গত নভেম্বরেও চিত্রটা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। পাকিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের আগে এই মাঠের গ্যালারি ছিল যেন ধ্বংসস্তুপ। গ্যালারির কোথাও চেয়ার ছিল, কোথাও ছিল ফাঁকা। টিকে থাকা অনেক চেয়ারই রং হারিয়ে ছিল বিবর্ণ। অনেক জায়গা ছিল স্যাঁতস্যাঁতে। সব মিলিলে, রূপ হারিয়ে স্টেডিয়াম হয়ে পড়েছিল দৃষ্টিকটু।
এবার বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের আগে সেই মাঠেরই রূপ এখন খোলতাই। এখানকার ভেন্যু ম্যানেজার ফজলে বারি খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালন, নতুন সাড়ে ১২ হাজার সিট বসানো হয়েছে গ্যালারিতে।
“এখন স্টেডিয়ামে ১৮ হাজারের বেশি সিট রয়েছে। পুরনো ভালো কিছু সিট রয়ে গেছে। বাকি নতুন সিট বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।”
একসময় চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ছিল শহরের প্রাণকেন্দ্রে এমএ আজিজ স্টেডিয়াম। সেখানে ছিল ফুটবল-ক্রিকেট টানাটানি। পরে ২০০৪ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আগে শহরের অদূরে সাগরিকায় তৈরি করা হয় এই স্টেডিয়াম। শুরুতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্টেডিয়াম নাম থাকলেও পরে তা বদলে যায়।
২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কার বাংলাদেশ সফরের আগে আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য আইসিসি স্বীকৃতি পায় এই মাঠ। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে শুরু হয় আন্তর্জাতিক ভেন্যু হিসেবে যাত্রা। ওই সিরিজ দিয়ে টেস্ট অভিষেকও হয়ে যায় এই মাঠের।
২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে এই স্টেডিয়ামের আধুনিকায়ন করা হয়। তখন গ্যালারির একপাশ দোতলা করে পুরো স্টেডিয়ামে প্লাস্টিকের চেয়ার বসানো হয়। সেই চেয়ারগুলো আনা হয়েছিল দেশের বাইরে থেকে।
১০ বছরে সেই চেয়ারগুলোর হয়েছিল বেহাল দশা। নতুন চেয়ার নেওয়া হয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে। এগুলোর স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই। তবে ভেন্যু ম্যানেজারের বললেন, স্থায়ীত্ব লম্বা সময় হবে বলেই আশা তাদের।
“আগের চেয়ার তো আনা হয়েছিল দেশের বাইরে থেকে। সেগুলো অনেক বছরই টিকে ছিল। এবার দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে চেয়ার নিয়েছিল। এক বছরের ওয়ারন্টি আছে। কতদিন টিকবে বলা তো মুশকিল, আশা করছি অন্তত বছর দশেক টিকে থাকবে।”
এমনিতে স্টেডিয়ামের সংস্কারের দায়িত্ব জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। তাদের দিকে দীর্ঘ দিন তাকিয়ে ছিল বিসিবি। শেষ পর্যন্ত নিজেদের দায়িত্বেই সংস্কার কাজ করেছে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্তা সংস্থা।
স্টেডিয়াম প্রাঙ্গনে ইনডোর সেন্টার তৈরির কাজও এগিয়ে চলছে। আগের ইনডোরটি ভাঙা পড়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষের (সিডিএ) প্রকল্প সাগরিকা-পোর্ট কানেক্টিং রোডের ফ্লাইওভার তৈরি কারণে। এর বিনিময় হিসেবে সিডিএ ও জাপানি প্রতিষ্ঠান জাইকা মিলে নান্দনিক একটি নতুন ইনডোর সেন্টার তৈরি করে দিচ্ছে।
সেই ইনডোরের জন্য অস্ট্রেলিয়া থেকে দুটি ম্যাটের উইকেট এসেছে বলে জানালেন ভেন্যু ম্যানেজার। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আরও দুটি উইকেট আসবে ইংল্যান্ড থেকে।