বাংলাদেশের তরুণদের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে সিডন্স

ভিসা পাওয়া হয়ে গেছে। এখন বাংলাদেশে আসা আর কাজ শুরুর অপেক্ষা। সেই সময়টার জন্য আর তর সইছে না জেমি সিডন্সের। বাংলাদেশে নতুন অধ্যায়ে নিজের ভূমিকা এখনও পরিষ্কার নয় সাবেক প্রধান কোচের কাছে। তবে জাতীয় দলের পাশাপাশি তরুণদের নিয়ে কাজ করার রোমাঞ্চ নিয়েই তিনি আসছেন এদেশে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Jan 2022, 09:51 AM
Updated : 22 Jan 2022, 09:51 AM

গত ২৪ ডিসেম্বর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান জানান, সিডন্সকে ব্যাটিং পরামর্শক করে আনছে বোর্ড। তার ভূমিকা সম্পর্কে অবশ্য তখন নিশ্চিত করে কিছু জানাননি তিনি। পরেও বোর্ড কর্তারা নানা সময়ে বলেন, সিডন্সের ভূমিকা চূড়ান্ত করেননি তারা।

জাতীয় দলের ব্যাটিং পরার্শক হিসেব আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তি আছে অ্যাশওয়েল প্রিন্সের সঙ্গে। সিডন্সকে মূলত তরুণ ও জাতীয় দলের আশেপাশে থাকা ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ করানোর ভাবনা আছে বিসিবির। ৫৭ বছর বয়সী এই কোচ নিজেও সেরকম কিছুর আশা করছেন, জানালেন তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিওতে।

“মাত্রই ভিসা পেয়েছি বাংলাদেশের, আমার পরবর্তী কোচিং ঠিকানা সেটি। সেখানে দুই বছর থাকব। এই বছর অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। আশা করছি, ওখানে কিছু করুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটারের সঙ্গে কাজ কারতে পারব। জাতীয় দলের পাশাপাশি জুনিয়র ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের কাজ করতে পারব এবং তরুণদের প্রস্তুত করে তুলতে পারব, যে কাজটি আমি পছন্দ করি। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করব আশা করি।”

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুসরণ করেছেন সিডন্স ভালোভাবেই। দলের সাফল্যগুলো যেমন ছুঁয়ে গেছে তাকে, তেমনি চোখে পড়েছে ঘাটতির জায়গাও। এখানে এসে সেসব নিয়ে কাজ করতে চান তিনি।

“ওখানে আগেও ছিলাম, ভালো লেগেছে কাজ করতে এবং আবারও ভালো লাগবে। সাম্প্রতিক সময়ে ওরা বেশ কিছু ভালো জয় পেয়েছে টি-টোয়েন্টিতে ও টেস্টে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, নিউ জিল্যান্ডে তাদের প্রথম টেস্ট জয়। দারুণ জয় ছিল সেটি, ব্যাটিং-বোলিং ছিল দুর্দান্ত। পরের টেস্টে আবার তারা ভেঙে পড়েছে। কারণটা যদিও জানি না, তবে কাজ করার জায়গা হবে সেখানেই, ধারাবাহিকতা বয়ে আনা। আশা করি, আমি গিয়ে সহায়তা করতে পারব।”

“আশা করছি, জাতীয় দল ও কিছু তরুণের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাব। আমি এখনও শতভাগ নিশ্চিত নই কোথায় কাজ করব। তবে তরুণ প্রতিভাবান কয়েকজনের সঙ্গে কাজ করব ও তাদের খেলায় উন্নতির চেষ্টা করব।”

ডেভ হোয়াটমোর বাংলাদেশের দায়িত্ব ছাড়ার পর ২০০৭ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব পান সিডন্স। হোয়াটমোরের সময় থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের পায়ের নিচে জমিন পাওয়ার শুরু, তা আরেকটু শক্ত হয় সিডন্সের সময়ে।

২০০৮ সালে বাংলাদেশের ১৪ ক্রিকেটার একসঙ্গে চলে যান ভারতের আইসিএলে খেলতে, যেখানে ছিলেন শীর্ষ ক্রিকেটারদের অনেকে। সেই সময় দলের পুনর্গঠন ও গোছানোয় বড় ভূমিকা রাখেন সিডন্স। তবে দেশের মাঠে ২০১১ বিশ্বকাপের ব্যর্থতার পর তার সঙ্গে আর চুক্তি নবায়ন করেনি বিসিবি। যদিও সিডন্স সেসময় থাকতে চেয়েছিলেন বলেই জানিয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমকে।

প্রধান কোচ হিসেবে সিডন্সের সাফল্য নিয়ে যেমন তখন আলোচনা ছিল, তেমনি বড় সমালোচনা ছিল ‘ম্যান ম্যানেজমেন্ট’ নিয়ে। দলের সবাইকে সমান চোখে দেখা ও মূল্যায়ন করতেন না বলে অভিযোগ উঠেছিল সেসময়।

তবে ব্যাটিং কোচ হিসেবে তার দারুণ দক্ষতার কথা নিঃশঙ্কোচে স্বীকার করে নেন সেই সময়ের বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রায় সবাই। মাশরাফি বিন মুর্তজা, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমরা নানা সময়েই বলেছেন, ব্যাটিং কোচ হিসেবে সিডন্স তাদের চোখে অন্য উচ্চতায়।