মুস্তাফিজের প্রথম, এবারের বিপিএলের প্রথম

টি-টোয়েন্টিতে পেস বোলিংয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নির্ভরতা মুস্তাফিজুর রহমান। বিপিএলেও রেকর্ড বেশ ভালো। অথচ এই টুর্নামেন্টে ৫ উইকেট তো দূরের কথা, ম্যাচে ৪ উইকেটও ছিল না তার। অবশেষে সেই অপূর্ণতা ঘোচালেন তিনি। এবারের বিপিএলকেও উপহার দিলেন একটি ‘প্রথম।’ 

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Feb 2022, 03:12 PM
Updated : 3 Feb 2022, 04:12 PM

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ২৭ রানে ৫ উইকেট নেন মুস্তাফিজ।

এই ম্যাচের আগে বিপিএলে ৪৩ ম্যাচ খেলে তার সেরা বোলিং ছিল ১০ রানে ৩ উইকেট।

মুস্তাফিজের অর্জনে এবারের বিপিএলের একটি শূন্যতাও মিটে গেল। এবারের আসরে প্রথমবার ৫ উইকেটের দেখা পেলেন কোনো বোলার।

বরাবরের মতো এবারের বিপিএলেও শুরু থেকে বেশ ভালো বোলিং করছিলেন মুস্তাফিজ। তবে প্রতিপক্ষ তাকে সাবধানে খেলার কারণে হোক বা নিজের বোলিংয়ের আগের ধার হারানোয় হোক, উইকেট খুব বেশি ধরা দিচ্ছিল না। আগের চার ম্যাচে তার শিকার ছিল ছয়টি।

চট্টগ্রামের বিপক্ষে এই ম্যাচে তার শুরুটা হয় ভীষণ বাজে। বল হাতে পান পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে। তার প্রথম ওভারেই দারুণ খেলে চার-ছক্কা মারেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান উইল জ্যাকস।

লম্বা সময় ধরে ওই ওভারই হয়ে থাকে তার একমাত্র ওভার। ত্রয়োদশ ওভারে বৃষ্টি নেমে খেলা বন্ধ থাকে এক ঘণ্টার বেশি। তথনও পর্যন্ত আর বোলিং পাননি মুস্তাফিজ।

বৃষ্টি-বিরতির পর খেলা শুরু হতেই মুস্তাফিজের ঝলকে বদলে যায় ম্যাচের চিত্র। তখনও পর্যন্ত দারুণ গতিতে ছুটকে থাকা চট্টগ্রামকে বলতে গেলে একাই দমিয়ে দেন তিনি।

দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে প্রথম ওভারেই তার শিকার থিতু হয়ে যাওয়া দুই ব্যাটসম্যান শামীম হোসেন ও উইল জ্যাকস। ২৬ রান করা শামীম স্ল্যাশ করে ধরা পড়েন পয়েন্ট সীমানায়। ফিল্ডার নাহিদুল ইসলামকে জায়গা থেকে নড়তে হয়নি একটুও। ৩৭ বলে ৫৭ করে জ্যাকস আউট হন ছক্কার চেষ্টায় লং অনে ক্যাচ দিয়ে।

খানিক পর আবার ছোট্ট বিরতি পড়ে স্ট্র্যাটেজিক টাইম আউটে। এরপর খেলা শুরু হতেই আবার তার ওভারে জোড়া উইকেট।

এই ওভারের প্রথম উইকেটটি তিনি হয়তো মনে রাখবেন অনেকদিন। চট্টগ্রাম অধিনায়ক নাঈম ইসলাম সজোরে স্ট্রেট ড্রাইভ করেন। গুলির বেগে আসা বল চোখের পলকে বাঁহাতে জমিয়ে ফেলেন ফলো থ্রুতে থাকা মুস্তাফিজ। অবিশ্বাস্য রিফ্লেক্স ক্যাচ!

ওই ওভারেই স্লোয়ার ডেলিভারিতে বিভ্রান্ত করে তিনি আউট করেন বিপজ্জনক বেনি হাওয়েলকে। বিপিএলে প্রথমবার স্বাদ পান ৪ উইকেটের।

পরের ওভারে নিজেকে এগিয়ে নেন আরেক ধাপ। মেহেদী হাসান মিরাজকে ফিরিয়ে পূর্ণ করেন ৫ উইকেট।

এ দিন খুব যে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন তিনি, এমন নয় মোটেও। তার কাটার, স্লোয়ার, ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের জন্য বল ভেতরে আনা কিংবা দারুণ সব স্কিলের পসরাও মেলে ধরেননি। এর চেয়েও ঢের ভালো বোলিং তিনি অনেক দিনই করেন। কিন্তু ক্রিকেটের ধরনই এমন, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে অনেক দিনই এরকম হয়, ভালো বোলিংয়েও মেলে না প্রত্যাশিত উইকেট। আবার, খুব ধারাল না হয়েও অনেক দিন ধরা দেয় একের পর এক শিকার।

বিপিএলে প্রথম হলেও টি-টোয়েন্টিতে মুস্তাফিজ ৫ উইকেট পেলেন তৃতীয়বার। এবারের আগে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে নিয়েছিলেন ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এছাড়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের হয়েও ৫ উইকেট নেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে। দুবারই ছিল ২২ রানে ৫ উইকেট।

২০ ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪ বার ৫ উইকেট সাকিব আল হাসানের। মুস্তাফিজ এখন এককভাবে দুইয়ে। ২ বার ৫ উইকেট নিয়ে তিনে আল আমিন হোসেন।