তিক্ত বিদায়ের অতীতে ফিরতে চান না রোডস

আছে রহস্যের ছোঁয়া, প্রশ্নের ভীড়। স্টিভ রোডসের দিক থেকে তিক্ততাও যথেষ্ট থাকার কথা। সব মিলিয়ে, আড়াই বছর পরও কৌতুহলের শেষ নেই। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পর্ক চুকেবুকে যাওয়ার সেই অধ্যায়ে আর ফিরে তাকাতে চান না রোডস। সেই সময়ে বিসিবির বিতর্কিত ভূমিকা নিয়ে আলোচনায় যেতেও নেই তার আগ্রহ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2022, 02:15 PM
Updated : 18 Jan 2022, 05:21 PM

বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক প্রধান কোচ স্টিভ রোডস এবার বিপিএলে এসেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পরামর্শক হিসেবে। তার সঙ্গে ফিরে এসেছে পুরনো কিছু কৌতূহলও।

২০১৮ সালের জুনে দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশের কোচ হিসেবে এক বছরে ভালোই সাফল্য পেয়েছিলেন রোডস। এমনকি ২০১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ অষ্টম হলেও দলের ফলাফল নিয়ে শুরুতে সন্তুষ্টির কথা বলেছিলেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসানও।

কোচ হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন জেনেই ইংল্যান্ড থেকে দলের সঙ্গে বাংলাদেশে ফিরেছিলেন রোডস। কিন্তু এরপর বদলে যায় বোর্ডের ভাবনা। মেয়াদ শেষের প্রায় দেড় বছর আগেই শেষ হয় বাংলাদেশের কোচ হিসেবে তার অধ্যায়। বোর্ড তখন বলেছিল, দুই পক্ষের ‘সমঝোতায় এই সম্পর্কচ্ছেদ।’ রোডসের পক্ষ থেকে ‘টু’ শব্দটি শোনা যায়নি তখন। কিছু বলেননি তিনি পরেও। বাংলাদেশ অধ্যায় শেষে অনেকটা আড়ালেই চলে যান তিনি।

এবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দায়িত্ব নিয়ে রোডস আবার এসেছেন প্রকাশ্যে। তবে মিরপুর একাডেমি মাঠে অনুশীলন শেষে মঙ্গলবার বিকেলে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বললেন, বিদায়ের ঘটনাপ্রবাহ রাখতে চান আড়ালেই।

“বিসিবি নিয়ে কোনো আলোচনায় যেতে রাজি নই আমি বা ওরকম কিছু। সেটা ঠিকও হবে না। ওই অধ্যায় এখন অতীত।”

স্টিভ রোডস যখন ছিলেন বাংলাদেশের কোচ।

“কোনো পদ বা দায়িত্ব থেকে কারও বিদায়ের ক্ষেত্রে লোকের নানা মত থাকেই। আমি ওসব প্রসঙ্গে জড়াতে চাই না। স্রেফ বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষের মাঝে ফিরতে পেরে আমি সন্তুষ্ট। বিশেষ করে, এখানে কুমিল্লা দলে দারুণ এক পারিবারিক আবহ আছে এবং এটিই আমি উপভোগ করি। পারিবারিক আবহের মধ্যে থাকতে উপভোগ করি।”

সেই সময় সরাসরি না বললেও পরে বিসিবি সভাপতি ও বিসিবির বড় কর্তাদের কথায় নানা সময় ফুটে উঠেছে, বিশ্বকাপে ব্যর্থতার বলি হতে হয়েছে সেই সময়ের কোচকে। রোডস অবশ্য ফিরে তাকিয়ে বলছেন, ওই বিশ্বকাপে খুব বাজে খেলেনি বাংলাদেশ।

“আমি যা বলতে পারি, বিশ্বকাপের ম্যাচগুলির দিকে যদি তাকান, পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ ছাড়া অন্যান্য ম্যাচে আমরা ভালো খেলেছি। ভারত, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে গেলেও আমরা ভালো লড়াই করেছি। এমন নয় যে বাংলাদেশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল। আমরা বেশ ভালো খেলেছি। মিশ্র বিশ্বকাপ ছিল আসলে, ভালো কিছু জয় পেয়েছিলাম আমরা, নিউ জিল্যান্ডকেও যথেষ্ট বেগ দিয়েছিলাম। আমার তাই মনে হয়, লোকে যতটা ভাবে, ততটা বাজে বিশ্বকাপ ছিল না সম্ভবত।”

বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার পর ক্রিকেটের কোনো পর্যায়েই উল্লেখযোগ্য কোনো দায়িত্বে দেখা যায়নি রোডসকে। তবে এই সময়টায়ও বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে তার প্রবল আগ্রহ ছিল বলেই জানালেন ৫৭ বছর বয়সী কোচ।

“শুনতে হয়তো পাগলাটে শোনাবে, আমি খুবই খুবই ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করেছি (বাংলাদেশের ক্রিকেট)। এখানে থাকার সময়টা আমি সত্যিই উপভোগ করেছি, কুমিল্লার হয়ে আগামী ৫ সপ্তাহ যেমন উপভোগ করব। এখানকার সবকিছুই আমি অনুসরণ করেছি… বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে আপনারা কী প্রতিবেদন করছেন…।”

“এখন এখানকার ক্রিকেটের গভীরে কী হচ্ছে, আমি অতটা জানি না। মন্তব্য করা তাই ঠিক হবে না। যতটা জানি, এখনকার কোচিং স্টাফ অনেক পরিশ্রমী। কিছু কিছু ফল খুব একটা পক্ষে আসেনি, পাশাপাশি দারুণ কিছু ফলও মিলেছে। নিউ জিল্যান্ডের টেস্ট ম্যাচ জয়টি ছিল অসাধারণ। ছেলেরা প্রয়োজনের সময় নিজেদের মেলে ধরেছে। এছাড়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়গুলি ছিল দুর্দান্ত।”