রাবাদা-ইয়ানসেনের তোপে বিপাকে নিউ জিল্যান্ড

বড় সংগ্রহ গড়ার মঞ্চ ছিল তৈরি। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার মিডল ও লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরা পারলেন না দলকে প্রত্যাশিত পুঁজি এনে দিতে। তবে বল হাতে জ্বলে উঠলেন দুই পেসার কাগিসো রাবাদা ও মার্কো ইয়ানসেন। দ্রুত নিউ জিল্যান্ডের পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে দলকে রাখলেন চালকের আসনে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2022, 10:15 AM
Updated : 26 Feb 2022, 10:15 AM

ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয় টেস্টে ৩ উইকেটে ২৩৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস থেমেছে ৩৬৪ রানে।

প্রতিপক্ষকে চারশর আগে আটকানোর স্বস্তি অবশ্য ব্যাটিংয়ে নেমে উবে গেছে নিউ জিল্যান্ডের। ৫ উইকেটে ১৫৭ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে তারা। এখনও ২০৭ রানে পিছিয়ে স্বাগতিকরা।

দুর্দান্ত বোলিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার রাবাদা নেন তিন উইকেট, ইয়ানসেন দুটি।

ক্যারিয়ারের নবম ফিফটিতে ৫৪ রানে অপরাজিত থেকে দলকে টানছেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। ২৯ রান নিয়ে খেলছেন ড্যারিল মিচেল।

শনিবার দিনের শুরুতে সূর্যের দেখা মিললেও ক্রাইস্টচার্চের আকাশে মাঝে জমাট বাধে মেঘ। পরে বৃষ্টিও হয় কিছুক্ষণ। সব মিলিয়ে পেসারদের জন্য কন্ডিশন হয়ে ওঠে সহায়ক। সেটাই কাজে লাগিয়ে নিজেদের মেলে ধরেন দুই দলের বোলাররা।

নিউ জিল্যান্ডের হয়ে ৪ উইকেট নেন নিল ওয়্যাগনার, ম্যাট হেনরি তিনটি।

দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে দিনের চতুর্থ ওভারেই আঘাত হানতে পারত নিউ জিল্যান্ড। কিন্তু হেনরির বলে তৃতীয় স্লিপে রাসি ফন ডার ডাসেনের সহজ ক্যাচ ছাড়েন টিম সাউদি। পরের বলে আবারও অল্পের জন্য বেঁচে যান ২৪ রানে থাকা এই ব্যাটসম্যান।

উইকেট হাতছাড়া হওয়ার হতাশায় অবশ্য হেনরিকে বেশিক্ষণ থাকতে হয়নি। তিন ওভার পরই দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে টেম্বা বাভুমাকে বোল্ড করে দেন প্রথম টেস্টে রেকর্ড গড়া বোলিং করা এই পেসার।

ওই ওভারেই রান আউট হওয়া থেকে রক্ষা পান কাইল ভেরেইনা। তাকেও অবশ্য টিকতে দেননি হেনরি। এই পেসারের পরের ওভারে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন ভেরেইনা।

উইকেটে জমে যাওয়া ফন ডাসেনকে ফেরানোর পর ওয়্যাগনার দ্রুত বিদায় করেন ভিয়ান মুল্ডারকেও।

৭ উইকেটে ২৯৮ রান নিয়ে লাঞ্চের পর নামা দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে আবারও ওয়্যাগনারের আঘাত, ফেরান রাবাদাকে। ৪৫ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য তখন ৩৫০ রানও দূরের পথ।

বৃষ্টিতে কিছুক্ষণ বন্ধ থাকার পর খেলা শুরু হলে ইয়ানসেন ও কেশভ মহারাজ গড়েন প্রতিরোধ। দ্রুত রান তুলতে থাকেন দুইজন। রান আসতে থাকে ওভার প্রতি সাড়ে চারের ওপরে।

মাথা ব্যথার কারণ হয়ে ওঠা ৭৯ বলে ৬২ রানের এই জুটি ভাঙেন কাইল জেমিসন। ওই ওভারেই তিনি গুটিয়ে দেন দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস।

প্রথম দিনে সারেল এরউইয়ার সেঞ্চুরি ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার আর কেউ ফিফটিও করতে পারেননি।

ব্যাটিংয়ে নেমে নিউ জিল্যান্ড উইকেট হারায় চতুর্থ বলেই। রাবাদার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন টম ল্যাথাম। তিন ওভার পর রাবাদা ফিরিয়ে দেন উইল ইয়াংকে, তিনিও হন কট বিহাইন্ড।

প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় থাকা হেনরি নিকোলস ও ডেভন কনওয়ের জুটির পঞ্চাশ ছুঁতে দেননি ইয়ানসেন। কনওয়েও ধরা পড়েন কিপার ভেরেইনার গ্লাভসে।

জমে যাওয়া নিকোলসকে সাজঘরে ফেরত পাঠান ইয়ানসেন। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৮ চারে ৩৯ রান করা নিকোলস। এক ওভার পরই টম ব্লান্ডেলের স্টাম্প এলোমেলো করে দেন রাবাদা।

৯১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তখন ফলো-অনে পড়ার শঙ্কায় নিউ জিল্যান্ড। উইকেটে নেমে পাল্টা আক্রমণ চালান ডি গ্র্যান্ডহোম। তার ঝড় বয়ে যায় মুল্ডারের ওপর। এই পেসারকে টানা এক ছক্কার সঙ্গে মারের দুই চার।

পরে লুথো সিপামলাকে পরপর দুই বলে হাঁকান চার ও ছক্কা। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৩৬ বলে ডি গ্র্যান্ডহোম স্পর্শ করেন ফিফটি।

তাকে সঙ্গ দিয়ে যান মিচেল। শুরুর ব্যাটিং ধসের পর এই দুইজনের ৬৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি নিউ জিল্যান্ডের জন্য স্বস্তি হয়ে এসেছে। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ১৩৩ ওভারে ৩৬৪ (আগের দিন ২৩৮/৩) (ফন ডার ডাসেন ৩৫, বাভুমা ২৯, ভেরেইনা ৪, মুল্ডার ১৪, ইয়ানসেন ৩৭*, রাবাদা ৬, মহারাজ ৩৬, সিপামলা ০; সাউদি ৩২-১১-৭৫-১, হেনরি ৩৫-১০-৯০-৩, জেমিসন ২৭-১০-৭৪-২, ডি গ্র্যান্ডহোম ৮-৩-১৬-০, ওয়্যাগনার ৩১-১০-১০২-৪)।

নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৪৫ ওভারে ১৫৭/৫ (ল্যাথাম ০, ইয়াং ৩, কনওয়ে ১৬, নিকোলস ৩৯, মিচেল ২৯*, ব্লান্ডেল ৬, ডি গ্র্যান্ডহোম ৫৪*; রাবাদা ১২-২-৩৭-৩, ইয়ানসেন ১২-২-৪৮-২, সিপামলা ১১-৪-৩৪-০, মুল্ডার ৬-২-২৫-০, মহারাজ ৪-১-৭-০)