চট্টগ্রামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বুধবার ২১৫ রানে অলআউট আফগানিস্তান।
টপ ও মিডল অর্ডারে আফগানদের পাঁচ ব্যাটসম্যান উইকেটে থিতু হতে পারলেও ফিফটি ছুঁতে পারেন কেবল নাজিবউল্লাহ জাদরান। চার নম্বরে নেমে প্রায় শেষ পর্যন্ত উইকেটে থেকে এই বাঁহাতি করেন ৬৭ রান।
আফগানদের ইনিংসে ফিফটি জুটিও স্রেফ একটি। বেশ কয়েকটি জুটি জমে ওঠার পরও ভেঙে যায় বড় হওয়ার আগেই। বাংলাদেশের বোলাররা ক্রমাগত চাপ ধরে রেখে আদায় করে নেন উইকেট। ছয় বোলার বল হাতে নিয়ে উইকেটের দেখা পান পাঁচজনই। যিনি উইকেট পাননি, সেই মেহেদী হাসান মিরাজ ১০ ওভারের টানা স্পেলে রান দেন স্রেফ ২৮।
আলাদা করে বলতে হবে তামিম ইকবালের নেতৃত্বের কথাও। বাংলাদেশ অধিনায়কের বোলিং পরিবর্তনগুলো এ দিন কাজে লেগে যায় দারুণভাবে। দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া তার মাঠ সাজানোও ছিল প্রায় নিখুঁত। সব মিলিয়েই আফগানরা পারেনি ইনিংসকে গতি দিতে।
মুস্তাফিজ-তাসকিন প্রথম ৫ ওভারে দেন কেবল ১৫ রান। তিন রানে জীবন পান ইব্রাহিম জাদরান। তাসকিনের বলে স্কয়ার লেগে সহজ ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন মাহমুদউল্লাহ।
তাসকিনের পরের ওভারেই চার-ছক্কা মেরে হাত সাফাইয়ের ইঙ্গিত দেন ইব্রাহিম। তবে তাকে জীবন দেওয়ার বড় মূল চুকাতে হয়নি শেষ পর্যন্ত। শরিফুল ইসলামের বলে ড্রাইভ করার চেষ্টায় ধরা পড়েন তিনি স্লিপে। কোনোরকমে বল হাতে জমান অভিষিক্ত ইয়াসির আলি চৌধুরি।
ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান তিনে নামা রহমত শাহও। শরিফুলের বলে ঠিকমতো বলের নিচে যেতে পারেননি সাকিব।
ইব্রাহিমের মতো জীবন কাজে লাগাতে পারেননি রহমতও। বড় ইনিংস খেলার জন্য আফগানরা তাকিয়ে থাকে মূলত রহমত ও শাহিদির ব্যাটে। উইকেটে বেশ কিছুটা সময় কাটানও তারা। কিন্তু কাউকেই লম্বা সময় টিকতে দেয়নি বাংলাদেশ।
রহমতকে ৩৪ রানে থামান তাসকিন। প্রথম স্পেলে আউট সুইংয়ের চেষ্টায় বেশ কয়েকটি ওয়াইড দেওয়া ফাস্ট বোলার দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে দেখা পান উইকেটের। লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন রহমত।
২৮ ওভারে আফগানিস্তানের রান তখন ৪ উইকেটে ১০২।
ইনিংসের একমাত্র পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি পায় তারা এরপরই। নবি নিজেকে সংযত রেখে সঙ্গ দিয়ে যান নাজিবউল্লাহকে। তাতে গড়ে ওঠে জুটি, বাড়ে রানের গতিও।
তবে বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আগেই নবিকে থামান তাসকিন। একই চিত্র গুলবাদিন নাইবেরও। তাসকিনকে বিশাল একটি ছক্কা মারলেও ঝড় ওঠেনি তার ব্যাটে। প্রথম ৮ ওভারে উইকেটশূন্য সাকিব এক ওভারেই ফেরান নাইব ও রশিদ খানকে।
নাজিবউল্লাহ এক প্রান্ত আগলে রেখে ফিফটি করেন ৭০ বলে। কিন্তু শেষ দিকে দাঁড়াতে পারেননি কোনো ব্যাটসম্যান।
নাজিবউল্লাহ নিজেও আউট হয়ে যান শেষের আগের ওভারে। মুস্তাফিজ-সাকিব-শরিফুলের ত্রিমুখী আক্রমণে ২১ রানেই শেষ ৫ উইকেট হারায় আফগানিস্তান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ৪৯.১ ওভারে ২১৫ (গুরবাজ ৭, ইব্রাহিম ১৯, রহমত ৩৪, শাহিদি ২৮, নাজিবউল্লাহ ৬৭, নবি ২০, নাইব ১৭, রশিদ ০, মুজিব ০, আহমাদজাই ৫, ফারুকি ০*; মুস্তাফিজ ৯.১-০-৩৫-৩, তাসকিন ১০-০-৫৫-২, সাকিব ৯-১-৫০-২, শরিফুল ১০-১-৩৮-২, মিরাজ ১০-৩-২৮-০, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৪-১)।