অ্যাশেজের বিপর্যয়ে এবার সিলভারউডের বিদায়

লাল বলের ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরে সময়টা খারাপ যাচ্ছে ইংল্যান্ডের। সম্প্রতি শেষ হওয়া অ্যাশেজে দল নাস্তানাবুদ হওয়ায় পরিস্থিতি হয় আরও খারাপ। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় কঠিন পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করলেন কোচ ক্রিস সিলভারউড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Feb 2022, 10:31 PM
Updated : 4 Feb 2022, 12:36 PM

ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের ওয়েবসাইটে বৃহস্পতিবার রাতে সিলভারউডের সরে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ায় গত মাসে শেষ হওয়া অ্যাশেজে ৪-০ ব্যবধানে হেরে যায় ইংল্যান্ড। সবশেষ ১৪ টেস্টে ইংল্যান্ডের জয় কেবল একটি। টানা ব্যর্থতার দায়ে বুধবার চাকরি হারান গত তিন বছর ইংল্যান্ড দলের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করা অ্যাশলে জাইলস।

২০১৯ সালে তিনিই প্রধান কোচ হিসেবে নিযোগ দিয়েছিলেন সিলভারউডকে। ইংল্যান্ডের হয়ে ছয়টি টেস্ট খেলা সাবেক এই পেসারকে বিদায়বেলায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসিবির প্রধান নির্বাহী টম হ্যারিসন।

“দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে দলকে সফল করতে ক্রিস তার সবটা দিয়েছে। সে খুবই সৎ একজন মানুষ, যার সঙ্গে খেলোয়াড় ও অন্যান্য স্টাফ কাজ করাটা উপভোগ করেছে।” 

বিদায়টা সুখকর না হলেও, সিলভারউডের কণ্ঠেও শোনা যায় একই কথা।

“ইংল্যান্ড জাতীয় দলের প্রধান কোচ হওয়াটা অনেক বড় সম্মানের এবং আমাদের খেলোয়াড় ও স্টাফদের সঙ্গে কাজ করে আমি খুব গর্বিত। দারুণ সব স্মৃতি নিয়ে আমি চলে যাচ্ছি। এখন আমি পরিবারের সঙ্গে ভালো কিছু সময় কাটাব এবং জীবনের নতুন শুরু করব।”

২০১৯ সালে ওই সময়ের কোচ ট্রেভর বেলিসের হাত ধরে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতে ইংল্যান্ড। ওই মৌসুমের শেষে সাবেক এই অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার বিদায় নিলে তার উত্তরসূরি হিসেবে দায়িত্ব পান সিলভারউড।

১৯৯৯ সাল থেকে বেশিরভাগ সময় বিদেশি কোচের ওপরই ভরসা রেখেছে দেশটি। জাইলসের দেশীয় কোচ নিয়োগের সিদ্ধান্তেই মূলত দায়িত্ব পান সিলভারউড।

গত বছর এপ্রিলে সিলভারউডকে প্রধান নির্বাচকের দায়িত্বও দেন জাইলস। এতে করে ১৯৯০ দশকের রেমন্ড ইলিংওয়ার্থের পর ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ক্ষমতাধর কোচ হয়ে ওঠেন সিলভারউড।

তার দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক মাস পরই বিশ্বজুড়ে হানা দেয় কোভিড মহামারী। কোনো সিরিজ শুরুর আগে আইসোলেশন, কোয়ারেন্টিনে থাকাটা খেলোয়াড়দের জন্য হয়ে ওঠে নিত্য ঘটনা। সিরিজগুলোও চলে জৈব-সুরক্ষা বলয়ে। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে খেলোয়াড়দের যথেষ্ট বিশ্রাম দিতে ইংল্যান্ড চালু করে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলানোর নিয়ম। ২০২১ বছর জুড়েই নিয়মটা কার্যকর ছিল, যা নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়।

সিলভারউডের সময়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং দিনে দিনে আরও খারাপ হয়েছে। পুরো পাঁচ টেস্টের অ্যাশেজ সিরিজে একবারও তারা ৩০০ ছাড়াতে পারেনি। ১০ ইনিংসে তাদের সর্বোচ্চ স্কোর ২৯৪, সিডনির ওই ম্যাচেই একমাত্র হার এড়াতে পারে তারা।

অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ১-০ তে সিরিজ হারে ইংল্যান্ডে। শেষ হয় দেশের মাঠে তাদের সাত বছরের অজেয় যাত্রা। এরপর ভারতের বিপক্ষেও সিরিজে ২-১ এ পিছিয়ে পড়ে তারা, সিরিজের শেষ টেস্টটি কোভিডের কারনে স্থগিত হয়ে আছে।

সব মিলিয়ে ইংল্যান্ড কোচ হিসেবে সময়টা একেবারে ভালো যায়নি সিলভারউডের। অ্যাশেজে ধরাশায়ী হয়ে যার শেষটা হলো আরও খারাপ।

অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য জাইলসের ছেড়ে যাওয়া পদে কাজ করতে রাজি হয়েছেন সাবেক অধিনায়ক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস। আগামী মার্চের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের জন্য একজন অন্তর্বর্তীকালীন কোচ নিয়োগ দেবেন তিনি।