সিলেটের জামাই মইনের প্রথম সিলেট ভ্রমণ ও সিলেটি ভাষা শিক্ষা

সেই ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে প্রথমবার বাংলাদেশে পা রেখেছিলেন মইন আলি। এরপর এদেশে নানা সময়ে এসেছেন অনেকবার। এবারের অভিজ্ঞতা তার তবু অন্যরকম। যে শহরের সঙ্গে তার পারিবারিক বন্ধন, যে শহরের জামাই তিনি, সেই সিলেটে এলেন যে এবারই প্রথম! বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সে খেলতে আসা এই ইংলিশ অলরাউন্ডার তাই দারুণ রোমাঞ্চিত। কিছু সিলেটি শব্দ তার শেখা হয়ে গেছে, চেষ্টা করছেন আরও কিছু শেখার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকসিলেট থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2022, 09:35 AM
Updated : 6 Feb 2022, 10:12 AM

মইনের স্ত্রী ফিরোজা হোসেনের শেকড় এই শহরে। কুমিল্লার হয়ে রোববার যেখানে অনুশীলন করলেন মইন, সেই সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের দুই নম্বর গ্রাউন্ড থেকে স্রেফ কয়েক মিনিটের পথ পীর মহল্লা এলাকায় ফিরোজার পৈতৃক বাড়ি।

ফিরোজার জন্ম ও বেড়ে ওঠা অবশ্য ইংল্যান্ডে। সেখানেই মইনের সঙ্গে পরিচয় ও পরিণয়। বাবার সঙ্গে ফিরোজা বেশ কবার এসেছেন এই শহরে। তবে মইনের কখনও আসা হয়নি এবারের আগে।

এবার বিপিএল তৈরি করে দিয়েছে উপলক্ষ। ৯ বছর আগে একবার বিপিএলে খেলে গেছেন তিনি, সেবার খেলা হয়নি সিলেটে। ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে দুইবার বাংলাদেশে এলেও ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরে যাওয়া হয়নি। কিন্তু তার এবারের আসা গোটা পরিবারের জন্যই উৎসবের উপলক্ষ বয়ে এনেছে। অনুশীলন শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মইন বললেন, পারিবারিক পুনর্মিলনীও হয়ে যাচ্ছে এই সুযোগে।

“সিলেটে আমার এবারই প্রথম। ওরা আমাকে সবসময় বলত, ‘চলো সিলেটে যাই।’ কিন্তু সময় হয়ে ওঠেনি। এবার আসতে পেরে ভালো লাগছে। হতাশাজনক যে বাইরে যেতে পারছি না (জৈব-সুরক্ষা বলয়ের কারণে)। তবে এখানে এসে আমার ভালো লাগছে। আমার পরিবার এখানকার। খুবই খুশি আমি।”

“পরিবারের অনেকেই এসেছে। আমার স্ত্রী এখানে। তার বোনরা, আমরা শ্যালক, সবাই আছে। ওরা ঢাকায় আছে, দিন দুয়েকের মধ্যে সিলেটে আসবে সবাই।”

মইনের নিজের শেকড় পাকিস্তানে। তবে জন্ম-বেড়ে ওঠা তারও ইংল্যান্ডেই। তার দাদা ইংল্যান্ডে পাড়ি জমিয়েছিলেন পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরের মিরপুর থেকে।

নিজের দেশ, নিজের পিতৃপুরুষের দেশ আর স্ত্রীর পরিবারের দেশ, তিন দেশই মইনের হৃদয়ে বিশেষ জায়গা নিয়ে আছে।

“বাংলাদেশ আমার বাড়ি, পাকিস্তান-ইংল্যান্ড সবই আমার ঘর। আমার চোখে সব এক। আমার সব শ্বশুর বাড়ির আত্মীয়রা থাকে এখানে। অনেক শ্রদ্ধা আছে আমার।”

বাংলা ভাষার সঙ্গে খুব একটা পরিচয় মইনের নেই। তবে সিলেটি ভাষা তিনি কিছু রপ্ত করতে পেরেছেন। এবার সিলেটে এসে ব্যাট-বলের স্কিল ঝালাইয়ের পাশাপাশি সিলেটি ভাষায় নিজের দক্ষতাও আরেকটু সমৃদ্ধ করতে চান ৩৪ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।

“কয়েকটি সিলেটি শব্দ জানি আমি, এই তো। সত্যি বলতে, আরও বেশি জানতে পারলে ভালো লাগত। চেষ্টা করব আরও শিখতে। এখন হোটেলে লোকেরা আমার সঙ্গে সিলেটি কথা বলছে। চেষ্টা করছি শিখতে।”