ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের প্রথম দিন প্রথম সেশনে নিউ জিল্যান্ডের রান কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৫ ওভারে ৯২।
এই মাঠে প্রথম দিনে ব্যাটসম্যানদের কাজটা বরাবরই কঠিন। এখানে আগের ৭ টেস্টে প্রথম ইনিংসে অর্ধশত রানের উদ্বোধনী জুটি ছিল না একটিও। ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ল্যাথাম ও হ্যামিশ রাদারফোর্ডের ৩৭ রানই ছিল সর্বোচ্চ। সেখানেই এবার দুর্দান্ত শুরু করলেন ল্যাথাম ও ইয়াং। উইকেটের পতন তো হয়নি, রান এসেছে ওভারপ্রতি প্রায় চার করে।
বিশেষ ল্যাথাম ছিলেন যেন অপ্রতিরোধ্য। দারুণ সব শটের মহড়ায় লাঞ্চের সময় অপরাজিত তিনি ১২ চারে ৮৩ বলে ৬৬ রান করে। অধিনায়কত্বের ৬ টেস্টে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের প্রথম ফিফটি এটি।
আরেক প্রান্তে আস্থায় ব্যাটিং করে ইয়াং অপরাজিত ৬৭ বলে ২৬ রান নিয়ে।
ব্যাটিং দক্ষতার পাশাপাশি দুই ওপেনারের ভালো শুরু করায় বড় ভূমিকা আছে বাংলাদেশের বাজে বোলিংয়েরও। আগের টেস্টে দুর্দান্ত বোলিং করা পেস আক্রমণ এবার প্রথম সেশনে সহায়ক কন্ডিশনেও ভীষণ বিবর্ণ। সবুজ ঘাসে ভারে উইকেটে প্রয়োজন ফুল লেংথে বল করা, ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নেওয়া। তা পারেননি তিন পেসারের কেউই।
তিন পেসারই খাটো লেংথে ও স্টাম্পের বাইরে বল করেছেন অনেক। ফুল লেংথগুলো বেশ কবারই হয়ে গেছে হাফ ভলি। খুব বেশি মুভমেন্টও আদায় করতে পারেননি কেউ। আলগা বল পেয়ে তা কাজে লাগিয়েছেন ল্যাথাম। দুই ব্যাটসম্যানের রানিং বিটুউইন দা উইকেটও ছিল দুর্দান্ত।
ম্যাচের আগে বাংলাদেশ বড় ধাক্কা খায় কুঁচকির চোটের মুশফিকুর রহিমকে না পেয়ে। তার জায়গায় দলে ফেরেন কিপার-ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান। চোট পেয়ে মাহমুদুল হাসান জয়ের ছিটকে যাওয়া নিশ্চিত ছির আগেই। তার জায়গায় টেস্ট ক্যাপ পান মোহাম্মদ নাঈম শেখ, দেশের শততম টেস্ট ক্রিকেটার তিনি।
হ্যাগলি ওভালে সব দলেরই চাওয়া থাকে। সেই ভাগ্য পরীক্ষায় জিতে আগে বোলিংয়ে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু অধিনায়ক মুমিনুল হকের মুখে হাসি ফোটানোর মতো বোলিং করতে পারেননি পেসাররা।
শুরুর দিকে তবু উইকেট না পেলেও কিছুটা নিয়ন্ত্রণ ছিল তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামের বোলিংয়ে। নতুন বলে ৮ ওভারে কিউইদের রান ছিল ২২।
নবম ওভারে আক্রমণে আসেন গত টেস্টের নায়ক ইবাদত। প্রথম বলটি অনেক বাইরে করে ল্যাথামের ব্যাটে চার হজম করলেও দ্বিতীয় বলেই তার এলবিডব্লিউর আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার ওয়েন নাইটস। পঞ্চম বলে আরেকবার। দুবারই রিভিউ নিয়ে টিকে যান ল্যাথাম। একবার বল যাচ্ছিল লেগ স্টাম্পের বেশ বাইরে দিয়ে, আরেকবার স্টাম্পের ওপর দিয়ে।
আর দু-তিনবার ব্যাটের কানায় লেগেছে বল। এছাড়া পুরো সময়টাই ল্যাথাম ও ইয়াংকে কোনোরকম বিপাকে ফেলতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। প্রথম ঘণ্টায় ১২ ওভারে রান ছিল ৩৪, পরের ঘণ্টায় ১৩ ওভারে আসে ৫৮ রান।
ল্যাথাম ফিফটি পূর্ণ করেন ৬৫ বলে। লাঞ্চের আগেই এক ডজন বাউন্ডারি পেয়ে গেছেন তিনি। ইয়াংয়ে ব্যাটে শটের ফুলঝুরি না দেখা গেলেও উইকেট আঁকড়ে রাখেন তিনি দারুণ নির্ভরতায়। বাংলাদেশ পারেনি সুযোগ সৃষ্টি করতেও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (লাঞ্চ পর্যন্ত) :
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৫ ওভারে ৯২/০ (ল্যাথাম ৬৬*, ইয়াং ২৬*, তাসকিন ১০-২-৩৩-০, শরিফুল ৯-৩-২৭-০, ইবাদত ৬-১-৩২-০)