কোহলিকে এখনও কষ্ট দেয় যে হার

আইপিএলে খেলে ফেলেছেন দুইশর বেশি ম্যাচ। দেখেছেন অনেক চড়াই-উতরাই, পেয়েছেন বহু জয়ের আনন্দ বা হারের তেতো স্বাদ। দীর্ঘ এই পথচলায় একটা দিনের কথা ভুলতে পারেন না বিরাট কোহলি, একটি হার তাকে এখনও কষ্ট দেয়। ২০১৬ আসরের ফাইনাল, খুব কাছে গিয়েও যে অধরা শিরোপাটা জিততে পারেননি সেবার।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Feb 2022, 01:19 PM
Updated : 7 Feb 2022, 02:54 PM

পাঁচ বছর আগের ওই ফাইনালে কোহলির নেতৃত্বাধীন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর হেরেছিল স্রেফ ৮ রানে। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের দেওয়া ২০৯ রানের লক্ষ্যে তারা করতে পারে ২০০ রান।

ওই আসরটি দল হিসেবে দুর্দান্ত কেটেছিল ব্যাঙ্গালোরের। প্রতিযোগিতার প্লে-অফে তারা উঠেছিল পয়েন্ট টেবিলে দ্বিতীয় স্থানে থেকে। প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে গুজরাট লায়ন্সকে হারিয়ে তারা জায়গা করে নিয়েছিল ফাইনালে।

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে দলটি বেশ ভালোভাবে এগিয়েও গিয়েছিল। রান তাড়ায় ক্রিস গেইল ও কোহলির উদ্বোধনী জুটিতে ৯ ওভারেই তারা তুলে ফেলে ১০০ রান। তাদের সেই জুটি ভাঙে ১১৪ রানে। গেইল করেন ৮ ছক্কা ও ৪ চারে ৩৮ বলে ৭৬ আর কোহলির ব্যাট থেকে আসে ২ ছক্কা ও ৫ চারে ৩৫ বলে ৫৪।

ব্যাটিং লাইনআপে পরের দিকে ছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স, লোকেশ রাহুল, শেন ওয়াটসনদের মতো তারকারা। কিন্তু টিকতে পারেননি কেউ। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ২০০ রানে থেমে যায় ব্যাঙ্গালোর। প্রথম শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে হায়দরাবাদ। দলটির হয়ে আসর জুড়েই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেন বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমান। ১৭ উইকেট নিয়ে তিনি ছিলেন হায়দরাবাদের দ্বিতীয় ও টুর্নামেন্টের পঞ্চম সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি।

৪ সেঞ্চুরি ও ৭ ফিফটিতে ৯৭৩ রান নিয়ে ২০১৬ আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন কোহলি। ডি ভিলিয়ার্সের রান ছিল তৃতীয় সর্বোচ্চ ৬৮৭। ব্যাঙ্গালোরের দুই বোলার যুজবেন্দ্র চেহেল ২১ উইকেট নিয়ে আসরের দ্বিতীয় ও ২০ উইকেট নিয়ে ওয়াটসন ছিলেন তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি।

২০০৯ ও ২০১১ সালের আইপিএলেও ফাইনাল খেলেছিল ব্যাঙ্গালোর। কিন্তু প্রতিবারই তাদের শেষটা হয় হতাশার। দলটির পডকাস্টে কোহলি বলেন, সব ছাপিয়ে তাকে এখনও পীড়া দেয় ২০১৬ ফাইনাল।

“আমার মন বলে, সেই ম্যাচের (২০১৬ আইপিএল ফাইনাল) সবকিছু যেন ভাগ্যে লেখা ছিল। ফাইনালটি কীভাবে ব্যাঙ্গালোরেই হলো, আমরা ওই আসরে দুর্দান্ত খেললাম এবং ওই ম্যাচে কী অসাধারণ পারফরম্যান্স ছিল আমাদের, যেখানে ৯ ওভারে ১০০ রান হয়ে গিয়েছিল কোনো উইকেট না হারিয়ে। কোনো চ্যানেলে যদি ওই ম্যাচের হাইলাইট চলে তাহলে কেএল (রাহুল) এখনও একটা স্ক্রিনশট নিয়ে (পাঠিয়ে) বলে এখনও কষ্ট দেয় ওই হার। সত্যিই তাই।”

“জয় উদযাপনের জন্য আমরা যে আয়োজন করেছিলাম, সেখানে হতাশ মুখগুলো বসে ছিল। বিশাল বড় সেটআপ থাকলেও সেখানে কোনো মিউজিক চলল না। আমি বলব না, দিনটি আমাদের ছিল। ওই একটি ম্যাচ আমাকে ব্যথিত করে। আমাকে হতাশ করে। দিনশেষে অবশ্য আমি এটাকে ভাগ্য বলব না।”

আইপিএলের শুরুর আসর থেকে ব্যাঙ্গালোরের হয়ে এখন পর্যন্ত ২০৭ ম্যাচ খেলেছেন কোহলি। ২০১৩ সালে পান দলটির নেতৃত্ব। কিন্তু একবারও তিনি দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে পারেননি। গত সেপ্টেম্বরে ইতি টেনে দেন আইপিএলে ৮ বছরের অধিনায়কত্বের অধ্যায়।

২০২২ আসরের জন্য চলতি মাসেই হবে আইপিএলের মেগা নিলাম। অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজির পক্ষ থেকে নিলামে নাম দেওয়ার প্রস্তাব পাওয়ার কথা জানালেন কোহলি। কিন্তু ব্যাঙ্গালোরের দলটির প্রতি তার আনুগত্যের কথা মাথায় রেখে সেসব আমলে নেননি তিনি। দলটির হয়েই আগামী আসরে মাঠে দেখা যাবে তাকে।