মইনের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩৪ রানে হারাল ইংল্যান্ড। সিরিজে এখন ২-২ সমতা।
খর্বশক্তির দল নিয়ে সফরে যাওয়ার পর চোটের কারণে অধিনায়ক ওয়েন মর্গ্যানকে হারালেও দারুণ খেলে সিরিজের ফয়সালা রোবারের শেষ ম্যাচে নিয়ে গেল ইংলিশরা।
বারবাডোজে শনিবার ওপেনিংয়ে জেসন রয়ের ফিফটি ও পরে মইনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২০ ওভারে ইংল্যান্ড তোলে ১৯৩ রান। আগের ম্যাচে ২২৪ রানের পাহাড় গড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার পারেনি রান তাড়ায়য় জিততে। উইকেট মাত্র ৫টি হারালেও তারা যেতে পারে ১৫৯ রান পর্যন্ত।
৭ ছক্কায় ২৮ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেলার বল হাতে ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে ২ উইকেট মইনের। ম্যাচ সেরার লড়াইয়ে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না কেউ।
এই নিয়ে সিরিজে ইংল্যান্ডের দুই জয়ে দুটিতেই ম্যান অব দা ম্যাচ মইন। যে দুই ম্যাচে শূন্য রানে ফিরেছেন, দল হেরেছে দুটিতেই।
কেনসিংটন ওভালে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ডের শুরুটা স্বস্তিতে হয়নি। আগের ম্যাচে ঝড়ো ফিফটি করা ওপেনার টম ব্যান্টন বিদায় নেন দ্বিতীয় ওভারেই। ওই ওভারেই জেসন হোল্ডারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান জেসন রয়।
রয়ের শুরুটা ছিল মন্থর। ১৯ বলে তার ছিল ১১। এরপর শেলডন কটরেলকে তিন বলের মধ্যে একটি চার ও ছয় মেরে তিনি জেগে ওঠেন। দারুণ সব শটে ১৫ বলে ৩৯ রান করে ফিফটি ছুঁয়ে ফেলেন ৩৪ বলেই।
তিনে নেমে জেমস ভিন্সও তাল মেলানোর চেষ্টা করেন দুটি করে চার ও ছক্কায় ২৬ বলে ৩৪ রান করে।
তবে ফিফটির পর আবার একটু থমকে যায় রয়ের গতি। এক পর্যায়ে কাইরন পোলার্ডের সঙ্গে কিছুটা কথার লড়াই হয় তার। দ্বৈরথে শেষ পর্যন্ত জেতেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়কই। তার বলেই রয় আউট হন ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৪২ বলে ৫২ রান করে।
দ্বিতীয় উইকেটে রয় ও ভিন্সের জুটি ছিল ৫৭ বলে ৮৫ রানের।
মন্থর শুরুর পর দারুণ ফিফটি উপহার দেন জেসন রয়। ছবি: ইংল্যান্ড ক্রিকেট।
আকিল হোসেনকে ছক্কায় উড়িয়ে তার নান্দনিক ঝড়ের শুরু। পরে জেসন হোল্ডারকে মারেন টানা চারটি ছক্কা! ২৩ বলে ফিফটি ছোঁয়ার পর রোমারিও শেফার্ডকে ছক্কা মারেন আরও দুটি।
আরেকপ্রান্তে লিয়াম লিভিংস্টোন আউট হয়ে যান একটি ছক্কা মেরেই। শেষ ওভারে হোল্ডার ফেরান মইন ও ফিল সল্টকে, তবে শেষ দুই বলে স্যাম বিলিংসের দুটি ছক্কায় ইনিংসের শেষটাও দুর্দান্ত করে ইংল্যান্ড।
রান তাড়ায় ৬৪ রানের উদ্বোধনী জুটি পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে দুইশর কাছাকাছি রান তাড়ায় যেমন হওয়া দরকার, ততটা গতিময় হয়নি জুটি। ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং ২৬ রান করতে খেলে ফেলেন ২৭ বল!
দলে ফিরে আরেক ওপেনার কাইল মেয়ার্সই মূলত দ্রুত রান তোলেন। ৪ ছক্কায় বাঁহাতি ব্যাটসম্যান করেন ২৩ বলে ৪০।
নিজের পরপর দুই ওভারে এই দুজনকেই ফেরান মইন আলি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের আগের ম্যাচের দুই নায়ক এই মাচে পারেননি প্রভাব রাখতে। সেদিনের সেঞ্চুরিয়ান রভম্যান পাওয়েল এবার ৫ রানে বোল্ড আদিল রশিদের গুগলিতে। নিকোলাস পুরান থেমে যান ২ ছক্কায় ১৬ বলে ২২ করে।
রানের গতি বাড়াতে ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে জেসন হোল্ডার ৩ ছক্কায় করেন ২৪ বলে ৩৬। তবে পরিস্থিতির দাবি ছিল আরও বিস্ফোরক কিছু। যা পরে মেটাতে পারেননি কাইরন পোলার্ড (১৬ বলে ১৮*) ও ড্যারেন ব্রাভোও (৮ বলে ৩*)। ইংলিশ বোলারদের দারুণ বোলিং আটকে রাখে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৯৩/৬ (রয় ৫২, ব্যান্টন ৪, ভিন্স ৩৪, মইন ৬৩, লিভিংস্টোন ১৬, বিলিংস ১৩*, সল্ট ০, জর্ডান ০*; কটরেল ৪-০-৩৪-০, হোল্ডার ৪-০-৪৪-৩, শেফার্ড ৩-০-৪০-১, ড্রেকস ২-০-২৬-০, আকিল ৩-০-২৩-১, পোলার্ড ৪-০-২৩-১)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৫৯/৫ (কিং ২৬, মেয়ার্স ৪০, পুরান ২২, পাওয়েল ৫, হোল্ডার ৩৬, পোলার্ড ১৮*, ব্রাভো ৩*; টপলি ৪-০-২১-১, মইন ৪-০-২৮-২, মিলস ২-০-২৩-০, জর্ডান ৪-০-৩০-০, রশিদ ৪-০-২৮-১, লিভিংস্টোন ২-০-১৮-১)।
ফল: ইংল্যান্ড ৩৪ রানে জয়ী।
সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে ২-২ সমতা।
ম্যান অব দা ম্যাচ: মইন আলি।