অ্যান্টিগায় শনিবারের ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে পঞ্চমবারের মতো যুব বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে ভারত। পরদিন নিজেদের ওয়েবসাইটে টুর্নামেন্টের সেরা দল প্রকাশ করেছে আইসিসি।
ধারাভাষ্যকার, আইসিসি ম্যাচ রেফারি ও সাংবাদিকদের নিয়ে গড়া নির্বাচক প্যানেল সাজিয়েছে ১২ সদস্যের দল। যেখানে জায়গা পেয়েছেন আট দেশের ক্রিকেটাররা।
সর্বোচ্চ তিন জন আছেন চ্যাম্পিয়ন ভারত থেকে। রানার্সআপ ইংল্যান্ড আর পাকিস্তান থেকে দুই জন করে। একজন করে আছেন অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে।
দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের একজন পাকিস্তানের হাসিবউল্লাহ খান। ৬ ম্যাচে দুই সেঞ্চুরিতে ৩৮০ রান করে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার তিনি। দলের উইকেটকিপারও তিনিই, আটটি ক্যাচের পাশাপাশি স্টাম্পিং দুটি।
উদ্বোধনী জুটিতে তার সঙ্গী অস্ট্রেলিয়ার টিগ উইলি। একটি সেঞ্চুরিতে যৌথভাবে টুর্নামেন্টের চতুর্থ সর্বোচ্চ ২৭৮ রান তার। চার মেরেছেন তিনি ৩৯টি, আসরে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
তিন নম্বরে আছেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতা দক্ষিণ আফ্রিকার ডেওয়াল্ড ব্রেভিস। ব্যাটিংয়ের ধরনে এবি ডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে মিলের কারণে তিনি পরিচিতি পেয়ে গেছেন ‘বেবি এবি’ নামে। যুব বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে এক আসরে ৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। ১৮ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান ৬ ম্যাচে ৫০৬ রান করে ভেঙে দেন এক আসরে আগের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। ২০০৪ আসরে ৫০৫ রান করে রেকর্ড গড়েছিলেন ভারতের শিখর ধাওয়ান।
বল হাতে ৭টি উইকেটও নেন তিনি। গ্রুপ পর্বে উগান্ডার বিপক্ষে ১৮ রানে ২ উইকেট তার সেরা বোলিং।
শিরোপা জয়ী দলের অধিনায়ক ইয়াশ ধুল টুর্নামেন্ট সেরা দলেরও অধিনায়ক নির্বাচিত হয়েছেন। একটি সেঞ্চুরিতে আসরে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান করেছেন ২২৯ রান।
রানার্স-আপ ইংল্যান্ড দলের অধিনায়ক টম প্রেস্ট আছেন পাঁচ নম্বরে। ৬ ম্যাচে টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৯২ রান করেন তিনি। সেঞ্চুরি একটি।
অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ছয় নম্বরে জায়গা করে নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার দুনিথ ওয়াল্লালাগে। আসরে শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ ২৬৪ রান করেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনে তার ১৭ উইকেট আসরেরই সর্বোচ্চ। একমাত্র বোলার হিসেবে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেন দুইবার। তার নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কা আসর শেষ করে ষষ্ঠ হয়ে।
দলের আরেক অলরাউন্ডার ভারতের রাজ বাওয়া। ৩১ রানে ৫ উইকেট নেওয়ার পর ৩৫ রানের ইনিংস খেলে ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন তিনি। আসরে সব মিলিয়ে ২৫২ রানের পাশাপাশি বোলিংয়ে তিনি নেন ৯ উইকেট। উগান্ডার বিপক্ষে তার অপরাজিত ১৬২ রান টুর্নামেন্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর।
স্পিন বিভাগে আরেক জন ভারতের ভিকি অস্তওয়াল। বাঁহাতি এই স্পিনার ৬ ম্যাচে নেন ১২ উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫ উইকেট নেন ২৮ রান দিয়ে।
তিন পেসারের একজন বাংলাদেশের রিপন। ডানহাতি এই পেসার একটি বাদে বাংলাদেশের বাকি পাঁচ ম্যাচেই নেন উইকেট। কানাডা ও ভারতের বিপক্ষে নেন ৪ উইকেট করে। সব মিলিয়ে ৬ ম্যাচে তার প্রাপ্তি ১৪ উইকেট, যা আসরের তৃতীয় সর্বোচ্চ।
অন্য দুই পেসার হলেন যৌথভাবে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি পাকিস্তানের আওয়াইস আলি ও অস্ট্রেলিয়ার জশ বয়ডেন। দুজনই নেন ১৫ উইকেট করে। বয়ডেন ওভারপ্রতি রান দেন কেবল ৩.২১ করে আর গড় ৯.৮৬, দুটিই আসরে অন্তত ৭ উইকেট নেওয়া কোনো বোলারের সেরা।
দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে আছেন আফগানিস্তানের নুর আহমাদ। বাঁহাতি এই স্পিনিং অলরাউন্ডার আসরে দলের প্রতিটা ম্যাচেই নেন উইকেট। ৬ ম্যাচে তার শিকার ১০ উইকেট। ব্যাট হাতে করেন ৯৪ রান।
আসরে দুই সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২১৫ রান করা আরিফুল ইসলামের জায়গা হয়নি সেরা দলে।
যুব বিশ্বকাপের সেরা দল (ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী):
হাসিবউল্লাহ খান (উইকেটকিপার, পাকিস্তান), টিগ উইলি (অস্ট্রেলিয়া), ডেওয়াল্ড ব্রেভিস (দক্ষিণ আফ্রিকা), ইয়াশ ধুল (অধিনায়ক, ভারত), টম প্রেস্ট (ইংল্যান্ড), দুনিথ ওয়াল্লালাগে (শ্রীলঙ্কা), রাজ বাওয়া (ভারত), ভিকি অস্তওয়াল (ভারত), রিপন মন্ডল (বাংলাদেশ), আওয়াইস আলি (পাকিস্তান), জশ বয়ডেন (অস্ট্রেলিয়া), দ্বাদশ খেলোয়াড় নুর আহমাদ (আফগানিস্তান)