মাহমুদউল্লাহর অলরাউন্ড পারফরম্যান্স ছাপিয়ে নায়ক ইমরুল

শুরুতে বিপর্যয়ে পড়া দলকে পথে রাখতে দারুণ এক ফিফটি করলেন মাহমুদউল্লাহ। মার্শাল আইয়ুবের সঙ্গে তার শতরানের জুটিতে কোনোরকম লড়াইয়ের পুঁজি পেল বিসিবি উত্তরাঞ্চল। পরে বল হাতেও আলো ছড়ালেন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। কিন্তু রান তাড়ায় ইমরুল কায়েসের দুর্দান্ত ইনিংসে সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2022, 12:19 PM
Updated : 13 Jan 2022, 01:25 PM

বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ওয়ানডে সংস্করণ ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপে বৃহস্পতিবার ৪ উইকেটে জিতেছে পূর্বাঞ্চল। তিন ম্যাচে এটি তাদের প্রথম জয়।

পূর্বাঞ্চলের এই জয়ে কপাল পুড়ল এক ম্যাচ জেতা উত্তরাঞ্চলের। ম্যাচটি জিতলে টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলত দলটি। এখন দুই দলই ছিটকে পড়ল প্রতিযোগিতা থেকে। আগামী শনিবার শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল ও ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল।

২৫ রানেই ৩ উইকেট হারানো উত্তরাঞ্চলের হয়ে ১২০ রানের জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ ও মার্শাল। দুইজনের ফিফটিতে ২১৬ রানের পুঁজি পায় দলটি। মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে আসে ৬৬ রান, মার্শাল করেন ৫৪।

রান তাড়ায় ইমরুলের ৭১ রানের ইনিংসে ৭৩ বল আগেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পূর্বাঞ্চল। এই পারফরম্যান্সের সুবাদে ম্যাচ সেরার পুরস্কারও ওঠে তার হাতে।

তামিম ইকবাল ভালো শুরু পেলেও খেলতে পারেননি বড় ইনিংস। ৩৫ রান করে বোল্ড হন মাহমুদউল্লাহর বলে। অফ স্পিনে ৫৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা উত্তরাঞ্চল ৯ ওভারের মধ্যেই হারিয়ে ফেলে পারভেজ হোসেন, মাহিদুল ইসলাম ও নাঈম ইসলামকে।

চতুর্থ ওভারে নাঈম হাসানকে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় আকাশে তুলে ক্যাচ আউট হয়ে ফেরেন পারভেজ। দারুণ এক ডেলিভারিতে মাহিদুলকে বোল্ড করে দেন তানভির ইসলাম। আর নাঈম ইসলামের অফ স্টাম্প উড়িয়ে দেন রুবেল হোসেন।

শুরুর ওই ধাক্কার পর মাহমুদউল্লাহ ও মার্শালের ব্যাটে বাড়তে থাকে দলের রান। দারুণ ব্যাটিংয়ে ৭০ বলে ফিফটি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ।

প্রতিপক্ষের মিস ফিল্ডিংয়ে রান নিতে গিয়ে রান আউটে শেষ হয় তার ৪ চারে ৬৬ রানের প্রতিরোধ। মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের এক ওভার পর ৬৮ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন মার্শাল। এর পরপরই বাঁহাতি স্পিনার তানভিরের বলে ৩ চারে ৫৪ করে ফেরেন তিনি।

শেষ দিকে দলকে দ্রুত রান এনে দিতে পারেননি বাকি ব্যাটসম্যানরা। উল্টো সব উইকেট হারিয়ে দুইশ পার হতেই গুটিয়ে যায় উত্তরাঞ্চল।

রান তাড়ায় নামা পূর্বাঞ্চল শিবিরে তৃতীয় ওভারেই আঘাত হানেন শফিউল ইসলাম। তার স্টাম্পের বল লেগ সাইডে ক্রস খেলতে গিয়ে শূন্য রানে বোল্ড হন প্রিতম কুমার।

এরপর দলকে টানেন তামিম ও ইমরুল। মাহমুদউল্লাহকে ব্যাক ফুটে গিয়ে লেগ সাইডে খেলার চেষ্টায় তামিমের স্টাম্প এলোমেলো হয়ে গেলে ভাঙে তাদের ৫৩ রানের জুটি।

আফিফ হোসেন থিতু হয়ে ফিরে যান শফিউলের বলে। দুই চারে ২৫ বলে ২৬ রান করা শাহাদাত হোসেন এলবিডব্লিউ হন সানজামুল ইসলামের বলে। এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিতে থাকেন ইমরুল। ৬৮ বলে ফিফটি করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

মাহমুদউল্লাহর অফ স্পিনে উড়িয়ে মেরে এক্সট্রা কাভারে ধরা পড়েন ইমরুল। ৮ চারে ৮১ বলে ৭১ করে ফেরেন তিনি। ওই ওভারে মাহমুদউল্লাহকে টানা ছক্কা-চার মারেন নাদিফ চৌধুরি। ওভারের শেষ বলে তাকেও কট বিহাইন্ড করে বিদায় করেন মাহমুদউল্লাহ।

ততক্ষণে লক্ষ্যে অনেকটাই এগিয়ে গেছে পূর্বাঞ্চল। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে আলাউদ্দিন বাবু ও সোহরাওয়ার্দী শুভ দ্রুত দলকে এনে দেন জয়ের হাসি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

উত্তরাঞ্চল: ৪৯.৫ ওভারে ২১৬ (পারভেজ ১১, মাহিদুল ১১, নাঈম ইসলাম ০, মার্শাল ৫৪, মাহমুদউল্লাহ ৬৬, শামীম ১৯, আরিফুল ৪, আমিনুল ২০*, সানজামুল ০, শফিউল ১২; রুবেল ৯-১-৩১-১, নাঈম হাসান ১০-০-৪৭-৩, তানভির ১০-০-৩৪-২, আলাউদ্দিন ৭.৫-০-৩৯-১, সোহরাওয়ার্দী ১০-১-৪০-০, আফিফ ৩-০-১৮-০)

পূর্বাঞ্চল: ৩৭.৫ ওভারে ২১৭/৬ (তামিম ৩৫, প্রিতম ০, ইমরুল ৭১, আফিফ ২৬, শাহাদাত ২৬, নাদিফ ১০, আলাউদ্দিন ১৭*, সোহরাওয়ার্দী ১৫*; শফিউল ৫-০-৪১-১, শামীম ৫-০-২৬-০, মাহমুদউল্লাহ ৯.৫-০-৫৬-৩, নাঈম ইসলাম ১০-০-৩৪-০, শফিউল ৪-০-৩০-১, সানজামুল ৪-০-২৭-১)

ফল: পূর্বাঞ্চল ৪ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: ইমরুল কায়েস