বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে দল ঘোষণার ধারাবাহিকতায় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থার ওয়েবসাইটে বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়েছে বর্ষসেরা টেস্ট একাদশ।
ভারত ও পাকিস্তান থেকে জায়গা পেয়েছেন সর্বোচ্চ তিন জন করে ক্রিকেটার। টেস্টের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন নিউ জিল্যান্ড থেকে আছেন দুই জন। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা থেকে একজন করে জায়গা পেয়েছেন এই দলে।
একাদশে দুই ওপেনারের একজন হিসেবে অনুমিতভাবে জায়গা পেয়েছেন দিমুথ করুনারত্নে। ২০২১ সালে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে উজ্জ্বল ছিলেন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক। ৭ ম্যাচে ৯০২ রান করেন তিনি ৬৯.৩৮ গড়ে। সেঞ্চুরি ছিল চারটি।
এর মধ্যে উল্লেখ করার মতো কিছু ইনিংস তার আছে। পাল্লেকেলেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে করেন ডাবল সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরি উপহার দেন জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। আইসিসি বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটারের লড়াইয়েও আছেন তিনি।
উদ্বোধনী জুটিতে করুনারত্নের সঙ্গী ভারতের রোহিত শর্মা। সীমিত ওভারের পর টেস্ট ক্রিকেটেও ওপেনার হিসেবে নিজের জায়গা পাকা করে ফেলেছেন তিনি। ১১ ম্যাচে ৪৭.৬৮ গড়ে ৯০৬ রান করে ২০২১ সালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। দুটি সেঞ্চুরিই করেন বিরুদ্ধ কন্ডিশনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, একটি ঘরের মাঠে চেন্নাইয়ে, অন্যটি ওভালে।
একাদশের চার নম্বর ব্যাটসম্যান জো রুট। লাল বলের ক্রিকেটে গত বছর ইংল্যান্ড ধুঁকলেও তাদের অধিনায়ক ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে ছিলেন দারুণ উজ্জ্বল। ১৫ ম্যাচে ৬১ গড়ে তিনি করেন এক হাজার ৭০৮ রান। সেঞ্চুরি ছয়টি।
রুট বছরের শুরুটা করেন গল টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২২৮ রানের ম্যারাথন ইনিংস দিয়ে। একই মাঠে পরের টেস্টে খেলেন ১৮৬ রানের আরেকটি দুর্দান্ত ইনিংস। সেই ফর্ম তিনি ধরে রাখেন ভারত সফরেও। চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে করেন ডাবল সেঞ্চুরি। ভারতের পেস ও স্পিন আক্রমণ সামলে খেলেন ২১৮ রানের ইনিংস।
ইতিহাসের মাত্র তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে এক বছরে এক হাজার ৭০০ রান তার। ২০০৬ সালে মোহাম্মদ ইউসুফের এক হাজার ৭৮৮ ও ১৯৭৬ সালে ভিভ রিচার্ডসের এক হাজার ৭১০ রান আছে রুটের ওপরে।
২০২১ সালে উইলিয়ামসনকে শুধু রান করার দিক থেকেই বিচার করা যাবে না, তার অসাধারণ নেতৃত্ব দারুণ সব সাফল্য এনে দিয়েছে দলকে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নিউ জিল্যান্ড পায় তাদের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা সাফল্য। প্রথমবার আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর হওয়ার স্বাদও পায় তারা ওই বছরেই। একাদশের অধিনায়কও তিনি।
বছরে প্রথম টেস্টেই কিউই অধিনায়ক ডাবল সেঞ্চুরি করেন পাকিস্তানের বিপক্ষে। সাউথ্যাম্পটনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও ব্যাট হাতে তিনি রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ৪ ম্যাচে ৬৫.৮৩ গড়ে একটি সেঞ্চুরিতে তার রান ৩৯৫।
তিন সংস্করণে ভারতীয় দলে কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের জায়গা পোক্ত করা পান্ত ক্রমেই উন্নতি করে চলেছেন লাল বলের ক্রিকেটে। গত বছর ১২ ম্যাচে তিনি ৭৪৮ রান করেন ৩৯.৩৬ গড়ে। কিপার-ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। আহমেদাবাদে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি করেন দারুণ সেঞ্চুরি, দেশের মাটিতে যা তার প্রথম। এছাড়া উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতে ২৩ ইনিংসে তার ডিসমিসাল ৩৯টি।
একাদশের একমাত্র বিশেষজ্ঞ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ভারতীয় অফ স্পিনার গত বছর ৯ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৫৪ উইকেট নেন ১৬.৬৪ গড়ে। ব্যাট হাতে ২৫.৩৫ গড়ে একটি সেঞ্চুরিতে করেন ৩৫৫ রান।
একাদশের তিন পেসারের দুই জন পাকিস্তানের হাসান আলি ও শাহিন শাহ আফ্রিদি। অন্য জন নিউ জিল্যান্ডের দীর্ঘদেহী বোলার কাইল জেমিসন। গত বছর পাঁচ ম্যাচে তিনি নেন ২৭ উইকেট। ৯ ম্যাচে ৪১ উইকেট নেন হাসান। আর আফ্রিদি ৯ ম্যাচে নেন ৪৭ উইকেট, ইনিংসে পাঁচ উইকেট তিনবার।
বর্ষসেরা টেস্ট একাদশ: দিমুথ করুনারত্নে (শ্রীলঙ্কা), রোহিত শর্মা (ভারত), মার্নাস লাবুশেন (অস্ট্রেলিয়া), জো রুট (ইংল্যান্ড) কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক, নিউ জিল্যান্ড), ফাওয়াদ আলম (পাকিস্তান), রিশাভ পান্ত (উইকেটকিপার, ভারত) রবিচন্দ্রন অশ্বিন (ভারত), কাইল জেমিসন (নিউ জিল্যান্ড), হাসান আলি (পাকিস্তান), শাহিন শাহ আফ্রিদি (পাকিস্তান