সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে শনিবার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিজেই জানান ৫১ বছর বয়সী কেয়ার্নস।
“আমাকে গতকাল বলা হয়েছে যে, আমার অন্ত্রের ক্যান্সার হয়েছে…অনেক বড় ধাক্কা। একটা রুটিন চেকআপ হওয়ার কথা ছিল, সেখানে এমন কিছু আমার ভাবনায়ও ছিল না।”
“তাই সার্জন ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আবার কথা বলার আগে নিজেকে আমার দারুণ ভাগ্যবান মনে হচ্ছে যে, ক্যান্সারের প্রথম ধাপেই আমি এখানে আসতে পেরেছি… আমি কতটা ধন্য যে জীবনে এতকিছু করতে পেরেছি। এই সপ্তাহটিও একেবারে খারাপ কাটেনি, বাচ্চাদের সঙ্গে খেলাধুলা এবং বাড়িতে (ছেলে) নোয়াহর জন্মদিন উদযাপন করেছি।”
গত অগাস্টে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন কেয়ার্নস। এরপর তার হার্টে ধরা পরে সমস্যা। করাতে হয়ে অস্ত্রোপচার।
এর মাঝেই শিরদাঁড়ায় স্ট্রোকের পর অসাড় হয়ে যায় কেয়ার্নসের দুই পা। ইউনিভার্সিটি অব ক্যানবেরা হসপিটালে লম্বা সময় ধরে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে পার করেন তিনি।
সুস্থ হয়ে গত সপ্তাহে স্ত্রী-সন্তানদের কাছে ফেরার কথা নিজেই জানান কেয়ার্নস। সেই সময় ইনস্টাগ্রামে লিখেছিলেন, ১৪১ দিন পর ঘরে ফেরার কথা।
চেকআপ করাতে শুক্রবার আবার হাসপাতালে গিয়ে ক্যান্সারের দুঃসংবাদ পেলেন তিনি। কেয়ার্নস অবশ্য এ যাত্রায় দ্রুত সেরে ওঠার ব্যাপারে আশাবাদী।
“সামনে আরেকটি লড়াই, তবে আশা করছি এটা প্রথম রাউন্ডেই পেরিয়ে যাব।”
নিউ জিল্যান্ডের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন কেয়ার্নস। আগ্রাসী ব্যাটিং ও দুর্দান্ত পেস বোলিং দিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট রাঙিয়েছেন এক যুগের বেশি সময়। ৬২ টেস্টে ৫ সেঞ্চুরিতে তার রান ৩ হাজার ৩২০, উইকেট ২১৮টি। ওয়ানডে ২১৫টি খেলে রান ৪ হাজার ৯৫০, উইকেট ২০১টি।
নিউ জিল্যান্ডের প্রথম আইসিসি শিরোপা জয়ের নায়ক ঝাঁকড়া চুলের এই অলরাউন্ডার। ২০০০ সালের নক আউট বিশ্বকাপের (এখনকার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি) ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে অপরাজিত সেঞ্চুরি করে জেতান দলকে।
ক্যারিয়ার শেষে তিনি ধারাভাষ্যকার ও বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেন টিভিতে। পরে ভারতের বিতর্কিত ক্রিকেট লিগ আইসিএলে তার বিরুদ্ধে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ ওঠে। এরপর ক্রমশ ক্রিকেট থেকে দূরে সরে যান তিনি। তার একসময়কার দুই সতীর্থ লু ভিনসেন্ট ও ব্রেন্ডন ম্যাককালাম অভিযোগ করেন, কেয়ার্নসের কাছ থেকে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ পেয়েছিলেন তারা। কেয়ার্নস অবশ্য বরাবরই এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
খেলোয়াড়ি জীবনে তাকে অনেক ভুগতে হয়েছে চোটের কারণে। অন্যথায় হয়তো আরও সমৃদ্ধ হতো ক্যারিয়ার। এখনও তার লড়াই অসুস্থতার সঙ্গে।
তার বাবা ল্যান্স কেয়ার্নসও ছিলেন দারুণ আগ্রাসী পেস বোলিং অলরাউন্ডার। নিউ জিল্যান্ডের হয়ে তিনি খেলেছেন ৪৩ টেস্ট ও ৭৮ ওয়ানডে।