‘নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ায় অনেক রেকর্ড ভাঙতে পারবে কোহলি’

ক্রিকেটের অনেক রেকর্ডই নিজের করে নিয়েছেন বিরাট কোহলি। হাতছানি আছে আরও অনেক অর্জনের। নেতৃত্বের পালা সব চুকিয়ে এখন তিনি অনেকটাই নির্ভার। রিকি পন্টিংয়ের মতে, এটিই কোহলির জন্য হতে পারে আশীর্বাদ। অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তির মতে, আরও অনেক রেকর্ড ভাঙার পথে ছুটে চলা এখন সহজ ভারতীয় ব্যাটসম্যানের জন্য।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Jan 2022, 12:04 PM
Updated : 31 Jan 2022, 12:28 PM

গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে এই সংস্করণের নেতৃত্বকে বিদায় বলে দেন কোহলি। পরে তাকে ওয়ানডের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে সাদা বলের দুই সংস্করণেই রোহিত শর্মাকে করা হয় অধিনায়ক। গত ১৫ জানুয়ারি হুট করেই টেস্টের অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে বিস্ময়ের জন্ম দেন কোহলি।

কোহলির এই সিদ্ধান্তকে অবশ্য একদিক থেকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন পন্টিং। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুটি বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের মতে, এখন নিজের খেলায় পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারবেন কোহলি।

গত দুই বছর ধরে কোহলি খেলতে পারছেন না বড় ইনিংস। সবশেষ সেঞ্চুরিতে তিনি পা রেখেছেন ২০১৯ সালে, বাংলাদেশের বিপক্ষে। এরপর কেটে গেছে ৬৫ ইনিংস, যেখানে ২৩ বার পঞ্চাশ ছুঁয়ে একটিকেও নিতে পারেননি তিন অঙ্কে। ক্রিকেটে অনেক কীর্তির কারিগরের জন্য এমন খরা বেমানান বটে।

ওয়ানডে ক্রিকেটে রান তাড়ার রাজা কোহলি। এই সংস্করণে রান তাড়ায় সবচেয়ে বেশি ২৬ সেঞ্চুরি তার, ধারেকাছেও নেই কেউ। শচিন টেন্ডুলকারের আছে ১৭টি। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে পরে ব্যাট করে দলের জয়ে সর্বোচ্চ ২২ সেঞ্চুরির রেকর্ডও তার।

ওয়ানডেতে সবচেয়ে কম ইনিংস খেলে ৮ হাজার, ৯ হাজার, ১০ হাজার, ১১ হাজার ও ১২ হাজার রানের রেকর্ড কোহলির। ওয়ানডে ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৩ সেঞ্চুরি তার। টেন্ডুলকারের রেকর্ড ৪৯ সেঞ্চুরি থেকে স্রেফ ছয়টি দূরে তিনি।

এছাড়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৭০ সেঞ্চুরি কোহলির। ৭১ সেঞ্চুরি নিয়ে দুইয়ে থাকা পন্টিংকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে তার। সবচেয়ে বেশি ১০০ সেঞ্চুরির রেকর্ড টেন্ডুলকারের।

আরও অনেক অর্জন অপেক্ষমাণ কোহলির জন্য। আইসিসির রিভিউ শো-তে পন্টিং বলেন, নির্ভার হয়ে এখন কেবল সেগুলো ভাঙার পথে এগিয়ে যেতে পারবেন কোহলি। 

“এখন তার বয়স ৩৩ বছর এবং আমি নিশ্চিত সে আরও কয়েক বছর খেলা চালিয়ে যেতে চাইবে। কিছু রেকর্ড ভাঙবে, যেগুলো থেকে সে বেশি দূরে নয়। স্রেফ একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে এবং অধিনায়কত্বের বাড়তি দায়িত্ব ছাড়া কাজটি করা হয়তো তার জন্য কিছুটা সহজ হবে।”

অধিনায়ক হিসেবেও কোহলির অর্জন কম নেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেতা হিসেবে সবচেয়ে বেশি ৪১ সেঞ্চুরি করে যৌথভাবে পন্টিংয়ে সঙ্গে সবার উপরে তিনি। ৪০ জয় নিয়ে ভারতের সফলতম টেস্ট অধিনায়কও কোহলি। বিশ্ব ক্রিকেটেই তার চেয়ে বেশি টেস্ট জয়ী অধিনায়ক আছেন আর কেবল তিনজন। দেশের বাইরে তার ১৬ টেস্ট জয়ও ভারতের রেকর্ড। অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ জয়ী প্রথম এশিয়ান অধিনায়ক তিনি।

একটি জায়গায় ঘাটতি রয়েছে তার। আইসিসির কোনো ট্রফি জিততে পারেননি। তাই তার সাদা-বলের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেক। পন্টিংয়ের সঙ্গে সীমিত ওভারের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া নিয়ে কথাও বলেছিলেন কোহলি।

টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি সবসময়ই কোহলির ভালোবাসা তীব্র। সাদা পোশাকে দলের নেতৃত্ব চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন নিজেই। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকায় সবশেষ সফরে টেস্ট সিরিজ হারার পরদিন এই সংস্করণের দায়িত্ব ছেড়ে দেন তিনি। খবরটি পন্টিংকে বেশ অবাক করেছে।

“হ্যাঁ, এটা (কোহলির টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়া) আসলেই আমাকে বিস্মিত করেছে। সম্ভবত এই কারণে যে, গত আইপিএলের প্রথম পর্বে টুর্নামেন্ট স্থগিত হওয়ার আগে তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল।”

“সাদা-বলের ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার কথা এবং টেস্ট ম্যাচের নেতৃত্ব কতটা তীব্রভাবে চালিয়ে যেতে চায়, এসব বলেছিল তখন। এই দায়িত্ব ও পদটি সে খুব পছন্দ করত এবং লালন করত। তার নেতৃত্বে অবশ্যই ভারতীয় টেস্ট দল অনেক কিছু অর্জন করেছে। খবরটি শোনার পর আমি সত্যি, সত্যিই খুব অবাক হয়েছিলাম।”