিদায় করে জুটি ভাঙেন ওয়্যাগনার। পরে নেন বাভুমার উইকেট।
দিনের বাকি সময়টা নিরাপদে কাটিয়ে দেন ভেরেইনা ও মুল্ডার। নিউ জিল্যান্ডকে তিনশর আশেপাশের লক্ষ্য দিতে তাদের দিকেই তাকিয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৩৬৪
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৪৫ ওভারে ১৫৭/৫) ৮০ ওভারে ২৯৩ ( মিচেল ৬০, ডি গ্র্যান্ডহোম ১২০*, জেমিসন ১৩, সাউদি ৫, ওয়্যাগনার ২১, হেনরি ০; রাবাদা ১৯-২-৬০-৫, ইয়ানসেন ২২-২-৯৮-৪, সিপামলা ১৬-৪-৪৯-০, মুল্ডার ৭-২-৩৪-০, মহারাজ ১৬-২-৪৬-১)
দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংস: ৫৩ ওভারে ১৪০/৫ (এর উইয়া ৮, এলগার ১৩, মারক্রাম ১৪, ফন ডার ডাসেন ৪৫, বাভুমা ২৩, ভেরেইনা ২২*, মুল্ডার ১০*, সাউদি ১৪-৪-২৮-২, হেনরি ১৩-৪-২৫-১, জেমিসন ১১-১-৩০-০, ওয়্যাগনার ১২-২-৪৪-২, ডি গ্র্যান্ডহোম ৩-১-৯-০)।