‘তুই পারবি, ম্যাচ জিতিয়ে দিবি’, শহিদুলকে বলেছিলেন ইমরুল

৬ বলে প্রয়োজন তখন ১০ রান। শেষ ওভারটি করার জন্য শহিদুল ইসলামের হাতে শুধু বল নয়, নিজেদের স্বপ্নটাও সঁপে দিয়েছিলেন ইমরুল কায়েস। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স অধিনায়ক তার পেসারকে প্রেরণা জুগিয়ে বলেছিলেন, নায়ক হওয়ার এই তো সুযোগ! শহিদুল পেরেছেন। কুমিল্লার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ইমরুলের মুখেও তাই চওড়া হাসি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2022, 04:40 AM
Updated : 19 Feb 2022, 04:40 AM

বিপিএল ফাইনালে শুক্রবার উত্তেজনাময় শেষ ধাপে দৃশ্যপটে আসেন শহিদুল। ফরচুন বরিশালের জন্য জয় যখন মনে হচ্ছিল স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা, তখন কুমিল্লার সুনিল নারাইন ও মুস্তাফিজুর রহমানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে আবার জমে ওঠে ম্যাচ। ১৮ বলে ১৮ রান থেকে সমীকরণ হয়ে যায় শেষ ওভারে ১০ রান।

সেই মহাগুরুত্বপূর্ণ ওভারটি করার গুরুদায়িত্ব পড়ে শহিদুলের ওপর। তার বলে গতি খুব একটা নেই। তেমন কারুকাজও নেই। শেষ ওভারে এমন বোলারকে আনাটা কিছুটা ঝুঁকিরই। ওই ওভারের আগে ৩ ওভারে ২৮ রান দিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।

মূলত লাইন-লেংথ আর ব্যাটসম্যান বুঝে বল করেন তিনি। শেষ ওভারে সেই কাজটিই ঠিকঠাক করে তিনি আটকে রাখেন প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের। একটি ওয়াইড দিলেও ওভারে দেন ৮ রান। ১ রানে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় কুমিল্লা।

ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে ইমরুল বললেন, শহিদুলের ওপর ভরসা করেই বোলিংয়ে এনেছিলেন তিনি।

“শহিদুলকে একটা কথাই বলেছিলাম যে, মানুষের জীবনে নায়ক হওয়ার সুযোগ সবসময় আসে না। আমি ওকে বলেছিলাম , ‘তুই পারবি, আমি বিদেশিদের ওপর আস্থা রাখতে চাই না। তুই ম্যাচ জিতিয়ে দিবি।’ ওকে যেভাবে বলা হয়েছিল, ঠিক ওইভাবেই বল করেছে। আমারও তাই মাঠ সাজাতে সুবিধা হয়েছে।”

ফিল্ডিংয়ের ভুলে অবশ্য বড় বিপদের শঙ্কায় পড়েছিল কুমিল্লা। শেষ ওভারে প্রথম ৪ বলে কেবল ৫ রান দেন শহিদুল। পঞ্চম বলটি আকাশে তুলে দেন বরিশালের ব্যাটসম্যান তৌহিদ হৃদয়। কিন্তু সহজ ক্যাচ মুঠোয় জমাতে ব্যর্থ হন ফিল্ডার তানভির ইসলাম। উল্টো রান হয় দুটি। ইমরুলকে তখন দেখা যায়, হতাশায় দুহাতে মুখ ঢেকে ফেলতে।

ম্যাচের পর কুমিল্লা অধিনায়ক বললেন, ক্যাচ ফসকানোর পর ম্যাচ ফসকে যাওয়ার শঙ্কা কিছুটা পেয়ে বসেছিল তাকে। তবে শেষ বলটি নিখুঁতভাবে করে সেই শঙ্কা দূর করেন বোলার।

“ওই পরিস্থিতিতে ক্যাচ মিস হলে তো ভেতরে নেতিবাচক চিন্তা কাজ করেই। ১ বলে ৮ রান হলে সেটা ভিন্ন ব্যাপার। কিন্তু ১ বলে ৩ রান মানে খেলা বের হয়ে যেতে পারে। আমি একটু আপসেট হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু শেষ ডেলিভারি সে খুব ভালো জায়গা করেছে, এজন্য সম্ভব হয়েছে।”

“আমি বলেছিলাম যে অফ স্টাম্পের বাইরে ফিল্ডার রাখছি, পয়েন্ট ছিল, সুইপার (কাভার) ছিল। বলেছিলাম ওয়াইড ইয়র্কার করতে। এরপর চার মারুক বা ছক্কা, সমস্যা নেই। কিন্তু বলটা যেন জায়গায় থাকে। ওটাই করেছে সে।”

শেষ বলে তিন রানের সমীকরণে ফুল লেংথ বল কাভারে পাঠিয়ে স্রেফ ১ রান নিতে পারেন হৃদয়। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়ে শহিদুল হয়ে ওঠেন শেষের নায়ক।