মুনিমকে নিয়ে নির্বাচকদের যে আশা

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের প্রথম দাবি যেটি, বাংলাদেশের দুর্বলতার শুরু সেখান থেকেই। টপ অর্ডারে নিয়মিত ঝড় তোলার মতো কেউ নেই। পাওয়ার প্লে ধারাবাহিকভাবে কাজে লাগানোর মতো কেউ নেই। সেই শূন্যতা পূরণের মতো একজন ত্রাতা পাওয়া গেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। নির্বাচকদের আশা, ব্যাটিং অর্ডারের শুরুর আঁধার দূর হবে মুমিন শাহরিয়ারের ব্যাটের আলোয়।

ক্রীড়া প্রতিবেদকচট্টগ্রাম থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Feb 2022, 03:52 AM
Updated : 22 Feb 2022, 07:36 AM

এই আশাটা অবশ্য লিটন কুমার দাস ও সৌম্য সরকারকে নিয়েও ছিল নির্বাচকদের ও দেশের ক্রিকেটের। কিন্তু তুমুল প্রতিভাবান হয়েও দুজনের কেউ এখনও পর্যন্ত যেতে পারেননি প্রত্যাশা পূরণের কাছাকাছি। সৌম্য তো নিজেকে হারিয়ে দল থেকেই ছিটকে পড়েছেন। লিটন আছেন আসা-যাওয়ার মধ্যে। হতাশার এই প্রেক্ষাপটেই আশার শিহরণ জাগিয়ে আবির্ভাব মুমিন শাহরিয়ারের।

গত বছর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ও সদ্য সমাপ্ত বিপিএলে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে আলোড়ন তুলে এবার জাতীয় দলেও জায়গা করে নিয়েছেন মুনিম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে ঠাঁই হয়েছে ২৩ বছর বয়সী ওপেনারের।

এবার বিপিএল ৬ ইনিংসে তার ব্যাট থেকে ১৭৮ রান এসেছে ১৫২.১৩ স্ট্রাইক রেটে। ৫টির বেশি ইনিংস খেলা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে আসরে সবচেয়ে বেশি স্ট্রাইক রেট তারই। গত বছর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ১৩ ইনিংসে ৩৫৫ রান করেছিলেন ১৪৩.১৪ স্ট্রাইক রেটে।

একদম প্রথম বল থেকেই আগ্রাসী শট খেলতে পিছপা নন তিনি। উইকেটের চারপাশে যেমন খেলতে পারেন, হাওয়ায় ভাসিয়ে শট খেলতে ভয়ডর কাজ করে না, তেমনি যে কোনো বোলারের সামনে দুঃসাহসী হতেও পিছপা হন না।

তার ব্যাটিংয়ের এই ধরন নজর কেড়েছে নির্বাচকদের। গত বছর ঢাকা লিগের পরই তাকে হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) স্কোয়াডে জায়গা দেওয়া হয়েছিল। বিপিএলের পারফরম্যান্সে খুলে গেল জাতীয় দলের দুয়ার। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফেফার ডটকমকে বললেন, দ্রুত রান তোলার সামর্থ্যের কারণেই মুনিমের দিকে দৃষ্টি ছিল তাদের।

“অনেক দিন থেকেই আমাদের নজরে ছিল। এইচপিতে এক বছর ধরে নার্সিং করেছি। আমাদের এইচপির ক্রিকেটার ও। ওখান থেকে প্রমোট করেছি। বিপিএলে যথেষ্ট ভালো খেলেছে। ধারাবাহিক একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে। টপ অর্ডারে দ্রুত রান তুলতে পারবে বলে আশা রাখি আমরা।”

তবে নির্বাচকদের এই আশা লাগামহীন নয়। বাংলাদেশের মতো জায়গায় ভিন্ন কোনো নতুন প্রতিভা পাওয়া মানেই নতুন আশার জোয়ার। প্রত্যাশার চাপও তাই থাকে প্রবল। মুনিমকে সেটি থেকে আড়াল করতে চান নির্বাচকরা। ঘরোয়া ক্রিকেটেও এখন যথেষ্ট অনভিজ্ঞ তিনি। লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ১৩টি, টি-টোয়েন্টি ২১টি।

তাই মুনিম এসেই পারফর্ম করতে থাকবেন, টপ অর্ডারের চিত্র বদলে দেবেন, সেই আশা নেই নির্বাচকদেরও। বরং সময় নিয়ে সতর্কতায় তাকে থিতু করতে চান প্রধান নির্বাচক।

“এখনই বলা মুশকিল (তিনি কতটা প্রস্তুত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেরর জন্য)। আস্তে আস্তে প্রতিষ্ঠিত করব ওকে। এখনই ওর ওপরে চাপ দেওয়াটা ঠিক হবে না।”