‘ফাইনালে’ শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে গেল বাংলাদেশের মেয়েরা

লিগ পর্বের ম্যাচ, কিন্তু প্রেক্ষাপটের কারণে ম্যাচটি হয়ে উঠেছিল ফাইনাল। সেই লড়াইয়ে পেরে উঠল না বাংলাদেশের মেয়েরা। প্রতিপক্ষের যাকে নিয়ে ছিল সবচেয়ে বেশি ভয়, সেই চামারি আতাপাত্তুর অলরাউন্ড পারফরম্যান্স গড়ে দিল ব্যবধান। দারুণ জয়ে কমনওয়েলথ গেমসের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিল শ্রীলঙ্কা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2022, 05:39 AM
Updated : 24 Jan 2022, 05:39 AM

কমনওয়েলথ গেমসের মেয়েদের ক্রিকেট বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার জয় ২২ রানে।

টানা তিন ম্যাচে দাপুটে জয় নিয়ে এই ম্যাচে মুখোমুখি হয় দুই দল। সেখানে বাংলাদেশকে মাড়িয়ে শ্রীলঙ্কার জয়রথ পৌঁছে গেল মূল পর্বে। আগামী জুলাই-অগাস্টে বার্মিংহামে কমনওয়েলথ গেমসে খেলবে লঙ্কানরা। বাংলাদেশ পারল না কাছে গিয়েও।

কুয়ালা লামপুরে সোমবার শ্রীলঙ্কা ২০ ওভারে তোলে ১৩৬ রান। বাংলাদেশ পুরো ওভার খেলে কেবল ৫ উইকেট হারালেও করতে পারে মাত্র ১১৪ রান।

লঙ্কান অধিনায়ক আতাপাত্তু ওপেনিংয়ে ২৮ বলে ৪৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পর বল হাতে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং স্পর্শ করে ১৭ রানে নেন ৩ উইকেট।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা লঙ্কানদের তৃতীয় ওভারে ধাক্কা দেন সুরাইয়া আজমিন। বাংলাদেশের পেসার বিদায় করে দেন লঙ্কান ওপেনার ভাস্মি গুনারাত্নেকে।

তবে আরেক প্রান্তে আতাপাত্তু বাউন্ডারি আদায় করতে থাকেন নিয়মিত। সুরাইয়াকে দুটি বাউন্ডারি মারেন তিনি। বাংলাদেশের সেরা স্পিনার নাহিদা আক্তারকে ছক্কায় ওড়ান পরপর দুই ওভারে। লেগ স্পিনার রুমানা আহমেদের এক ওভারে মারেন চার ও ছক্কা।

৬ চার ও ৩ ছক্কায় আতাপাত্তুর ইনিংসটি থামে দশম ওভারে রুমানার বলে স্টাম্পড হয়ে।

তবে লঙ্কানরা তাতে দমে যায়নি। মিডল অর্ডারে হার্শিথা মাদাবি করেন ২২ বলে ১৯, নিলাকশি ডি সিলভা খেলেন ২৫ বলে ২৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। শেষ দিকে কিপার আনুশকা সাঞ্জিবানি ১৬ বলে অপরাজিত ২০ রান করে শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে যান ১৩৬ রানে।

সুরাইয়া আজমিন শুরুতে উইকেট এনে দিলেও পরে সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। ছবি: আইসিসি।

বাংলাদেশের হয়ে অভিজ্ঞ স্পিনার সালমা খাতুন আঁটসাঁট বোলিং করলেও খুব সুবিধা করতে পারেননি অন্যরা। নির্ভরযোগ্য স্পিনার নাহিদা দুই উইকেট নিতে পারলেও ছিলেন বেশ খরুচে।

চ্যালেঞ্জিং রান তাড়ায় বাংলাদেশ ওপেনার শামিমা সুলতানাকে হারায় দ্রুতই। দ্বিতীয় উইকেটে মুর্শিদা খাতুন ও ফারজানা হক ৫০ রানের জুটি গড়লেও তাতে লেগে যায় ৯ ওভার।

এই দুজনের কেউ ইনিংস বড়ও করতে পারেননি। ৩৬ বলে ৩৬ করা মুর্শিদাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন আতাপাত্তু।

বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা পারেননি পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে দ্রুত রান তুলতে (২১ বলে ২০)। অনভিজ্ঞ সোবহানা মোস্তারিও পারেননি দারুণ কিছু করতে (১৩ বলে ১১*)।

বিস্ময়করভাবে, দ্রুত রান তুলতে সক্ষম অভিজ্ঞ রুমানা আহমেদকে ব্যাটিংয়ে নামানো হয় সোবহানা ও রিতু মনির পরে। সাত নম্বরে নেমে রুমানার তখন করার ছিল না তেমন কিছু।

তিনে নেমে দীর্ঘক্ষণ এক প্রান্তে থেকে ফারজানা হক ইনিংসকে দিতে পারেননি গতি। শেষ ওভারে তিনি আউট হন ৩৯ বলে ৩৩ রান করে। দল পারেনি লক্ষ্যের কাছে যেতেও।

বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১৮ সালে ১৭ রানে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন আতাপাত্তু, এবার নিজের সেই সেরা ছুঁয়ে ফেলেন আবার। লঙ্কান অধিনায়ক ম্যাচের সেরা তো বটেই, আসরে ২২১ রান করে ও ৪ উইকেট নিয়ে সিরিজের সেরাও তিনিই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা : ২০ ওভারে ১৩৬/৬ (গুনারত্নে ৭, আতাপাত্তু ৪৮, হাসিনি ৭, হার্শিথা ১৯, নিলাকশি ২৮, আনুশকা ২০*, কাঞ্চনা ০, দিলহারি ১*; সালমা ৪-০-১৪-১, সুরাইয়া ২-০-১২-১, নাহিদা ৪-০-৩৪-২, রুমানা ৪-০-৩৩-১, রিতু ৩-০-২৩-০, মেঘলা ৩-০-১৭-০)।

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১১৪/৫ (শামিমা ৬, মুর্শিদা ৩৬, ফারজানা ৩৩, নিগার ২০, সোবহানা ১১*, রিতু ০, রুমানা ২*; উদেশিকা ২-০-২২-০, দিলহারি ৪-০-২১-০, কাঞ্চনা ২-০-১৩-১, রানাভিরা ৪-০-২২-০, নিসানসালা ৪-০-১৭-০, আতাপাত্তু ৪-০-১৭-৩)।

ফল: শ্রীলঙ্কা ২২ রানে জয়ী।

প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: চামারি আতাপাত্তু।