‘আমরা ৪-৫ জন ছাড়া খেলোয়াড় নেই, সেটা ভুল প্রমাণ হলো’

বাংলাদেশের অনেক স্মরণীয় জয়ে সরাসরি অবদান আছে সাকিব আল হাসানের। সেই তিনি স্মরণীয়তম জয়টি দেখলেন অনেক দূর থেকে। তাতে তার আক্ষেপ নেই একটুও, বরং দারুণ খুশি ও গর্বিত বলেও দাবি করলেন। ছুটিতে থাকা সাকিবকে ছাড়াও বাংলাদেশ এই সফরে পায়নি চোটাক্রান্ত তামিম ইকবালকে। এটিও বাড়তি তৃপ্তি দিচ্ছে সাকিবকে। তরুণদের ওপর আস্থা রাখলে এরকম প্রতিদান মিলবে বলেই বিশ্বাস এই অলরাউন্ডারের।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Jan 2022, 02:16 PM
Updated : 7 Jan 2022, 02:41 PM

‘জরুরি পারিবারিক প্রয়োজনে’ এবার নিউ জিল্যান্ড সফর থেকে ছুটি চান সাকিব। এ নিয়ে খানিকটা টানাপোড়েন ও বিতর্কের পর ছুটি মঞ্জুর করে বিসিবি। বাংলাদেশ দল নিউ জিল্যান্ডে যাওয়ার পর সপ্তাহ দুয়েক দেশে আরও কিছু ব্যক্তিগত কাজ সেরে যুক্তরাষ্ট্রে স্ত্রী-সন্তানদের কাছে যান সাকিব।

পরিবারের সঙ্গে দুই সপ্তাহ সময় কাটিয়ে আবার দেশে ফেরেন তিনি। শুক্রবার একটি মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠানের পণ্যদূত হওয়ার আয়োজনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সাকিব কথা বলেন নিউ জিল্যান্ডে বাংলাদেশের টেস্ট জয়ের নানা দিক নিয়ে।

গতবছরের দুর্দশার পর নতুন বছরের শুরুতেই এমন একটি জয় পেয়ে সাকিবের আশা, বছরঝুড়ে ধরে রাখা যাবে এই ধারা।

“বছরের শুরুটা আসলে যেভাবে হলো, অবিশ্বাস্য। আমি খুবই আনন্দিত। দলের প্রতিটি খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ, সবাইকে কৃতিত্ব দিতে হয়, সবাই যেভাবে চেষ্টা করেছে। কারণ, যেহেতু আমাদের আগের বছরটি ভালো যায়নি। এ বছরটি আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।”

“যেহেতু শুরুটা এত ভালো হয়েছে, আশা করি এবছর আমরা অনেক কিছু করতে পারব এবং আসলে সত্যি কথা বলতে, এত ভালো ক্রিকেট বাংলাদেশ কম সময়ই খেলতে পারে। তো প্রতিটি খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ সবাইকেই এই কৃতিত্ব দিতে হয় যে তারা এত চাপের মধ্যেও এতটা কঠিন কন্ডিশনে এত ভালো খেলতে পেরেছে।”

দুই অভিজ্ঞ সাকিব-তামিমকে ছাড়া এবং দলে থাকলেও ব্যাট হাতে মুশফিকুর রহিমের বড় কোনো অবদান ছাড়াই বাংলাদেশ হারিয়ে দিয়েছে দেশের মাঠে প্রায় প্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা নিউ জিল্যান্ডকে। সাকিব এখানেও আশার আলো দেখছেন দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য।

“অবশ্যই এটা ভালোলাগার দিক যে, যারা আমরা সবসময়ই, বিশেষ করে আপনারা মিডিয়ায় যেটা মনে করেন যে আমরা চার-পাঁচজন ছাড়া খেলোয়াড় নেই, সেটা ভুল প্রমাণ হলো, আমার ধারণা। এবং তাদেরকে যদি এভাবে দায়িত্ব দেওয়া যায়, তারা ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে বলে আমি মনে করি।”

বাংলাদেশের অনেক জয়ের নায়ক, দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি বার ম্যাচ ও সিরিজ সেরা ক্রিকেটার এমন একটি ঐতিহাসিক জয়ের অংশ হতে না পারলেও কোনো আক্ষেপ নেই বলে দাবি সাকিবের।

“আমি বরং অনেক বেশি খুশি হয়েছি যে আমি ছাড়াও... শুধু আমি ছাড়া না, আমি থাকা না থাকা আমার কাছে বড় গুরুত্বপূর্ণ কিছু মনে হয় না। যেটা হয়েছে আমাদের দলটা খেলছে এবং কেমন ফলাফল করছে। সেদিক থেকে আমি খুবই খুশি, খুবই গর্বিত প্রতিটি খেলোয়াড়, প্রতিটা কোচিং স্টাফের ওপর।”

এই জয়ে দেশের ক্রিকেটের যাবতীয় সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা দূর হয়ে গেছে বলে মনে করেন না সাকিব। তবে তার মতে, এই জয় অনেক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।

“একটা টেস্ট ম্যাচ জয় দিয়ে সবকিছু পরিবর্তন হয়ে যায় না। তবে একটা টেস্ট ম্যাচ অনেক কিছু পরিবর্তনের একটা সম্ভাবনা তৈরি করে। আমার কাছে মনে হয় সেই সম্ভাবনা তৈরি হলো। এই বিশ্বাসটা যদি আমরা রাখতে পারি, বিসিবি যদি সেই বিশ্বাসটা রাখতে পারে, ভবিষ্যতে আমার কাছে মনে হয়… এই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেই আমরা অনেক ভালো ফল করে দেখাতে পারব। আমাদের দলটা আরও ভালো ফল করে দেখাতে পারবে।”