হ‍্যাটট্রিকে বিপিএল অভিষেক রাঙালেন মৃত্যুঞ্জয়

ওভারের প্রথম দুই বলে হজম করলেন ছক্কা ও চার। পরের বল ‘ওভার দা উইকেট’ না ‘রাউন্ড দা উইকেট’ করবেন, কী ফিল্ড সাজাবেন যেন বুঝতে পারছিলেন না বোলার। এগিয়ে এসে কিছু একটা বললেন অধিনায়ক নাঈম ইসলাম। শরীরীভাষাতেও বোঝা যাচ্ছিল প্রচণ্ড স্নায়ু চাপে আছেন বোলার। ভাগ‍্য ভালো তার, স্লটে বল করলেও পেয়ে গেলেন উইকেট। সেটাই যেন পাল্টে দিল সব। হ‍্যাটট্রিক আনন্দে ভাসলেন মৃতুঞ্জয় চৌধুরি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2022, 03:23 PM
Updated : 29 Jan 2022, 04:38 PM

বিপিএল অভিষেকে কেবল দ্বিতীয় বোলার হিসেবে পরপর তিন বলে উইকেট নিলেন মৃত‍্যুঞ্জয়। জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে শনিবার সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়লেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের তরুণ এই অলরাউন্ডার।

বিপিএলের চলতি আসরে এটাই প্রথম হ্যাটট্রিক, সব মিলিয়ে ষষ্ঠ।

বিপিএলে অভিষেকে প্রথম বোলার হিসেবে ২০১৯ সালে হ‍্যাটট্রিক করেন স্পিনার আলিস আল ইসলাম। সেই আসরে পরপর তিন বলে উইকেট নেন ওয়াহাব রিয়াজ ও আন্দ্রে রাসেল।

চট্টগ্রামের ২০২ রান তাড়ায় এনামুল হকের ব্যাটে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল সিলেট। শেষ ১৮ বলে যখন প্রয়োজন ৪৯ রান, নিজের তৃতীয় ওভার করতে আসেন মৃত্যুঞ্জয়।

২০ বছর বয়সী এই তরুণ পেসারকে প্রথম বলে স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কায় ওড়ান এনামুল। পরের বলে বুলেট গতির কাভার ড্রাইভে মারেন চার। মেহেদী হাসানের মিরাজের জায়গায় নতুন অধিনায়ক হওয়া নাঈম ছুটে এসে কথা বলেন মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে।

পরের বলটিও স্লটেই করেন মৃত‍্যুঞ্জয়। অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের ফুল লেংথ বলের নিচে যেতে পারেননি এনামুল। যতটা তুলতে চেয়েছিলেন, পারেননি। এক্সট্রা কাভারে ক‍্যাচ মুঠোয় জমান নাসুম আহমেদ। শেষ হয় এনামুলের ৪৭ বলে ৩ ছক্কা ও ৯ চারে খেলা ৭৮ রানের ইনিংস।

অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন উইকেটে এসে প্রথম বলেই ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক‍্যাচ দেন আফিফ হোসেনের হাতে। এটাও ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। এসেই চড়াও হওয়ার মানসিকতা নিয়ে খেলা মোসাদ্দেক তুলে মেরে পার করতে পারেননি সীমানা।

সেরা ডেলিভারি যেন হ‍্যাটট্রিক পূরণের জন‍্য তুলে রেখেছিলেন মৃত‍্যুঞ্জয়। এবার আর বাইরে করেননি বল। স্টাম্প তাক করে দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে এলোমেলো করে দেন রবি বোপারার স্টাম্প।

বাংলাদেশের তৃতীয় বোলার হিসেবে বিপিএলে হ‍্যাটট্রিকের আনন্দে ভাসেন মৃত‍্যুঞ্জয়।

২০১২ সালে এই টুর্নামেন্টের অভিষেক আসরেই দেখা মিলেছিল তিন বলে তিন উইকেটের। ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে হ‍্যাটট্রিক করেছিলেন দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে খেলা পাকিস্তানের সাবেক পেসার মোহাম্মদ সামি।

দুই বছর পর ২০১৫ আসরে বরিশাল বুলসের হয়ে সিলেট সুপার স্টার্সের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন পেসার আল-আমিন হোসেন। এক আসেরই পরের তিনটি হ‍্যাটট্রিক করেন আলিস, ওয়াহাব ও রাসেল।

সিলেটকে ১৮৬ রানে থামিয়ে দিয়ে ম্যাচটি চট্টগ্রাম জিতে যায় ১৬ রানে। আসরে এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচ খেলে এটি তাদের তৃতীয় জয়, চার ম্যাচ খেলা সিলেটের তৃতীয় হার।

৪ ওভার বোলিং করে ৩৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম‍্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন মৃত‍্যুঞ্জয়।