‘খারাপের একটা সীমা থাকে’, শেষ ১০ ওভারের বোলিং নিয়ে মুশফিক

দুইশর কাছাকাছি রান তাড়ায় প্রায় শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে ছিল খুলনা। শেষ পর্যন্ত অল্পের জন্য হেরে যাওয়ার পর ব্যাটিং নয়, মুশফিকুর রহিম হারের জন্য কাঠগড়ায় তুললেন বোলারদের। বিশেষ করে শেষ ১০ ওভারে তাদের অকাতরে রান বিলিয়ে দেওয়ার ব্যাপারটি মানতেই পারছেন না খুলনার অধিনায়ক।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Feb 2022, 02:04 PM
Updated : 14 Feb 2022, 02:24 PM

বিপিএলের এলিমিনেটর ম্যাচে সোমবার চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ৭ রানে হারে প্রিমিয়ার ব্যাংক খুলনা টাইগার্স। ১৯০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দলটি যেতে পারে ১৮২ পর্যন্ত।

অথচ মিরপুর শের-ই-বাংলায় ম্যাচের শুরুটা তাদের হয়েছিল দারুণ। এমনিতে চট্টগ্রাম এই ম্যাচে পায়নি টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত ধারাবাহিকতায় তাদের এই পর্যায়ে নিয়ে আসার মূল নায়ক উইল জ্যাকসকে।

প্রথম ওভারে একটি করে চার-ছক্কা হজম করলেও শেষ বলে জাকির হাসানকে ফিরিয়ে দেন পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ। একাদশে ফেরা আরেক পেসার রুয়েল মিয়া তৃতীয় ওভারে বিদায় করেন আফিফ হোসেনকে। ১৬ রানে দুই ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে তখন চাপে চট্টগ্রাম।

দলকে কিছুটা টেনে নিয়ে নবম ওভারে ফিরে যান কেনার লুইসও। পরের ওভারে আউট হয়ে যান শামীম হোসেন। ১০ ওভার শেষে চট্টগ্রামের রান ছিল ৪ উইকেটে ৬৬।

সেখান থেকে চাডউইক ওয়ালটনের বিধ্বংসী ব্যাটিং আর মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে তার দারুণ জুটিতে পরের ১০ ওভারে চট্টগ্রাম তোলে ১২৩ রান, উইকেট হারায় স্রেফ একটি। টানা চার বলে চারটি করে বাউন্ডারি হজম করেন খুলনার দুই বোলার। ৪৪ বলে অপরাজিত ৮৯ রানের ইনিংস খেলেন ওয়ালটন।

ম্যাচ শেষে বোলিং নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান মুশফিক। তার মতে, শেষ ১০ ওভারের বোলিংয়েই মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছেন তারা।

“আমাদের সুযোগ ছিল খুবই ভালো করার। কারণ, ১০ ওভারে ৬০ রানে ওদের ওপরের দিকের ৩ উইকেট পড়ে গেছে (৬৬ রানে ৪ উইকেট)। সেখান থেকে যে কোনো দলের বিপক্ষে, যেই থাকুক না কেন ক্রিজে, শেষ ১০ ওভারে ১৩০ (১২৩) রান দেবেন, এটা আসলে মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। উইকেট যতই ভালো হোক, আমি মনে করি আমাদের যে পরিকল্পনা ছিল, সেটার ১০ শতাংশও বোলাররা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।”

“ভালোর একটা সীমা আছে, খারাপের একটা সীমা থাকে। ওই সীমাটা যদি আমরা কমিয়ে আনতে পারতাম, তাহলে হয়তো ১৭০, এমনকি ১৮০ রানও ভিন্ন ব্যাপার হতো। আপনারা সেটাই দেখলেন, আমরা ৫-৬ রানে হেরে গেলাম। এমনি ১-২ রানে অনেক ম্যাচ হেরে যায় টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে, আর সেখানে তো...আমি মনে করি, ওই জায়গাতে খেলাটা ওরা সহজেই বের নিয়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করেছি, কিন্তু বোলারদের হয়তো দায়িত্বটা আমি সেভাবে দিতে পারিনি এবং তারাও সেটা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।”

রান তাড়ায় বাজে শুরুর পর খুলনাকে লড়াইয়ে ফেরায় আন্দ্রে ফ্লেচার ও মুশফিকের জুটি। শেষ দিকে ইয়াসির আলির ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ম্যাচ অনেকটাই নাগালে নিয়ে আসে খুলনা। ১১ বলে প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। ইয়াসির ততক্ষণে হয়ে উঠেছেন বিধ্বংসী, ফ্লেচার পঞ্চাশ ছুঁয়ে খেলছেন। কিন্তু ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে আউট হয়ে যান ইয়াসির। খুলনাও হারিয়ে ফেলে পথ। শেষ ওভারে ১৬ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি মিরাজের দারুণ বোলিংয়ে।

মুশফিক ঘুরে-ফিরে আবারও বললেন সেই বোলিংয়ের কথাই। বোলাররা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি বলে মনে করেন তিনি।

“টার্নিং পয়েন্ট...যেটা বললাম, শেষ ১০ ওভারে আমরা ১৩০ রান (১২৩) দিয়েছি। পরিকল্পনা যদি ইয়র্কার থাকে, সেটা যদি বাস্তবায়ন করতে না পারেন, সেটা যদি ফুল টস বা নিচু ফুল টস হয়ে যায়, একটা সেট ব্যাটসম্যান বাউন্ডারি মারবেই। স্লোয়ারের একটা পরিকল্পনা থাকে, সেটা যদি স্লোয়ার হাফ ভলি হয়ে যায়, স্বাভাবিকভাবে যে কোনো ব্যাটসম্যান মারবেই। ওই ভারসাম‍্যটা আমাদের বোলাররা করতে পারেনি।”

“পুরো টুর্নামেন্ট নিয়ে যদি বলি, শেষ ম্যাচ কিংবা তার আগের ম্যাচ, সব ম্যাচেই আমাদের বোলিং ইউনিট যে আহামরি ভালো করেছে, আমি মনে করি না।”