দুই জন দুই ঘরানার ব্যাটসম্যান। মাহমুদুলকে মনে করা হয় বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটের জন্য বেশি উপযোগী। এর মধ্যে দেশের হয়ে টেস্ট অভিষেকও হয়ে গেছে তার। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্টে গত মাসে নিউ জিল্যান্ড সফরে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে খেলেন ৭৮ রানের লড়িয়ে ইনিংস।
সেই ম্যাচেই আঙুলে চোট পাওয়ার পর থেকে তিনি ছিলেন মাঠের বাইরে। মাঠে ফেরেন বিপিএল দিয়ে। টুর্নামেন্টে অভিষেকে সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে খেলেন ৩৫ বলে ৪৮ রানের চমৎকার ইনিংস।
সেই ইনিংসের পর মাহমুদুলকে নিয়ে মুগ্ধতার কথা জানান রোডস। পরেও তাকে হতাশ করেননি ২১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। মিনিস্টার ঢাকার বিপক্ষে খেলেন ৪৬ রানের ইনিংস, সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে করেন ৬৫। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে প্রাথমিক পর্বের সবশেষ ম্যাচেও পান রান।
কুমিল্লা দলে স্থানীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে এবারের বিপিএলে মাহমুদুলকেই সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল মনে হচ্ছে রোডসের। বরিশালের বিপক্ষে প্রথম কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হওয়ার আগের দিন রোববার এই ইংলিশ কোচ বলেন, নিজেকে আলাদা করে চিনিয়েছেন মাহমুদুল।
“যেভাবে নিজের স্ট্রাইক রেট সে উঁচুতে রাখতে পেরেছে, আমার মনে হয়, অনেককেই সে চমকে দিয়েছে। সে যেভাবে খেলেছে, প্রমাণ করেছে যে বড় মঞ্চে সে ভীত নয়। নিউ জিল্যান্ডে টেস্ট ম্যাচে সে ভালো করেছে, এবার বিপিএলেও। আমার মনে হয়, বড় মঞ্চ সে পছন্দ করে।”
“স্থানীয় তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে সে নিজেকে আলাদা ভাবেই তুলে ধরেছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে আমি খুব আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে থাকি। জয়ের (মাহমুদুল) মতো একজনকে উঠে আসতে দেখাটা তাই তৃপ্তির।”
আসরে ৮ ম্যাচে ৭ ইনিংসে এক ফিফটিতে মাহমুদুলের রান ২০৭। গড় ২৯.৫৭, স্ট্রাইক রেট ১২৩.৯৫। বয়সভিত্তিক থেকে ঘরোয়া ক্রিকেট, সব জায়গায় এতদিন মূলত বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটের জন্য বেশি উপযোগী ভাবা হেয়ছে তার ব্যাটিং। তিনি সংক্ষিপ্ত সংস্করণেও নিজের সামর্থ্য দেখিয়ে চলেছেন তিনি। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে তিনি ছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান স্কোরার। ১২ ইনিংসে ৪৩.৫৫ গড় ও ১২০-এর বেশি স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ৩৯২ রান।
টি-টোয়েন্টির জন্য যাকে আদর্শ ভাবা হয়, তাকে অবশ্য খুব একটা সুযোগ দিতে পারেনি কুমিল্লা। টি-টোয়েন্টিতে দেশের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান পারভেজ খেলতে পারেন কেবল এক ম্যাচ। সেটাও সেরা দুইয়ে থাকা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর। প্রাথমিক পর্বের শেষ ম্যাচে হয় তার বিপিএল অভিষেক। মেহেদি হাসানকে একটি ছক্কা মেরে শুরু করেছিলেন পারভেজ, কিন্তু এক বল পরই শরীরের খুব কাছের বল কাট করার চেষ্টায় ফেরেন বোল্ড হয়ে।
মাহমুদুলের সঙ্গেই ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী বাংলাদেশ দলে ছিলেন পারভেজ। ব্যাটিংয়ের ঘরানা যদিও আলাদা। পারভেজের দর্শনে আক্রমণই শেষ কথা।
২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে ৪১ বলে সেঞ্চুরি করে চমকে দেন তিনি। টুর্নামেন্টে ৯ ম্যাচে ২৯.১২ গড় ও ১৩০.৮৯ স্ট্রাইক রেটে ২৩৩ রান করেন ১৯ বছর বয়সী বাঁহাতি এই ওপেনার। গত বছর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে ১৪ ইনিংসে প্রায় ১২০ স্ট্রাইক রেটে করেন ৩৩০ রান।
বিপিএলে এবার কুমিল্লার তারকা সমৃদ্ধ দলে বাইরেই বসে থাকতে হয়েছে তাকে। তবে নেটে বাঁহাতি ওপেনারকে কাছ থেকেই দেখেছেন রোডস। সেই দেখা থেকেই তিনি জানালেন তার পর্যবেক্ষণ।
“আমার মনে হয়, ইমন (পারভেজ) খুব ভালো ক্রিকেটার। আমাদের দলে তিনজন বিদেশি অলরাউন্ডার আছে, যারা নিয়মিত খেলছে। তাদের সঙ্গে লিটন (দাস), জয় (মাহমুদুল) খেলছে। ইমনকে তাই একাদশে রাখা কঠিন। তবে অনেক সময় এখনও তার আছে। ভবিষ্যতের জন্য সে ভালো একজন।”