প্রতিভাবান ব্যাটসম্যানদের আরও ধারাল করে তোলার বিশেষ সামর্থ্য যে তার আছে, সেটা বাংলাদেশের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্বে থাকার সময়ই দেখিয়েছিলেন সিডন্স। ২০০৭ সালে যখন তিনি বাংলাদেশের দায়িত্ব নেন, দলে তখন একঝাঁক সম্ভাবনাময় তরুণ। সেই সময়ের তরুণ তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহদের ব্যাটিং নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করেছিলেন তিনি।
সিডন্সের গড়ে দেওয়া ভিতের ওপরই পরে রানের সৌধ গড়েন তামিম-সাকিব-মুশফিকরা। ২০১১ বিশ্বকাপের পর সিডন্সের সঙ্গে চুক্তি আর নবায়ন করেনি বিসিবি। তবে তার দেখানো পথ ধরে ছুটেই তামিম-সাকিবরা পৌঁছে যান পরের ধাপে।
সেই সিডন্স আবার বাংলাদেশের ক্রিকেটে ফিরেছেন ব্যাটিং কোচ হয়ে। তরুণদের গড়ে তোলায় তাকে অনেকটা বিশেষজ্ঞই মনে করা হয়। সিডন্স নিজেও চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, এই সময়ের তরুণদের দেখে তিনি মুগ্ধ।
“চার-পাঁচজন ফাস্ট বোলার আছে, যারা ৬ ফুট লম্বা ও ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করতে পারে। আমার জন্য তা রোমাঞ্চকর। এখনও এই দলে আছে বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার (সাকিব), যে প্রতিদিনই পারফর্ম করে, ব্যাটে হোক বা ব হাতে। এই দুই ম্যাচে আরও কজন তরুণ প্রতিভাকে দেখলাম, মিরাজ, আফিফ ও লিটন। ওরা মানসম্পন্ন, দুর্দান্ত ও শান্ত মানসিকতার ক্রিকেটার, যারা কেবল উন্নতিই করবে আরও।”
আফগানিস্তানের বিপক্ষে চলতি ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে তরুণদের টেম্পারমেন্টও দারুণ নজর কেড়েছে সিডন্সের।
“ওরা যতই খেলবে, বড় ম্যাচে ততই পারফর্ম করবে। এই ম্যাচগুলি ছিল আমাদের ছেলেদের জন্য চাপের ম্যাচ। জিততেই হতো ওদের। তরুণ ক্রিকেটাররা নিজেদের মেলে ধরেছে, যা দারুণ। সিনিয়র ক্রিকেটাররাও একটা পর্যায়ে পারফর্ম করবে। তবে তাদের পাশাপাশি তরুণদেরও জ্বলে উঠতে হবে। এটাই রোমাঞ্চকর।”
এই তরুণদের মধ্যে তিনি আলাদা করে বললেন লিটনের কথা। স্টাইলিশ এই ব্যাটসম্যানের সেরাটা বের করে আনতে চান সিডন্স। নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটারদের তিনি দেখতে চান সাকিব-তামিমদের প্রজন্মকেও ছাড়িয়ে যেতে।
“আমার কাজ অর্ধেক হয়ে গেছে, কারণ মানসম্পন্ন সব ক্রিকেটার এখানে আছে। যত প্রতিভা দেখেছি, আমার চাপ প্রায় সরে গেছে। বড় ম্যাচে ওরা পারফর্ম করেছ এরই মধ্যে। লিটন দাসের মতো ছেলেরা টেস্টে পারফর্ম করছে। ছোট ছোট কিছু ব্যাপার দেখছি, যেখানে আমি ওকে সাহায্য করতে পারি।”
“ওকে শানিত করে তোলার শেষ কাজটুকু করতে পারলে, বিশ্বের প্রতিটি বোলারের বিপক্ষে সাফল্য পেতে পারে, হোক তা সত্যিকারের গতিময় বোলার বা গ্রেট স্পিনার। ওকে আরেকটু ভালো করে তোলা আমার চ্যালেঞ্জ। তামিম ও ওই ছেলেরা দারুণ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এখন আমরা তাই তরুণরা যেন আরও দূরে যেতে পারে।”