শেষ দিনের রোমাঞ্চকর মোড়ে ফাইনাল

মূল কাজ তার লেগ স্পিন বোলিং। ব্যাট হাতে টুকটাক অবদান রাখার সামর্থ্য থাকলেও ধারাবাহিক নন রিশাদ হোসেন। সেই তিনিই কিনা এবার নিজেকে মেলে ধরলেন প্রকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির আশা জাগালেও ফিরলেন ১ রানের আক্ষেপ নিয়ে। তার ওই ইনিংসের সুবাদেই বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের ফাইনালে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলকে দুইশ ছাড়ানো লক্ষ্য দিতে পেরেছে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Jan 2022, 01:12 PM
Updated : 5 Jan 2022, 01:12 PM

চতুর্থ দিনের শেষ বেলায় দ্রুত প্রতিপক্ষের তিনটি উইকেটও তুলে নিয়েছে দক্ষিণাঞ্চল। তবে লক্ষ্য খুব বড় না হওয়ায় সম্ভাবনা আছে মধ্যাঞ্চলেরও। তাই শিরোপা লড়াইটি এখন রোমাঞ্চকর শেষ দিনের অপেক্ষায়।

মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬৮ রান করেছে দক্ষিণাঞ্চল। ২১৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই বিপাকে পড়া মধ্যাঞ্চল তিন উইকেটে ২৬ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে। উইকেটে আছেন সৌম্য সরকার ও সালমান হোসেন।

শিরোপা ঘরে তুলতে দক্ষিণাঞ্চলের চাই ৭ উইকেট, আর মধ্যাঞ্চলের ১৯২ রান। শেষ দিনের উইকেটে ব্যাটিং করা স্বাভাবিকভাবেই কঠিন হবে। তাই জয়ের পাল্লা কিছুটা হলেও ভারি সর্বোচ্চ পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের দিকে।

১ উইকেটে ৪৩ রান নিয়ে এদিন খেলতে নামা দক্ষিণাঞ্চলের রিশাদ ছাড়া কেউই ছাড়াতে পারেননি পঞ্চাশ। ৯ নম্বরে নেমে ৪ ছক্কা ও ১০ চারে ৯৯ রানে করেন এর আগে কোনো সংস্করণেই ফিফটি না পাওয়া রিশাদ। প্রথম শ্রেণি ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে আগের ২৪ ম্যাচে তার সর্বোচ্চ ছিল ৪২ রান।

দক্ষিণাঞ্চলকে তিনশর আগে থামানোর কৃতিত্ব আবু হায়দার রনির। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৭৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন তিনি। আগের ম্যাচেও ইনিংসে পাঁচ উইকেট ছিল এই পেসারের।

অমিত হাসান ও পিনাক ঘোষের জুটি এদিন বেশিক্ষণ টিকতে দেননি আবু হায়দার। দিনের চতুর্থ ওভারেই পিনাককে কট বিহাইন্ড করে নিজের প্রথম শিকার ধরেন তিনি। ভাঙে ৫০ রানের জুটি।

পরে টানা দুই ওভারে তৌহিদ হৃদয় ও প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান জাকির হাসানকে ফেরান আবু হায়দার। এবার রানের খাতাই খুলতে পারেননি জাকির। মাঝের ওভারে ৪১ রান করা অমিত হাসানকে সাজঘরে পাঠান মুকিদুল ইসলাম।

ফরহাদ রেজাকে টিকতে দেননি সৌম্য সরকার। ২৯ রান তুলতে পাঁচ উইকেট হারানো দলের হাল ধরার চেষ্টা চালান মেহেদি হাসান ও নাসুম আহমেদ। মেহেদিকে কট বিহাইন্ড করেন আবু হায়দার।

নাসুম ৪১ রান করে হন রান আউট। এরপর মেহেদি রানাকে নিয়ে দলের রান বাড়াতে থাকেন রিশাদ। ৬৩ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। সেঞ্চুরিতে চোখ রেখে এগিয়ে যেতে থাকেন।

মেহেদি রানাকে ফিরিয়ে আবু হায়দার পূর্ণ করে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের চতুর্থ পাঁচ উইকেট। শঙ্কা জাগে রিশাদের সেঞ্চুরি নিয়ে। কামরুল ইসলাম রাব্বি তাকে সঙ্গ দিলেও তিনি আউট হয়ে যান শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে। তাইবুর রহমানের বলে ক্যাচ দেন কিপারের হাতে। শেষ হয় তার ১৩৬ বল ও ১৭১ মিনিট স্থায়ী দারুণ ইনিংসটি।

রান তাড়ায় নেমে আগের ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি করা মোহাম্মদ মিঠুন এবার পারেননি কিছু করতে। ফরহাদের বলে এলোমেলো হয়ে যায় এই ওপেনারের স্টাম্প।

নাসুম পরপর দুই ওভারে ফিরিয়ে দেন আব্দুল মজিদ ও হাসান মুরাদকে। মজিদকে এলবিডব্লিউ করার পর নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা মুরাদকে বোল্ড করে দেন বাঁহাতি এই স্পিনার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৩৮৭

মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৪৩৮

দক্ষিণাঞ্চল ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৪৩/১) ৭৫.৫ ওভারে ২৬৮ (পিনাক ২৭, এনামুল ০, অমিত ৪১, হৃদয় ১, জাকির ০, মেহেদি ২৪, ফরহাদ ১৩, নাসুম ৪১, রিশাদ ৯৯, মেহেদি রানা ১১, কামরুল ০*; আবু হায়দার ২৪-৪-৭৮-৫, মুরাদ ১৬-৫-৩৫-১, শুভাগত ১১-১-৫২-০, মুকিদুল ১৬-২-৫৫-১, রবিউল ০.২-০-৭-০, সৌম্য ৬.৪-০-৩০-১, তাইবুর ১.৫-০-২-১)

মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস: (লক্ষ্য ২১৮) ৯ ওভারে ২৬/৩ (মিঠুন ৭, মজিদ ৫, সৌম্য ৮*, মুরাদ ১, সালমান ৫*; ফরহাদ ৪-২-১৪-১, মেহেদি রানা ২-০-৬-০, নাসুম ২-২-০-২, মেহেদি ১-০-৬-০)