এই ম্যাচের আগেও এবারের আসরে ম্যাচ জেতানো একটি ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন নারাইন। সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে সিলেটে ছয়ে নেমে শেষ দিকে তার ১২ বলে ২৪ রানের অপরাজিত ইনিংসে জিতে যায় কুমিল্লা। অন্য ইনিংসগুলোয় প্রভাব খুব একটা রাখতে পারেননি ব্যাট হাতে।
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বুধবার তিনি ব্যাট হাতে নামলেন ইনিংস সূচনায়। সামনে তখন ১৪৯ রানের লক্ষ্য। খুব কঠিন কিছু নয়। কিন্তু মাঝারি রানের ক্ষেত্রে শুরুটা ভালো না হলে অনেক সময়ই কাজটা হয়ে পড়ে কঠিন। বিশেষ করে, শুরুতে ধীরস্থির ব্যাটিংয়ের পথ বেছে নিয়ে বিপদে পড়ার নজির আছে অনেক।
নারাইন এবার সেটির কোনো সুযোগই রাখেননি। রান তাড়ার প্রথম বলেই লিটন দাসকে হারায় কুমিল্লা। কিন্তু ওই ওভার থেকে নারাইনের ব্যাটে যে রানের জোয়ার শুরু হয়, তাতে ভেসে যায় সব শঙ্কা। মাত্র ১৩ বলে পৌঁছে যান পঞ্চাশে, বিপিএলে যা দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। সবচেয়ে কম বলে ফিফটির বিশ্বরেকর্ড ছুঁতে পারেননি স্রেফ ১ বলের জন্য।
১৬ বলে ৫৭ রানের ইনিংসে চার ৫টি, ছক্কা ৬টি। দৌড়ে নেন কেবল একটি সিঙ্গেল। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই শেষ তার ইনিংস। তবে ততক্ষণে শেষ ম্যাচের উত্তেজনা আর প্রতিপক্ষের সম্ভাবনাও। পরে অনায়াস জয়ে কুমিল্লা পা রাখে ফাইনালে।
ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিয়ে নারাইন বললেন, ইনিংস শুরু করার সুযোগ পেয়ে খুশির স্রোত বয়ে যায় তার ভেতরে।
“আমাকে যখন বলা হলো, আমি দারুণ খুশি হয়েছিলাম। কারণ মাত্র ২ জন ফিল্ডার বাইরে থাকে। একবার শুরুটা ভালো করতে পারলে এরপর ভালো লাগে।”
“উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ ভালো। খুব বেশি স্পিন ধরেনি। বিশেষ করে, দিনের বেলার চেয়ে রাতের বেলায় বল ব্যাটে আসে তুলনামূলক বেশি ভালোভাবে।”
কুমিল্লা অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ম্যাচ শেষে জানালেন, বিশেষ পরিকল্পনা থেকেই নারাইনকে এ দিন পাঠানো হয়েছিল ওপেনিংয়ে।
“আমাদের বোলিং টুর্নামেন্টজুড়েই দারুণ হচ্ছে। বোলাররা খুব ভালো করছে। কিন্তু গত ম্যাচে আমরা পাওয়ার প্লের উপযুক্ত ব্যবহার করতে পারিনি। আজকে তাই একটা পরিকল্পনা ছিল। আমাদের মনে হয়েছে, আজকে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে হবে। এজন্যই সুনিলকে ওপেনিংয়ে পাঠানো হয় এবং সে এই কাজটিই করে দেয়।”
নারাইনের রেকর্ড গড়া ইনিংসটা পরে খুব বড় হয়নি। দলের জয় সঙ্গে নিয়ে ফিরতে পারেননি। তবে তার কাছে দলের যে চাওয়া ছিল, তা পূরণ করেছেন পুরোপুরি। দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরেই তাই তিনি উচ্ছ্বসিত।
“সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জয়। এটিই সবকিছুর ওপরে। এরকম পারফরম্যান্সের দিনে জয়ী হতে পারাটাই আসল ব্যাপার। ফাইনালে উঠতে পারাটা দারুণ।”