টি-টোয়েন্টি থেকে বিরতি নিয়ে যা বললেন তামিম

তামিম ইকবালের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক‍্যারিয়ার কি শেষ? অভিজ্ঞ ওপেনার এই সংস্করণে দেশের জার্সিতে শেষ ম্যাচটি খেলে ফেলেছেন? কদিন ধরে এরকম নানা জল্পনা-কল্পনার মধ‍্যে মুখ খুললেন তামিম। বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক খোলাসা করলেন তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ ভাবনা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকচট্টগ্রাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Jan 2022, 02:17 PM
Updated : 27 Jan 2022, 02:17 PM

গত শনিবার বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আর খেলতে চান না তামিম। পরে বিসিবি পরিচালক ও জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ বলেন, সমস‍্যা জানতে বাঁহাতি ওপেনারের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। মনোমালিন্যের কোনো ব‍্যাপার থাকলে তা সমাধান করার চেষ্টা করবেন।

পরে মিরপুরে বিপিএলের ম্যাচ শেষে তামিমের মঙ্গে মাঠে কথা বলতেও দেখা যায় খালেদ মাহমুদকে।

২০২০ সালের মার্চে সবশেষ দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলা তামিম বিপিএলে খেলতে এখন আছেন চট্টগ্রামে। বৃহস্পতিবার জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন তিনি।   

“শেষ কয়েকদিন ধরে তো এটা নিয়ে একটা আলোচনা চলছিল যে আমার টি-টোয়েন্টি ভবিষ্যৎ কী হবে বা আমি কি চূড়ান্ত করছি না করছি। প্রথমেই আমি একটা জিনিস বলি, আমার সঙ্গে শেষ কয়েকদিন ধরে বিভিন্নভাবে অনেক জায়গায় বৈঠক হচ্ছিল। ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান, জালাল ইউনুস ভাই (বিসিবি পরিচালক), কাজী ইনাম আহমেদ (বিসিবি পরিচালক) ভাইদের সঙ্গে। উনাদের সঙ্গে বেশ কথাবার্তা হয়েছে।”

“উনারা অবশ্যই চাচ্ছেন, আমি টি-টোয়েন্টি চালিয়ে যাই, অন্তত বিশ্বকাপ পর্যন্ত। আমার ভাবনাটা একটু অন্যরকম ছিল। এখন দুই পক্ষ কথা বলে সম্ভাব্য সেরা ফলাফল যেটা হয়েছে, সেটা হলো, আমি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আগামী ৬ মাস বিবেচনা করছি না, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। এই ৬ মাসে আমার পুরো মনোযোগ টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে থাকবে। আমাদের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আছে, ২০২৩ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি আছে। পুরোপুরিভাবে আমার মনোযোগ থাকবে এই দুই সংস্করণে।”

“টি-টোয়েন্টির বিষয়টা হলো, ৬ মাস আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি নিয়ে কিছু ভাবব না। আশা করব, এই ৬ মাসে যে তরুণরা খেলবে বা বাংলাদেশ দল যে টি-টোয়েন্টি খেলবে, এরা এতই ভালো করবে, যে আমার আর প্রয়োজন পড়বে না আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে। তারপরও ৬ মাস পর যদি এমন সময় আসে, যেখানে ক্রিকেট বোর্ড, নির্বাচক বা টিম ম্যানেজমেন্ট যদি মনে করে আমাকে দরকার বিশ্বকাপের আগে, সঙ্গে আমিও যদি তৈরি থাকি, তখন আবার এটা নিয়ে আলাপ হবে। কিন্তু এই ছয় মাস ভাবছি না।”

“মিডিয়ায় তো অনেক ধরনের অনেক কথা হয়, মান-অভিমান, এসব অনেক কিছু হয়। দেখুন, আমি সবসময় একটা কথা বলি, বাংলাদেশকে যে আমি প্রতিনিধিত্ব করতে পারি, এর চেয়ে বড় জিনিস আমার জন্যই নয়, যে কোনো ক্রিকেটারের জন্য হতে পারে না। এখানে মান-অভিমানের জায়গা অতটুকু না। আমি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটা পুরোপুরি এবং পুরোপুরি ক্রিকেটীয় সিদ্ধান্ত, এর বেশি কিছু নয়।”

“আমি যেটা বললাম, আবার বলি, ৬ মাস পর আশা করি আমার দরকার পড়বে না। এটাই আমি দোয়া করি যে আমাদের দল অসম্ভব ভালো করবে। কিন্তু যদি এরকম কোনে পরিস্থিতি আসে, বড় ইভেন্টের আগে যদি টিম ম্যানেজমেন্ট, বোর্ড, আমি নিজেও যদি মনে করি যে দরকার আছে বলে, অবশ্যই পুনর্বিবেচনা করব। এই মুহূর্তে এই ব্যাপারে কোনোকিছু আর চিন্তা করছি না।”

“এটাই আমার কথা। এখানে বিতর্ক বা কোনোকিছুর কোনো জায়গা নেই। সবসময়ই বলি যে, আমি খুবই উন্মুক্ত। আমার বার্তায় আমি যখনই কিছু বলেছি বা বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা যখনই হয়েছে, খুবই উন্মুত্ত থেকেছি। আমি সবসময় আমার মনের কথা উনাদেরকে বলেছি। আর সবসময়ই প্রটোকল অনুসরণ করেছি। প্রটোকল বলতে বোঝাচ্ছি যে, আমার যেসব জায়গায় বলে মিডিয়াতে এসে কথা বলা উচিত, ওখানে সবগুলো বক্স টিক করে এসেই কথা বলি। এরকম নয় যে কাউকে না বলে হুট করে এসে একটা কথা বলে দিলাম। কোনোসময় করিনি, করবও না।”