সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে মেয়েদের বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন অস্ট্রিয়ার অলরাউন্ডার আন্দ্রেয়া-মাই জেপেদা। গত বছর তার পারফরম্যান্স ছিল চমক জাগানিয়া।
বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থা আইসিসির ওয়েবসাইটে রোববার সেরাদের নাম ঘোষণা করা হয়।
জিশান সীমিত ওভারের দুই সংস্করণেই গত বছর ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে উজ্জ্বল ছিলেন। দলের বেশ কয়েকটি জয়ে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। দৃঢ়তার সঙ্গে ওমানকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি মিডল অর্ডারে ব্যাট হাতে রাখেন অবদান, ধারাবাহিকভাবে তুলে নেন উইকেট।
২০২১ সালে ওয়ানডেতে দুটি ফিফটি করেন তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও নামিবিয়ার বিপক্ষে। বাঁহাতি এই স্পিনার বল হাতে মাঝের ওভারগুলোতে আটকে রাখেন প্রতিপক্ষের রানের প্রবাহ, তুলে নেন গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। বিশেষ করে পাপুয়া নিউ গিনির (পিএনজি) বিপক্ষে তার পারফরম্যন্স ছিল সবচেয়ে উজ্জ্বল। ওই বছরে তিনি দুবার ইনিংসে চার উইকেট নেন, একটি ওয়ানডেতে, অন্যটি টি-টোয়েন্টিতে। আর দুটিই পিএনজির বিপক্ষে।
সেরার স্বীকৃতি পেয়ে স্বাভাবিকভাবে দারুণ উচ্ছ্বসিত জিশান। ধন্যবাদ দিলেন বোর্ড থেকে শুরু করে সতীর্থ ও পরিবারকে।
“আইসিসি সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে বর্ষসেরা ক্রিকেটার হতে পেরে আমি খুব খুশি। এই পুরস্কার অবশ্যই আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জনগুলির একটি। আমি খুব খুশি যে আমার প্রচেষ্টার স্বীকৃতি দিয়েছে আইসিসি। মাঠে নিজেকে মেলে ধরতে আমাকে সমর্থন করার জন্য ওমান ক্রিকেট ম্যানেজমেন্ট, আমার সতীর্থ, সাপোর্ট স্টাফ, আমার পরিবারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।”
২০২১ সালে অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে মেয়েদের বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন জেপেদা। ওপেনিংয়ে দ্রুত রান তোলার ক্ষেত্রে বেশ পারদর্শী এই ব্যাটার। গত বছর তিনি খেলেন আটটি টি-টোয়েন্টি। এর মধ্যে তিনটি বেলজিয়ামের বিপক্ষে, পাঁচটি ইতালির বিপক্ষে।
বিশেষ করে বেলজিয়ামের বিপক্ষে সিরিজে তার পারফরম্যান্স ছিল অবিশ্বাস্য। তিন ম্যাচে একটি সেঞ্চুরিতে ১২৫ গড়ে রান করেন ২৫০। স্ট্রাইক রেট ১৪৮.৮০!
সেঞ্চুরিটি ছিল সিরিজের প্রথম ম্যাচে। মাত্র ৬৩ বলে খেলেন ১০১ রানের ইনিংস। ১৭টি চারে গড়া ইনিংসটি। অস্ট্রিয়া ২০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৯৭ রান।
সিরিজের পরের দুই ম্যাচে জেপেদার রান ছিল যথাক্রমে ৪৬ বলে ৬৫ ও ৫৯ বলে অপরাজিত ৮৪।
গত বছর মিডিয়াম পেসে ৮ ইনিংসে ওভারপ্রতি ৪.২৫ করে রান দিয়ে ২টি উইকেটও নেন ২৬ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।
জেপেদা শুধু ক্রিকেটারই নন, পেশাদার চিকিৎসকও। সেই দায়িত্ব সামলেই খেলেন ক্রিকেট। সেরার স্বীকৃতি পেয়ে অবশ্য বেশ অবাকই হয়েছেন তিনি।
“আইসিসি সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে মেয়েদের বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার পাওয়া আমার জন্য বড় সম্মানের এবং অবাক করার। এর জন্য আইসিসিকে ধন্যবাদ। আমার সতীর্থ, কোচ, অস্ট্রিয়ান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন, আমার হোম ক্লাব অস্ট্রিয়ান ক্রিকেট ক্লাব ভিয়েনা, আমার পরিবার এবং বন্ধুদের ধন্যবাদ জানাতে চাই সবসময় আমাকে সমর্থন করার জন্য এবং আমাকে এমন একটি দুর্দান্ত খেলা খেলতে উত্সাহিত করার জন্য।”
“কোভিডের মধ্যে একজন মেডিকেল চিকিৎসক হিসেবে পূর্ণকালীন কাজ করা সত্ত্বেও আমি গত মৌসুমে ক্রিকেট খেলা উপভোগ করেছি। আমরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছি এবং আমি ভালো পারফর্ম করতে পেরেছি। আমার সেরা ইনিংস সম্ভবত বেলজিয়ামের বিপক্ষে আমাদের ঘরের মাঠে, যেখানে আমি আমার প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলাম। আগামীতেও আমি এইভাবে এগিয়ে যাওয়ার এবং দলে যতটা সম্ভব অবদান রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা আমি করব।”