কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে বুধবার প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৬ উইকেটের জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল ভারত। সফরকারীদের ১৫৭ রান তারা পেরিয়ে যায় ৭ বল বাকি থাকতে।
৮ রানে জীবন পেয়ে পুরান খেলেন ৬১ রানের ইনিংস। ৪৩ বলের ইনিংসে তার ৫ ছক্কার সঙ্গে চার ৪টি। তবে বাকিদের ব্যর্থতায় কলকাতার ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে যথেষ্ট বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি ক্যারিবিয়ানরা।
ফিল্ডিংয়ের ওই একটি কাণ্ড ছাড়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকটা দারুণভাবে রাঙালেন বিষ্ণই। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা ২১ বছর বয়সী এই তরুণই।
শেষের মতো ম্যাচের শুরুটাও ভালো হয় ভারতের। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ক্যারিবিয়ানরা পঞ্চম বলেই উইকেট হারায়। ভুবনেশ্বর কুমারকে চার মেরে রানের খাতা খোলা ব্র্যান্ডন কিং ফেরেন পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে।
শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে টানেন কাইল মেয়ার্স ও পুরান। পাওয়ার প্লেতে তাদের দৃঢ়তায় আর উইকেট হারায়নি ক্যারিবিয়ানরা। এই সময়ে তোলে ৪৪ রান।
জুটিতে অগ্রণী ছিলেন মেয়ার্স। মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই দিপক চাহারকে বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। ওই ওভারে তার ব্যাট থেকে আসে আরেকটি চার। পরে তিনি ভুবনেশ্বর ও হার্শাল প্যাটেলকে মারেন দুটি করে চার।
আইপিএল ইতিহাসে নিলামে সবচেয়ে দামি ভারতীয় বোলার চাহারকে ছক্কায় উড়িয়ে প্রথম বাউন্ডারির দেখা পান পুরান। সপ্তম ওভারে যুজবেন্দ্র চেহেলের বলে একইসঙ্গে ওই জীবন ও ছক্কা পান তিনি। বিষ্ণইয়ের অমন ফিল্ডিংয়ে অধিনায়ক রোহিতের চোখে-মুখে ফুটে ওঠে হতাশা।
চেহেলের ওই ওভারেই এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন ৭ চারে ৩১ রান করা মেয়ার্স। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওপেনার।
অধিনায়কের মুখে পরে ঠিকই আনন্দের হাসি এনে দেন বিষ্ণই। চার বলের মধ্যে এই লেগ স্পিনার ধরেন জোড়া শিকার। রোস্টন চেইসকে এলবিডব্লিউর পর ফেরান রভম্যান পাওয়েলকে।
৩৮ বলে ফিফটি স্পর্শ করে ৬১ রান করে ফেরেন পুরান। গোড়ালির চোট কাটিয়ে দলে ফেরা অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড অপরাজিত থাকেন ২৪ রানে।
রান তাড়ায় ভারতকে দারুণ শুরু এনে দেন রোহিত ও ইশান কিষান। রোমারিও শেফার্ডকে ছক্কায় ওড়ানোর পর ওডিন স্মিথকে ওভারে দুটি করে ছক্কা-চার মারেন রোহিত।
আকিল হোসেনের বলে কিষান হাঁকান দুই চার, একটি মারেন রোহিত। পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৮ রান তোলে ভারত।
দুই ওপেনারকেই থামান চেইস। ১৯ বলে ৩ ছক্কা ও ৪ চারে ৪০ রান করে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন রোহিত। আর কিষান করেন ৪ চারে ৩৫।
শক্ত ভিতে দাঁড়াতে পারেননি বিরাট কোহলি। দ্রুত ফিরে যান রিশাভ পান্তও। তবে সূর্যকুমার যাদব ও ভেঙ্কাটেশ আইয়ারের জুটিতে জয় নিয়ে ভাবতে হয়নি ভারতকে। শেষে ছক্কায় জয় নিশ্চিত করেন ভেঙ্কাটেশ।
১৮ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় ৩৪ রান করে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন সূর্যকুমার। এক ছক্কা ৩ চারে ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন ভেঙ্কাটেশ।
আগামী শুক্রবার সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৫৭/৭ (কিং ৪, মেয়ার্স ৩১, পুরান ৬১, চেইস ৪, পাওয়েল ২, আকিল ১০, পোলার্ড ২৪*, স্মিথ ৪; ভুবনেশ্বর ৪-০-৩১-১, চাহার ৩-০-২৮-১, হার্শাল ৪-০-৩৭-২, চেহেল ৪-০-৩৪-১, বিষ্ণই ৪-০-১৭-২, ভেঙ্কাটেশ ১-০-৪-০)
ভারত: ১৮.৫ ওভারে ১৬২/৪ (রোহিত ৪০, কিষান ৩৫, কোহলি ১৭, পান্ত ৮, সূর্যকুমার ৩৪*, ভেঙ্কাটেশ ২৪*; কটরেল ৪-০-৩৫-১, শেফার্ড ৩-০-২৪-০, স্মিথ ২-০-৩১-০, আকিল ৪-০-৩৪-০, চেইস ৪-০-১৪-২, অ্যালেন ১.৫-০-২৩-১)
ফল: ভারত ৬ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে স্বাগতিকরা
ম্যান অব দা ম্যাচ: রবি বিষ্ণই