বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ওয়ানডে সংস্করণ ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপে মধ্যাঞ্চলের জয় ২২ রানে। প্রথমবার আয়োজিত এই টুর্নামেন্টে রোববার ১৭৮ রানের লক্ষ্য দিয়ে প্রতিপক্ষকে তারা থামিয়ে দেয় ১৫৫ রানে।
বিপিএল ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে দেখা যায় না সাকিবকে। এবার তিনি খেলছেন ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপে। ব্যাট হাতে ৩৫ রানের পর বল হাতে ২ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
ম্যাচ সেরার পুরস্কার অবশ্য জিতেছেন মোসাদ্দেক হোসেন। ব্যাটিংয়ে ১৭ রানের পর বল হাতে কেবল ১৩ রান দিয়ে তার শিকার ১ উইকেট। দুই ওভার বল করে ৪ রান দেওয়া সৌম্য নেন দুটি।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সপ্তম ওভারে সৌম্যকে হারায় মধ্যাঞ্চল। রুবেল হোসেন এলোমেলো করে দেন এই ওপেনারের স্টাম্প। নাঈম হাসানের বলে স্টাম্পড হয়ে যান আব্দুল মজিদ। পরের ওভারেই আলাউদ্দিন বাবুর বলে এলবিডব্লিউ মিজানুর রহমান, এক ছক্কা ও ৪ চারে ৩৬ রান করেন তিনি।
৬৭ রানে ৩ উইকেট হারানো দলের স্কোর একশ পার হয় সাকিব ও মিঠুনের ব্যাটে। তাদের ৫৬ রানের জুটি ভাঙে এক ছক্কা ৩ চারে ৩৭ রান করা মিঠুনের বিদায়ে। তানভির ইসলামের বলে তিনি হন কট বিহাইন্ড।
ব্যাট হাতে স্বচ্ছন্দ ছিলেন না সাকিব। বাঁহাতি স্পিনার তানভিরের ওভারে ৫৮ বল খেলে ২ চারে ৩৫ করে ফেরেন তিনি। সাকিবের আগে রুবেল ফেরান মোসাদ্দেককে।
এরপর আর কেউ ধরতে পারেননি দলের হাল। ২৬ রানের মধ্যে শেষ ৬ উইকেট হারায় তারা।
অল্প পুঁজি নিয়ে শুরুতেই পূর্বাঞ্চলকে চেপে ধরে মধ্যাঞ্চল। স্পিন, পেস ও ফিল্ডিং দিয়ে তৈরি করে তারা জয়ের পথ। ইনিংসের প্রথম ওভারেই বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার কট বিহাইন্ড করে দেন মোহাম্মদ আশরাফুলকে। রনি তালুকদার ও ইমরুল কায়েস অবশ্য এরপর উইকেটে কিছুটা থিতু হন।
তাদের ৬৪ রানের জুটি ভাঙে হাসান মুরাদের বাঁহাতি স্পিনে। ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে ২৫ রান করা ইমরুল এলবিডব্লিউ হয়ে মাঠ ছাড়েন। পরের ওভারেই মোসাদ্দেকের বলে সাকিবকে ক্যাচ দেন রনি, এক ছক্কা ও ৩ চারে ৩৮ রান করেন তিনি।
এই তিন স্পিনারের ৩০ ওভার থেকে পূর্বাঞ্চল রান করতে পারে মাত্র ৬৫, উইকেট হারায় ৫টি।
লক্ষ্য ছোট হওয়ায় পূর্বাঞ্চলের জয়ের সম্ভাবনা তখনও ছিল কিছুটা উজ্জ্বল। নাদিফ চৌধুরী ও আলাউদ্দিনের ৩৪ রানের জুটি আশার আলো দেখায় দলটিকে।
সাকিব, মুরাদ ও মোসাদ্দেকের ওভার শেষ হয়ে যাওয়ায় মধ্যাঞ্চলের ম্যাচের ভাগ্য তখন ছিল পেসারদের হাতে। সৌম্যর মিডিয়াম পেসও মধ্যাঞ্চলের জয়ে ভূমিকা রাখে। তিনি পরপর দুই ওভারে ফিরিয়ে দেন নাদিফ ও আলাউদ্দিনকে।
এরপর আর পেরে ওঠেনি পূর্বাঞ্চল। শেষ দুই উইকেটই তারা হারায় রান আউটে। তানভিরকে সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট করেন মিঠুন। রুবেলকেও নিজের বোলিংয়ে ফিল্ডিং করে রান আউট করেন আবু হায়দার। জয়ের উল্লাসে মাতে মধ্যাঞ্চল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
মধ্যাঞ্চল: ৪৩.২ ওভারে ১৭৭ (মিজানুর ৩৬, সৌম্য ১৩, মজিদ ৮, সাকিব ৩৫, মিঠুন ৩৭, মোসাদ্দেক ১৭, জাকের ১৫, আবু হায়দার ০, মৃত্যুঞ্জয় ০, মুরাদ ১, মুকিদুল ০*; রুবেল ৮.২-০-৫১-৩, তানভির ১০-২-২৯-২, নাঈম ৯-১-৩০-১, আলাউদ্দিন ৫-০-৩৭-১, রেজাউর ৯-১-২১-৩, আশরাফুল ২-০-৬-০)
পূর্বাঞ্চল: ৪৭.১ ওভারে ১৫৫ (রনি ৩৮, আশরাফুল ০, ইমরুল ২৫, ইরফান ৩১, আফিফ ২, নাদিফ ২৮, নাঈম ২, আলাউদ্দিন ১৭, রেজাউর ৩*, তানভির ২, রুবেল ০; আবু হায়দার ৯.১-১-৩৬-১, সাকিব ১০-২-২৪-২, মুরাদ ১০-১-২৮-২, মুকিদুল ২-০-২২-০, মোসাদ্দেক ১০-৪-১৩-১, মিঠুন ২-০-১৩-০, মৃত্যুঞ্জয় ২-০-১০-০, সৌম্য ২-০-৪-২)
ফল: মধ্যাঞ্চল ২২ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মোসাদ্দেক হোসেন