একসময় লিটনের ব্যাটিং হাহাকারই জাগাত বেশি। অমিত প্রতিভাবান হয়েও পারছিলেন না পারফরম্যান্সে প্রতিফলন ফেলতে। সেই সময়টা এখন অতীত। হতাশা আর হাহাকারগুলো ক্রমেই রূপ নিচ্ছে হাসির ফোয়ারায়। এখনও অবশ্য সম্ভাবনার সবটুকু বাস্তবে দেখাতে পারেননি। তবে আগের চেয়ে এখন তিনি অনেক ধারাবাহিক।
ওয়ানডেতে প্রথম ৩৩ ইনিংসে তার সেঞ্চুরি ছিল ১টি। সবশেষ ১৬ ম্যাচে করে ফেলেছেন ৪ সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে কম ইনিংসে ৫ ওয়ানডে সেঞ্চুরির রেকর্ডও গড়ে ফেলেছেন।
সময়ের সঙ্গে যে তিনি পরিণত হচ্ছেন, সেটির প্রমাণ আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডের সেঞ্চুরিও। শুরুতে একটুও তাড়াহুড়ো না করে ইনিংস গড়েছেন। প্রথম ২০ ওভারে তার রান ছিল স্রেফ ৩৫। থিতু হয়ে, উইকেট বুঝে পরে দারুণ সেঞ্চুরিতে এগিয়ে নিয়েছেন দলের ইনিংস।
১২৬ বলে ১৩৬ রানের ইনিংস খেলে তিনি গড়ে দেন ম্যাচ ও সিরিজ জয়ের ভিত।
শুরুতে সাবধানে ব্যাটিং করে যে সময়টায় তিনি ইনিংসকে গতি দিয়েছেন, তখন বোলিং করেছেন আফগানদের মূল দুই অস্ত্র রশিদ খান ও মুজিব উর রহমান। ছিলেন অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবিও। এই তিন স্পিনারকেই দারুণ দক্ষতায় সামলেছেন লিটন।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এই প্রসঙ্গেই বললেন, মানসিকতার এই উন্নতি এসেছে অভিজ্ঞতার পথ ধরে।
“আমরা সিনিয়র হচ্ছি না? আমরাও তো ম্যাচ খেলে খেলে উন্নতি করছি। কোনো নতুন ব্যাটসম্যান যখন ক্যারিয়ার শুরু করে, এসব বোলিংয়ের বিপক্ষে খেলা তাদের জন্য কাজটা কঠিন। এখন তো আমরা যারা খেলছি, আমরা সবাই... আমি ৫ বছর খেলে ফেলেছি, আফিফরা ২-৩ বছর খেলেছে... তাদের তো একটা অভিজ্ঞতা হচ্ছে ক্রিকেটের।”
“আমার মনে হয়, এই জিনিসটা নিয়ে (ভড়কে যাওয়া) আমরা কেউ আর ওইভাবে চিন্তা করি না। আমরা শুধু জানি, ম্যাচে কাকে কীভাবে ব্যাটিং করব, সেই পরিকল্পনা সাজানোই মূল ব্যাপার।”
বড় ইনিংস খেলার হার আগের চেয়ে বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবেও তিনি বললেন নিজের মনোজগতে বদলের কথা।
“খেলার মানসিকতা (ভালো হয়েছে)… কীভাবে খেললে সাফল্যের হার বেশি হয়। আপনারা সেঞ্চুরি দেখছেন, কিন্তু এর মধ্যে অনেকগুলো ইনিংস আমি খারাপও খেলেছি। ক্রিকেটটাই এমন, আমি যেটা অনুভব করি। ওপেনার হিসেবে আপনি একদিন বড় ইনিংস খেলার সুযোগ পাবেন, সুযোগ প্রতিদিনই থাকবে... কিন্ত আপনি একদিন বড় খেলতে পারবেন, একদিন খেলতে পারবেন না। কারণ আমি যখন ম্যাচ শুরু করি তখন তাদের সেরা দুই বোলার বোলিং করেন। অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং থাকে জিনিসটা।”