বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ থাকার সময় লিটনকে কাছ থেকেই দেখেছেন রোডস। আবার তিনি লিটনের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন এবারের বিপিএলে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পরামর্শক হয়ে এসেছেন রোডস। এই দলেই খেলবেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের আলোচিত চরিত্র লিটন।
গোটা ক্যারিয়ারে যেমন, তেমনি গোটা কয়েক মাসে নানাভাবে লিটনকে নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটে ছিল চর্চা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও এর আগে কিছুদিন ব্যাট হাতে তিনি ছিলেন ব্যর্থ। বিশ্বকাপের পর তুমুল প্রশংসা তিনি আদায় করে নিয়েছেন টেস্ট পারফরম্যান্সে।
সাম্প্রতিক সময়েই অবশ্য শুধু নয়, গত বছরজুড়েই দেখা গেছে এই চিত্র। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তার এই ব্যর্থতা ছিল গোটা বছরই। ১১ ওয়ানডে খেলে ১টিতে সেঞ্চুরি করলেও বাকি কোনোটিতে করতে পারেননি ফিফটি। বছরের গড় তাই ২৩.২৭। টি-টোয়েন্টিতে অবস্থা ছিল আরও নাজুক। ১৬ ইনিংস খেলে ছিল না কোনো ফিফটি। মাত্র ১৩ গড়ে রান করেন মোট ২০৮, স্ট্রাইক রেট স্রেফ ৯৫.৪১।
সেই লিটন পুরো ভিন্ন চেহারায় ছিলেন টেস্টে। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ পান বছরের শেষ দিকে, পাকিস্তানের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে। গোটা বছরে ৭ টেস্টে ১ সেঞ্চুরি ও ৫ ফিফটিতে ৫৯৪ রান করেন ৪৯.৫০ গড়ে। গত বছর টেস্টে তার সমান রান করতে পারেননি বিশ্ব ক্রিকেটে আর কোনো কিপার-ব্যাটসম্যান।
সেই ফর্ম বয়ে এনেছেন তিনি নতুন বছরেও। নিউ জিল্যান্ড সফরে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে দলের ঐতিহাসিক জয়ের ম্যাচে তিনি খেলেন ৮৬ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় টেস্টে দল হারলেও তিনি উপহার দেন অসাধারণ এক সেঞ্চুরি।
এবারের বিপিএলে তার দিকে আশাভরে তাকিয়ে কুমিল্লা। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে দলের পরামর্শক রোডসের কথায়ও উঠে এলো লিটনের প্রসঙ্গ।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিটি লিটন করেছিলেন রোডসের কোচিংয়েই। ২০১৮ এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে চোখধাঁধানো সেই সেঞ্চুরির ইনিংসটি মনে করেই রোডস তুলে ধরলেন লিটন দাসের ক্যারিয়ারের আশা ও আক্ষেপের দিক।
“লিটন দাসকে আমার সবসময়ই স্পেশাল ক্রিকেটার বলে মনে হয়েছে। এখন সে আরও ভালো ক্রিকেটার। যেদিন আমার প্রথম মনে হলো, এই ছেলেটা ভালো ক্রিকেটার, সেটা হলো এশিয়া কাপ ফাইনালে (২০১৮) যখন সে শতরান করল। কঠিন কন্ডিশনে খুব ভালো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সেটি ছিল অসাধারণ এক ইনিংস। দুর্দান্ত খেলেছিল সে।”
“এখন সে আরেকটু ধারাবাহিক হয়েছে। সে বেড়ে উঠছে এবং আরও ভালো হচ্ছে। এটা ভালো ব্যাপার যে সে থেমে যায়নি। যে উচ্চতায় তার থাকা উচিত, এখনও সেখানে পৌঁছাতে পারেনি সে। আরও উঁচুতে উঠতে পারে সে। আরও উন্নতি করতে পারে। তবে এখন সে ভালোমানের একজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।”
নিউ জিল্যান্ড সফর থেকে ফেরার পর লিটন অবশ্য এখনও কুমিল্লা দলের সঙ্গে যোগ দেননি। লম্বা সফর থেকে ফেরার পর পরিবারের সঙ্গে একটু বেশি সময় কাটানোর সুযোগ তাকে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লার প্রধান কোচ সালাউদ্দিন।