দুই উইকেট আর কিছুটা প্রতিরোধের সেশন বাংলাদেশের

প্রথম দিনের উইকেট ছিল অনেকটা আউটফিল্ডের মতোই সবুজ। দ্বিতীয় দিনে সবুজের আভা কমে আসে অনেকটা। তৃতীয় দিনে উইকেট প্রায় সাদা চেহারার। ব্যাটিংয়ের জন্য বলা যায় আদর্শ। সেই উইকেটে চার কিউই পেসারের সামনে বেশ প্রতিরোধ গড়ল ফলো-অনে পড়া বাংলাদেশ। তবে সঙ্গী এলো প্রথম ও দ্বিতীয় ঘণ্টার শেষ দিকে দুই থিতু ব্যাটসম্যানকে হারানোর হতাশা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Jan 2022, 00:25 AM
Updated : 11 Jan 2022, 00:25 AM

ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের তৃতীয় দিনে প্রথম সেশনে বাংলাদেশের রান দ্বিতীয় ইনিংসে ২৮ ওভারে ২ উইকেটে ৭৪।

ইনিংস পরাজয় এড়ানো এখনও বহু দূরের পথ। তবে প্রথম ইনিংসে ভেঙে পড়া বাংলাদেশ কিছুটা লড়াইয়ের তাগিদ দেখাতে পেরেছে এ দিন।

সেশনটি আরও ভালো হতে পারত, যদি না সাদমান ইসলাম বিলিয়ে আসতেন উইকেট আর ফাঁদে পা না দিতেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

শুরু থেকেই দারুণ আস্থায় খেলতে থাকা সাদমান ৪৮ বলে ২১ রান করে আউট হন লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে কিউই কিপার টম ব্লান্ডেলের দুর্দান্ত ক্যাচে। নিল ওয়্যাগনারের শর্ট বলের স্রোতে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে নামা শান্ত সেই রোমাঞ্চের বলি হয়েই ফেরেন ৫ চার ও ১ ছক্কায় ২৯ রান করে।

টেস্ট অভিষেকে প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হওয়া মোহাম্মদ নাঈম শেখ অবশ্য টিকে গেছেন। কয়েকটি নার্ভাস মুহূর্ত এলেও শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে প্রথম সেশন কাটিয়ে দিয়েছেন তিনি।

লাঞ্চের সময় এই বাঁহাতি ওপেনার অপরাজিত ৮১ বল খেলে ১৫ রানে। ইনিংসে বাউন্ডারি একটিই। সেটি মেরেছেন ২২ তম ওভারে, ৬৩ বল খেলে।

৩৯৫ রানে পিছিয়ে থেকে মঙ্গলবার ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের দুই ওপেনার শুরুটা করেন ভীষণ সাবধানী। প্রথম ৮ ওভারে রান আসে ১০।

তবে সাদমান শুরু থেকেই ছিলেন স্বচ্ছন্দ। টিম সাউদি ও ট্রেন্ট বোল্টের নতুন বলের সুইংয়ের সামাল দেন তিনি বেশ দক্ষতায়।

ইনিংসের প্রথম বলে তিনি বাউন্ডারি পান লেগ স্টাম্পে থাকা বলে। পরে অনেক বল ছেড়ে দেন তিনি স্টাম্পের বাইরে। দুটি বল নাগালে পেয়ে কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারিও মারেন।

আরেক প্রান্তে নাঈমের শুরুটা ছিল নড়বড়ে। ধাতস্থ হতে কিছুটা সময় নেন তিনি। পরে আত্মবিশ্বাসী হয়ে আঁকড়ে রাখেন উইকেট।

প্রথম ঘণ্টা যখন নির্বিঘ্নে পার করার পথে দুজন, তখনই বিপত্তি। কাইল জেমিসনের লেগ স্টাম্পের বাইরের যে বল ছেড়ে দেওয়া যেত অনায়াসে, সেটিতেই শরীর থেকে দূরে ব্যাট বাড়িয়ে দেন সাদমান। উইকেটের পেছনে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে অসাধারণ রিফ্লেক্স ক্যাচ নেন ব্লান্ডেল।

আরেকপ্রান্তে তখন বল হাতে নিল ওয়্যাগনার। তিনে নামা শান্তর সঙ্গে তার লড়াই জমে  ওঠে দারুণ। লেগ স্লিপ, ফরোয়ার্ড শট লেগ ও সিলি পয়েন্টে ফিল্ডার নিয়ে রাউন্ড উইকেটে ব্যাটসম্যানের শরীর তাক করে শর্ট বলের সেই চেনা কৌশল নেন তিনি।

জেমিসনকে দারুণ দুটি শটে বাউন্ডারি আদায় করা শান্ত ওয়্যাগনারকে জবাব দিতে থাকেন চোখধাঁধানো কিছু শটে। হুক করে ছক্কায় ওড়ানোর পরের বলেই মারেন বাউন্ডারি।

পরের ওভারে আবার একই কৌশল ওয়্যাগনারের। শান্ত এবার টানা দুই বলে দুর্দান্ত টাইমিংয়ে পুল শটে মারেন দুটি চার।

শেষ পর্যন্ত সেই কৌশলেই লড়াই যেতেন ওয়্যাগনার। আরেকটি পুল শট নিচে রাখতে পারেননি শান্ত, লং লেগে ক্যাচ নেন বোল্ট।

অধিনায়ক মুমিনুল হক প্রথম বলেই রান আউট হওয়া থেকে বেঁচে যান অল্পের জন্য। এক বল পরই ক্যাচের মতো দেন শর্ট লেগে। তবে শেষ পর্যন্ত লাঞ্চের আগে আর কোনো বিপদ আসেনি বাংলাদেশের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর ( তৃতীয় দিন লাঞ্চ পর্যন্ত):
 
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৫২১/৬ (ডি.)
 
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১২৬
 
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (ফলো-অনের পর):  ২৮ ওভারে ৭৪/২ (সাদমান ২১, নাঈম ১৫*, শান্ত ২৯, মুমিনুল ৫*; সাউদি ৬-২-১৬-০, বোল্ট ৮-৫-৭-০, জেমিসন ৬-২-১৬-১, ওয়্যাগনার ৮-২-৩০-১)।