ক্যানবেরায় মঙ্গলবার সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার জয় ৬ উইকেটে। শ্রীলঙ্কার দেওয়া ১২২ রানের লক্ষ্য তারা ছুঁয়ে ফেলেছে ১৯ বল বাকি থাকতেই।
পাঁচ ম্যাচের সিরিজে টানা তিনটি জিতল অ্যারন ফিঞ্চের দল।
লঙ্কানদের অল্পতে আটকে রাখার নায়ক রিচার্ডসন। ৪ ওভারে স্রেফ ২১ রান দিয়ে এই পেসার নেন তিন উইকেট, জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। গত ম্যাচে ৪৪ রান দিয়েছিলেন তিনি।
এদিনের ম্যাচটির আগে বড় ধাক্কা খায় শ্রীলঙ্কা। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ছিটকে যান ভানিন্দু হাসারাঙ্গা। অস্ট্রেলিয়া আগের ম্যাচের দল থেকে আনে তিন পরিবর্তন। দলে ফেরেন মিচেল স্টার্ক, অ্যাশটন অ্যাগার, ড্যানিয়েল স্যামস।
স্টার্কের দুর্দান্ত এক ইনসুইং ইয়র্কারে শুরু হয় ম্যাচ। কোনো মতে বেঁচে যান পাথুম নিসানকা। তিনি আরও কিছুক্ষণ উইকেটে টিকতে পারলেও টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডারের বাকিরা ছিলেন ব্যর্থ।
তৃতীয় ওভারে আক্রমণে এসেই নিরীহ এক বলে দানুশকা গুনাথিলাকার উইকেট পেয়ে যান রিচার্ডসন। তার লেগ সাইডের বল স্কুপ করে ঠিকমতো ব্যাট-বলে করতে পারেননি গুনাথিলাকা। ধরা পড়েন শর্ট ফাইন লেগে।
ছক্কায় রানের খাতা খোলা চারিথ আসালাঙ্কাকে পরের বলেই ফিরিয়ে দেন রিচার্ডসন। টিকতে পারেননি দলে ফেরা কুসল মেন্ডিসও। এক প্রান্তে লড়াই চালানো নিসানকা আউট হন ম্যাক্সওয়েলের বলে। আগের ম্যাচেই ৭৩ রানের ইনিংস খেলা লঙ্কান ওপেনারকে বাউন্ডারিতে দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফেরান স্যামস।
অষ্টম ওভারে ৪০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দলকে কিছুক্ষণ টানেন দিনেশ চান্দিমাল ও দাসুন শানাকা। ধরে খেলে ৫৩ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন দুইজন।
তাদের প্রতিরোধ ভাঙে চান্দিমালের বিদায়ে। রিচার্ডসনের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি ২৫ রান করে। শানাকা ৫ চারে ৩৯ রান করেন।
রান তাড়ায় প্রথম বলেই উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। মাহিশ থিকশানার বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বেন ম্যাকডারমট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো ওপেন করতে নেমে অ্যাগার ফেরেন একটি করে ছক্কা-চারে ১৩ রান করে। তাকে এলবিডব্লিউর রিভিউ নিয়ে ফেরায় শ্রীলঙ্কা।
দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়া অস্ট্রেলিয়াকে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নেন ফিঞ্চ ও ম্যাক্সওয়েল। দুইজনে গড়েন ৫০ রানের জুটি।
রানের খাতা খোলার আগেই অবশ্য ফিরতে পারতেন ম্যাক্সওয়েল। থিকশানার বল কাট শট খেলে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি। বল মুঠোয় জমাতে পারেননি আসালাঙ্কা। ম্যাক্সওয়েল এরপর ৯ রানে জীবন পান আবার। মিড অফে ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্যাচ নিতে পারেননি গুনাথিলাকা।
ব্যক্তিগত ২২ রানের মাথায় আবারও বেঁচে যান ম্যাক্সওয়েল, কাভারে ক্যাচ ধরতে পারেননি শানাকা। পরে অবশ্য আর ইনিংস বড় করতে পারেননি ম্যাক্সওয়েল। থিকশানাকে স্লগ সুইপ করে ধরা পড়েন বাউন্ডারিতে। শেষ হয় তার ২৬ বলে ২ ছক্কা ও ৩ চারে সাজানো ৩৯ রানের ইনিংসটি।
তবে জয় নিয়ে তেমন ভাবতে হয়নি অস্ট্রেলিয়াকে। দলকে লক্ষ্যের কাছে পৌঁছে দিয়ে ফিরে যান ফিঞ্চ। ওপেনিংয়ে আগের ম্যাচগুলোতে তেমন সুবিধে করতে না পেরে তিনে নেমে ৩ চারে ৩৫ রান করেন তিনি।
বাকি কাজ অনায়াসে সেরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন জশ ইংলিস ও মার্কাস স্টয়নিস।
আগামী শুক্রবার সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১২১/৬ (নিসানকা ১৬, গুনাথিলাকা ৯, আসালাঙ্কা ৬, মেন্ডিস ৪, চান্দিমাল ২৫, শানাকা ৩৯*, করুনারত্নে ৮, চামিরা ৫*; স্টার্ক ৪-০-৩০-০, হেইজেলউড ৪-০-৩১-১, রিচার্ডসন ৪-০-২১-৩, স্যামস ৩-০-১৮-০, অ্যাগার ৪-০-১৪-১, ম্যাক্সওয়েল ১-০-৩-১)
অস্ট্রেলিয়া:১৬.৫ ওভারে ১২৪/৪ (ম্যাকডারমট ০, অ্যাগার ১৩, ফিঞ্চ ৩৫, ম্যাক্সওয়েল ৩৯, ইংলিস ২১*, স্টয়নিস ১২*; থিকশানা ৪-০-২৪-৩, থুশারা ১.১-০-১০-০, করুনারত্নে ২.৫-০-২২-০, চামিরা ৪-০-২২-০, ভ্যান্ডারসে ৪-০-৩২-১, শানাকা ০.৫-০-১১-০)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৩-০ তে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া
ম্যান অব দা ম্যাচ: কেন রিচার্ডসন