বিপিএলে মঙ্গলবারের দ্বিতীয় ম্যাচে ১৫৯ রানের লক্ষ্য দিয়ে ৬৩ রানে জিতেছে কুমিল্লা।
চলতি আসরে প্রথম দল হিসেবে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে একশ রানের নিচে থমকে গেছে বরিশাল। দলটিকে ৯৫ রানে থামিয়ে দেওয়ায় বড় অবদান নাহিদুল ইসলামের। বিপিএলে সবচেয়ে ‘কিপটে’ বোলিংয়ের রেকর্ডে পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদির পাশে নাম লেখানো এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার ৪ ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট।
দুইবার জীবন পাওয়া ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে করেন ৩৬ রান। বরিশালের আর কেউ যেতে পারেননি ২০ পর্যন্ত। দলটির মাত্র তিন ব্যাটসম্যান যেতে পারেন দুই অঙ্কে।
কুমিল্লার প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের পাঁচ জনই যান দুই অঙ্কে। তাদের সবার মিলিত চেষ্টায় দেড়শ ছাড়ানো সংগ্রহ গড়ে কুমিল্লা। তরুণ ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ৩৫ বলে ছয় চার ও এক ছক্কায় করেন ৪৮ রান। শেষের দিকে তিন ছক্কা ও এক চারে ১৬ বলে অপরাজিত ২৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন করিম জানাত।
আঁটসাঁট বোলিংয়ে ২৫ রানে ২ উইকেট নেন সাকিব। ডোয়াইন ব্রাভো ৩ উইকেট নেন ৩০ রানে।
চমৎকার কাভার ড্রাইভে চার মেরে রানের খাতা খোলা ফাফ দু প্লেসি যেতে পারেননি বেশিদূর। সাকিবের বলে ধরা পড়েন মিড অনে। পাওয়ার প্লেতে ৪৭ রান তুলতে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে কুমিল্লা।
নাঈমের বলে ৯ রানে জীবন পান ইমরুল। শেষ মুহূর্তে সৈকত আলির হাত থেকে ছুটে যায় ক্যাচ। অন্য প্রান্তে দলেক টানতে থাকেন মাহমুদুল।
জীবন পেয়ে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ইমরুল। কুমিল্লা অধিনায়ক থামেন ১৫ রান করে। ৫ রানে জীবন পেয়ে ১৭ রান করে সাকিবের বলে স্টাম্পড হন টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক।
পঞ্চাশের আগেই মাহমুদুলকে থামান জেইন লিন্টট। তাকে কাভার দিয়ে খেলার চেষ্টায় ক্রিস গেইলের হাতে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় মাহমুদুলের ইনিংস। নিয়মিত উইকেট হারানোর মধ্যে শেষের ছোট্ট ক্যামিওতে দলকে দেড়শ ছাড়ানো সংগ্রহ এনে দেন জানাত।
রান তাড়ায় নাহিদুলের প্রথম পাঁচ বল ডট খেলে শেষ বলে ছক্কার চেষ্টায় সীমানায় ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৈকত আলি। মুস্তাফিজুর রহমানের পরের ওভারে শূন্যতে ফিরতে পারতেন শান্তও। কিন্তু শর্ট থার্ড ম্যানে ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি ডেলপোর্ট। উল্টো ব্যাটসম্যান পেয়ে যান বাউন্ডারি।
নাহিদুলের পরের ওভারে ইমরুলকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সাকিব। শুরুতেই চাপে পড়ে যায় বরিশাল। সেখান থেকে আর বের হয়ে কখনও জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি দলটি।
ঝড় তোলার আগেই গেইলকে থামান নাহিদুল। দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় থাকা তৌহিদ হৃদয়কে বোল্ড করে দেন জানাত। ছক্কার চেষ্টায় তানভির ইসলামের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নুরুল হাসান সোহান।
২২ রানে মুস্তাফিজের বলে কাভারে ক্যাচ দিয়েও নাহিদুলের ব্যর্থতার বেঁচে যান শান্ত। শেষ পর্যন্ত বাঁহাতি পেসারের বলেই ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। দুই চারে ৪৭ বলে ৩৬ রান করে ধরা পড়েন ইমরুলের হাতে।
বোলিংয়ে সব আলো নাহিদুল কেড়ে নিলেও কুমিল্লার অন্য বোলাররাও ছিলেন যথেষ্ট কার্যকর। দুটি করে উইকেট নেন তানভির, শহিদুল ইসলাম ও জানাত।
এই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে পেছনে ফেলে শীর্ষে উঠে এলো কুমিল্লা। ৩ ম্যাচে দ্বিতীয় হারের তেতো স্বাদ পেল সাকিবের বরিশাল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ২০ ওভারে ১৫৮/৭ (ডেলপোর্ট ১৯, মাহমুদুল ৪৮, দু প্লেসি ৬, ইমরুল ১৫, মুমিনুল ১৭, জানাত ২৯*, মাহিদুল ৯, নাহিদুল ০, শহিদুল ৫*; সাকিব ৪-০-২৫-২, নাঈম ৩-০-৩১-১, তাইজুল ৩-০-২২-০, লিন্টট ৪-০-১৮-১, ব্রাভো ৪-০-৩০-৩, জিয়া ২-০-২৭-০)
ফরচুন বরিশাল: ১৭.৩ ওভারে ৯৫ (সৈকত ০, শান্ত ৩৬, সাকিব ১, হৃদয় ১৯, গেইল ৭, সোহান ১৭, ব্রাভো ০, জিয়া ০, লিন্টট ৮, নাঈম ০, তাইজুল ২*; নাহিদুল ৪-১-৫-৩, মুস্তাফিজুর ২.৩-০-২২-১, শহিদুল ৩-০-২২-২, তানভির ৪-০-১৯-২, করিম ৪-০-২৬-২)
ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৬৩ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: নাহিদুল ইসলাম