হেডের দারুণ সেঞ্চুরিতে ঘুরে দাঁড়াল অস্ট্রেলিয়া

সবুজ ঘাসের উইকেটে ইংল্যান্ডের পেসাররা মেলে ধরলেন নিজেদের। স্টুয়ার্ট ব্রড, অলিভার রবিনসনদের তোপে ১২ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল অস্ট্রেলিয়া। খাদের কিনার থেকে দলকে টেনে তোলেন ট্রাভিস হেড। দলে ফিরেই উপহার দিলেন অসাধারণ এক সেঞ্চুরি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Jan 2022, 01:21 PM
Updated : 14 Jan 2022, 01:21 PM

হোবার্টে অ্যাশেজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টে শুক্রবার ৬ উইকেটে ২৪১ রান করেছে অস্ট্রেলিয়া। দিন-রাতের এই টেস্টের বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম দিন শেষে অ্যালেক্স কেয়ারির সঙ্গে উইকেটে আছেন মিচেল স্টার্ক।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে পার্থ থেকে ম্যাচটি সরিয়ে আনা হয় হোবার্টে। আগের সূচিতে এটি হওয়ার কথা ছিল ডে ম্যাচ। কিন্তু ভেন্যু বদলের সঙ্গে এখন ম্যাচটি হচ্ছে গোলাপি বলে। অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া রাজ্য প্রথম আয়োজন করছে অ্যাশেজের ম্যাচ।

শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়া অস্ট্রেলিয়া আড়াইশর কাছাকাছি পুঁজি নিয়ে দিন শেষ করে মূলত হেডের সৌজন্যেই। কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়ে সিডনি টেস্টে না খেলা এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান খেলেন ১০১ রানের ইনিংস। ৭৪ রান আসে ক্যামেরন গ্রিনের ব্যাট থেকে।

খারাপ আবহাওয়ার কারণে আধঘণ্টা দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং নেন জো রুট। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্স বলেন, টস জিতলে তিনিও আগে বোলিং করতেন।

বল হাতে নিয়ে দারুণ লাইন-লেংথে উসমান খাওয়াজা ও ডেভিড ওয়ার্নারকে ভোগাতে থাকেন ব্রড-রবিনসন। তাদের বিপক্ষে রানই তুলতে পারছিলেন না দুই ওপেনার।

ভালো বোলিংয়ের পুরস্কার দ্রুতই পেয়ে যায় ইংল্যান্ড। রবিনসনের বলে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন ওয়ার্নার। ২২ বল খেলেও বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যান খুলতে পারেননি রানের খাতা। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত এক রেকর্ডে নাম লেখান তিনি।

অ্যাশেজে সবচেয়ে বেশি বল খেলে শূন্য রানে আউট হওয়া অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার এখন ওয়ার্নার। আগের রেকর্ডটি ছিল স্যামি জোন্সের। সেই ১৮৮৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিডনিতে ২০ বলে শূন্য করেছিলেন জোন্স।

সিডনি টেস্ট দিয়ে দলে ফিরে পাঁচ নম্বরে নেমে জোড়া সেঞ্চুরি করা খাওয়াজা হোবার্টে ইনিংস শুরু করার সুযোগ পেয়ে পারেননি দুই অংকে যেতে। ব্রডের দারুণ ডেলিভারিতে প্রথম স্লিপে ধরা পড়েন তিনি। পরের ওভারে রবিনসনের শিকার স্টিভেন স্মিথ। শর্ট অব দা লেংথ বলে শূন্য রানে ধরা পড়েন দ্বিতীয় স্লিপে।

রবিনসনের আগের ওভারে মার্নাস লাবুশেনকে শূন্য রানে ফেরাতে পারত ইংল্যান্ড। কিন্তু দ্বিতীয় স্লিপে তার ক্যাচ ছাড়েন জ্যাক ক্রলি। ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারে কেবল ১২ রান দিয়ে অস্ট্রেলিয়া তিন উইকেট তুলে নেয় ইংল্যান্ড। ব্রড-রবিনসন দুইজন মিলে এই সময় নেন ৭টি মেডেন।

হেডের সঙ্গে লাবুশেনের জুটি পরে অস্ট্রেলিয়াকে গড়ে দেয় ঘুরে দাঁড়ানোর ভিত। দ্রুত রান বাড়াতে থাকেন দুইজন। কিন্তু প্রথম সেশন শেষের আগের ওভারে অদ্ভুতভাবে আউট হয়ে ফিরে যান লাবুশেন। ভাঙে তাদের ৭৪ বল স্থায়ী ৭১ রানের জুটি।

ব্রড বল ছাড়ার আগেই অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে চলে যান লাবুশেন। পরে ইংলিশ পেসার মিডল স্টাম্প সোজা বল করলে লেগ সাইডে খেলার চেষ্টায় পড়ে যান তিনি। ব্যাটে বলে করতে পারেননি, এলোমেলো হয়ে যায় ৯ চারে ৪৪ রান করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের স্টাম্প।

গ্রিনকে নিয়ে দলের রান বাড়াতে থাকেন হেড। ৫৩ বলে ফিফটি তুলে নেন তিনি। টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ ও চলতি অ্যাশেজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে পা রাখেন হেড ১১২ বলে। পরের বলেই ক্রিস ওকস তাকে থামিয়ে দিলে ভাঙে ১২১ রানের জুটি। তার ১২ চারে ১০১ রানের ইনিংস শেষ হয় মিড-অনে ক্যাচ দিয়ে।

গ্রিন ৮০ বলে স্পর্শ করেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি। সিডনি টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসের মতো এবারও ৭৪ রানে থামেন তিনি। মার্ক উডের শর্ট বলে ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েন এই অলরাউন্ডার।

দিনের শেষ সেশনের ৭.৩ ওভার মাঠে গড়াতে হানা দেয় বৃষ্টি। পরে আর খেলাই হয়নি। সারা দিনে খেলা হয় মোট ৫৯.৩ ওভার। শেষ ৪ উইকেট নিয়ে কতদূর যেতে পারে অস্ট্রেলিয়া, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৫৯.৩ ওভারে ২৪১/৬ (ওয়ার্নার ০, খাওয়াজা ৬, লাবুশেন ৪৪, স্মিথ ০, হেড ১০১, গ্রিন ৭৪, কেয়ারি ১০*, স্টার্ক ০*; ব্রড ১৮-৪-৪৮-২, রবিনসন ৮-৩-২৪-২, উড ১১.৩-০-৭৯-১, ওকস ১২-১-৫০-১, রুট ১০-১-৩৫-০)